‘ঘরে খাওন নাই, রাস্তায় থাহি এহন’
‘ঘরে খাওন নাই, রাস্তায় থাহি এহন। এলাকার মেম্বার ও চেয়ারম্যান আমাদের মতো অসহায় গরিবদের খবর রাহে না। বাইত্তে বানের পানি ওঠায় পোলা-মাইয়া নিয়া কয়েক সপ্তাহ ধরে রাস্তার ঢালে পলিথনের (ছাঁউনি) তুলে থাকতেছি। ঘরে চাল-ডাল যা ছিল সব বানের পানিতে ভেসে গেছে। খুব কষ্টে আছি।’
কথাগুলো বলছিলেন টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়নের স্থলকাঁশি গ্রামের বানু বেগম (৭০) নামে এক বৃদ্ধা।
তিনি বলেন, ‘২০ বছর আগে স্বামীকে হারাই। অন্যের বাড়িতে কাজ করে ও মানুষের সহযোগিতায় দুই মেয়ের বিয়ে দেই। এই বুড়ো বয়সে পাইনি বয়স্ক বা বিধবা ভাতার কার্ড। বন্যায় জমিজমা যা ছিল তাও যমুনা নদীতে চলে গেছে। আছে শুধু বাড়ির ভিটে, তাও পানিতে তলিয়ে গেছে।’
তার মতো বসতভিটা হারানো ও পানিবন্দি একই এলাকার মতিয়ার রহমানসহ আরও অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
তারা বলেন, ‘বন্যার পানিতে ঘর-বাড়ি তলিয়ে গেছে। পরিবার নিয়ে এখন রাস্তার ঢালে মানবেতরভাবে বসবাস করছি। ত্রাণের জন্য ইউনিয়ন পরিষদে গেলেও কপালে জোটেনি।’
সরেজমিনে উপজেলার বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব গোলচক্কর-ভূঞাপুর সড়কের গোবিন্দাসী টি-রোড পর্যন্ত রাস্তার ঢালে শতাধিক পরিবার বাঁশের মাচা ও পলিথিন কাগজ দিয়ে অস্থায়ীভাবে থাকার জন্য আশ্রয়স্থল করেছেন। এদিকে গোবিনদাসী ফেরীঘাটের পাশে খানুরবাড়ি ও কুকাদাইর এলাকাতেও একই চিত্র দেখা গেছে। পরিবার নিয়ে তারা চরম হতাশায় ভুগছেন। দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানি ও পশু খাদ্যের অভাব। এসব স্থানে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কোন স্বাস্থ্যকর্মীও দেখা যায়নি।
গোবিন্দাসী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান তালুকদার বাবলু জানান, এ বছরের বন্যায় ইউনিয়নে ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। ভেঙে যাচ্ছে কাঁচা-পাকা রাস্তা। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে শত শত পরিবার। ইতোমধ্যে পানিবন্দি ৪০০ পরিবারের মাঝে ত্রাণ সহায়তা বিতরণ করা হয়েছে। যেসব পরিবারগুলো সড়কের ঢালে বসবাস করে আসছে তাদের জন্য শুকনো খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। যা খুব দ্রুত বিতরণ করা হবে।
ঢাকাটাইমস/১৮জুলাই/পিএল