চলচ্চিত্রের অস্থিরতা আমাদেরই দূর করতে হবে: জয়

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ০৯ জানুয়ারি ২০২১, ১৭:১১ | প্রকাশিত : ০৭ জানুয়ারি ২০২১, ২১:১৩

চলচ্চিত্রের এই সময়ের অন্যতম জনপ্রিয় ও ব্যস্ত একজন অভিনেতা জয় চৌধুরী। ভালো অভিনয়, আকর্ষণীয় লুক ও ফিগার, অসাধারণ পারসোনালিটি, কাজের প্রতি নিষ্ঠা- সবকিছু মিলিয়ে ঢালিউডে তিনি স্থায়ী আসন গেড়ে বসেছেন। দর্শকদের কাছে পেয়েছেন গ্রহণযোগ্যতা। জয়ের ক্যারিয়ার ৯ বছরের। ইতোমধ্যে তিনি বেশ কিছু দর্শকপ্রিয় চলচ্চিত্র উপহার দিয়েছেন। অভিনয় জীবনের নানা দিক ও চলচ্চিত্রের চলমান কিছু বিষয় নিয়ে জয় সম্প্রতি কথা বলেছেন ঢাকা টাইমসের সঙ্গে। আলাপচারিতায় ছিলেন লিটন মাহমুদ

চলচ্চিত্রে আসলেন কার মাধ্যমে বা কীভাবে?

আমার চলচ্চিত্রে আসা মূলত মনোয়ার হোসেন ডিপজল চাচ্চুর হাত ধরে। ২০১২ সালে এফ আই মানিক স্যার পরিচালিত ‘এক জবান’ ছবিটির মাধ্যমে আমার অভিষেক হয়। ডিপজল চাচ্চুই আমাকে এই ছবিতে কাজের সুযোগ করে দিয়েছিলেন। ছবিটিতে তিনিও ছিলেন।

দেশের কোন নায়ককে নিজের আইডল মনে করেন?

আমি একজনের কথা বলব না। বাংলাদেশে দুজনের অভিনয় আমাকে খুব আকৃষ্ট করে। একজন আমাদের নায়ক ফারুক স্যার। অন্যজন প্রয়াত সালমান শাহ। আমি সবসময় তাদের অভিনয় ফলো করি। শেখার চেষ্টা করি। তাদের দেখেই সামনের কাজগুলোকে ভালো করার চেষ্টা করি।

কোন নায়িকার সঙ্গে কাজ করে বেশি ভালো লেগেছে?

আসলে কাজ করতে গেলে ভালো-খারাপ দুই অভিজ্ঞতাই হয়। আমার প্রথম চলচ্চিত্র থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত মিমো, আঁচল, মীম, মাহিয়া মাহি, শিরিন শিলা, মৌমিতাসহ অনেকের সঙ্গেই কাজ করেছি। মোটামুটি সবার সঙ্গে কাজ করেই ভালো লেগেছে। কারণ এদের অনেকের মধ্যেই আমি কাজের প্রতি ভক্তি, শ্রদ্ধা, ভালোবাসা, আগ্রহ ও ডেডিকেশন দেখতে পেয়েছি।

২০২০ সালের সবচেয়ে বাজে অভিজ্ঞতা সম্পর্কে বলুন

২০২০ সালটা সবার জন্যই একটি বাজে অভিজ্ঞতার বছর। করোনা মহামারি যেভাবে আমাদের চারপাশ ঘিরে ধরেছিল যে, সবার চিন্তা-ভাবনা, ধ্যান-ধারনায় শুধু ছিল কীভাবে আমরা বাঁচব, সচেতন থাকব, একজন আরেকজনের পাশে দাঁড়াব। এর বাইরে গত বছরে আমার সবচেয়ে বাজে অভিজ্ঞতা আমাদের চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক প্রিয় জায়েদ খান ভাইয়ের বাবার মৃত্যু। গত ৩১ ডিসেম্বর আঙ্কেল মারা যান। উনি আমাকে অত্যন্ত স্নেহ করতেন, আমিও ওঁনাকে খুব ভালোবাসতাম। আঙ্কেল গ্রিন লাইফ হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। জায়েদ ভাই, আমিসহ অনেকে আপ্রাণ চেষ্টা করেছি আঙ্কেলকে সুস্থ করে তুলতে। কিন্তু শেষরক্ষা হলো না। আমার জন্য এটা খুব বাজে অভিজ্ঞতার ব্যাপার।

নতুন বছরে আপনার পরিকল্পনা কী?

