টিভি সিরিয়াল দেখে ডাকাতি, যোগাযোগ অ্যাপে

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ০১ এপ্রিল ২০২১, ১৪:৫৩
অ- অ+

টেলিভিশনে ভারতীয় টিভি সিরিয়াল দেখে ডাকাতির কৌশল শিখতো তারা। এরপর মুখে মাস্ক ও হাতে গ্লাভস পড়ে গ্রিল ভেঙে বাসায় ঢুকে সবাইকে জিম্মি করে মালামাল নিয়ে সটকে পড়তো চক্রের সদস্যরা। এমনকি নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ রক্ষায় ব্যবহার করতো বিভিন্ন অ্যাপ। আর ডাকাতির জন্য বেছে নেয়া হয় ঢাকার কেরানীগঞ্জ ও নবাবগঞ্জের বিভিন্ন এলাকার প্রবাসী ও ধনী ব্যক্তিদের বাড়ি।

এ চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এরপরই বেরিয়ে আসছে ডাকাতির নানা কৌশলের কথা।

গ্রেপ্তাকৃতরা হলেন, রুবেল ফরাজী ওরফে রিফাত হাওলাদার, সোহাগ শেখ ওরফে রুবেল ও মো. সোহেল।

রাজধানীর খিলগাঁও এবং শাহজাহানপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে বুধবার (৩১ মার্চ) রাতে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ডাকাতিকালে ব্যবহৃত হাফ প্যান্ট, গেঞ্জি, গ্রিল ভাঙার যন্ত্র ও দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগের সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি ইমাম হোসেন।

তিনি বলেন, ডাকাত চক্রটি কয়েক বছর ধরে ঢাকার আশেপাশের জেলাগুলোতে প্রবাসীদের বাসা-বাড়িতে অভিনব কৌশলে ডাকাতি করে আসছিল। এই ডাকাত চক্রের সদস্যরা একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য মোবাইল সিমের পরিবর্তে বিভিন্ন আ্যপস ব্যবহার করতো। এছাড়া তারা বাসা-বাড়ির গ্রিল ও জানালা কেটে মুখে মাস্ক ও হাতে গ্ল্যাভস পরে ঘরে ঢুকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে স্বর্ণালংকার ও টাকা ডাকাতি করতো। ডাকাতির কোনো ছাপ যাতে না থাকে সেজন্য তারা ভারতীয় সিরিয়াল সিআইডি দেখে মাস্ক ও গ্ল্যাভস ব্যবহার করতো।

তিনি বলেন, ঢাকার দোহার, কেরানীগঞ্জ ও নবাবগঞ্জের অনেকেই প্রবাসে থাকে। প্রবাসীদের বাড়ি টার্গেট করে ডাকাতি করত তারা। যাতে টাকা, স্বর্ণালংকার ও ডলার পাওয়া যায়।

অতিরিক্ত ডিআইজি ইমাম হোসেন বলেন, গ্রেপ্তার রুবেল ফরাজী ওরফে রিফাত হাওলাদারের বিরুদ্ধে রংপুরের বিভিন্ন থানায় সাতটি মামলা রয়েছে। সোহাগ শেখ ওরফে রুবেল ঝালকাঠিতে অস্ত্র আইনের মামলায় ১০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামি এবং সোহেলের বিরুদ্ধে খুলনা, যশোর ও মৌলভীবাজারের বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি।

এই কর্মকর্তা বলেন, চক্রের একজন মূলহোতা রয়েছে। সে অনেক চতুর। কবে, কোথায়, কোন বাসায় ডাকাতি করতে হবে তা নির্ধারণ করতো ওই ব্যক্তি। যাকে এখনও আমরা গ্রেপ্তার করতে পারিনি। তবে তাকে গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

ডাকাতদের গ্রেপ্তারের বিষয়ে সিআইডির অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর বলেন, গত ৪ মার্চ রাত ৩টার দিকে সাত-আটজন ডাকাত কেরানীগঞ্জের রামেরকান্দা গ্রামে শাহবুদ্দিন ওরফে সাহার