আমি যেহেতু চলচ্চিত্রে অভিনয় করি, তাই নতুন বছরে চলচ্চিত্রকে ঘিরেই আমার সব পরিকল্পনা। গত বছরের ক্ষত ভুলে, ভুল শুধরে এ বছর ভালো ভালো কাজ করব, ভালো ভালো চলচ্চিত্র দর্শকদের কাছে পৌছে দেয়ার চেষ্টা করব। যাতে আমাদের চলচ্চিত্রটা আবার ভালো ভাবে ঘুরে দাঁড়াতে পারে। চলচ্চিত্র নিয়েই আমার স্বপ্ন, ধ্যান-জ্ঞান। এ বছর ইনশাআল্লাহ আমরা নতুন কিছুর মাধ্যমে বাঁচব, নতুন স্বপ্ন নিয়ে হাটব।

বর্তমানে কোন কোন কাজ নিয়ে ব্যস্ত?

করোনার জন্য গত বছর কয়েক মাস কাজ বন্ধ ছিল। সেই নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে বছরের শেষ দিকে আমরা সবাই যার যার জায়গা থেকে কাজে নেমে পড়েছি। যেমন, আমি মনতাজুর রহমান আকবর পরিচালিত ‘আয়না’ নামে একটি ছবি কাজ শেষ করেছি। ওটার ডাবিংও শেষ। এদিকে ‘আনন্দ অশ্রু’, ‘ভালোবাসি কত বোঝাবো কেমনে’, ‘কাকতারোয়া’, ‘অবাস্তব ভালোবাসা’-এই চলচ্চিত্রগুলো শিগগিরই সেন্সরে যাবে। আবার কয়েকটির সেন্সর হয়ে গেছে। এই কাজগুলোই এখন চলছে।

চলচ্চিত্রপাড়ার চলমান অস্থিরতায় আপনার সমাধান কী?

চলচ্চিত্রের এই অস্থিরতাটা তো আমরা নিজেরাই সৃষ্টি করেছি। এটার সমাধানও আমাদেরই করতে হবে। তার জন্য সবার এক হয়ে হাতে হাত রেখে কাজ করা উচিত। ভালো-মন্দের বিচার, এর সমাধান নিজেদেরই করা উচিত। বাইরের কেউ এসে করে দেবে না। আমরা আর্টিস্টরা সবাই এক পরিবারের। পরিবারে ভাই-ভাই ঝগড়া হলে যেমন নিজেরা বসে সমাধান করতে হয়, তেমনি আমাদের চলচ্চিত্র পরিবারের ছোট-বড় সব সমস্যার সমাধান আমাদেরই করতে হবে। তার জন্য আমাদের মুরব্বীরা আছেন, তাঁরাই এই অস্থিরতা নিরসনে নির্দেশনা দেবেন। আমরা তাদের সেই নির্দেশনা মতোই কাজ করব।

ওটিটি প্ল্যাটফর্মে সিনেমা মুক্তিকে কীভাবে দেখেন?

আমি অবশ্যই বিষয়টাকে পজিটিভলি দেখি না। কারণ, ঘরে বসেই যদি আমরা সিনেমা দেখব, তাহলে আমাদের সিনেমা হলের দরকার কী? হলগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে এটাই তো ভালো। আমরা বন্ধ হল খোলার প্ল্যান করছি না, ভালো মানের সিনেমা বানানোর প্ল্যান করছি না, প্ল্যান করছি যেনতেন ছবি বানিয়ে ওটিটিতে মুক্তি দেয়ার। এটা আমাদের চলচ্চিত্র শিল্প ও সিনেমা হল ধ্বংসের একটা লক্ষণ। ইন্ডিয়াতে এতগুলো ইন্ডাস্ট্রি, তাদের ছবি কিন্তু রেগুলার সিনেমা হলে চলছে।

তবে ওটিটি প্ল্যাটফর্মটা আমাদের জন্য ভালো হতে পারতো, যদি সিনেমা হলগুলো সচল থাকতো। একদিকে মানুষ হলে রেগুলার ছবি দেখছে, আবার ওই ছবিটাই আমরা ওটিটিতে রিলিজ করছি মিডল ও হাই ক্লাস দর্শকদের জন্য। সিস্টেমটা যদি এরকম হতো, তাহলে ওটিটি প্ল্যাটফর্ম আমাদের জন্য পজিটিভ হতো। পাশাপাশি ওটিটির জন্যও সেন্সর বোর্ড দরকার। যাতে যার যেভাবে ইচ্ছা ছবি বানিয়ে সেখানে রিলিজ করতে না পারে। তাহলেই এটা আমাদের জন্য ভালো কিছু বয়ে আনবে।

ঢাকাটাইমস/০৭জানুয়ারি/এএইচ

সংবাদটি শেয়ার করুন

বিনোদন বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :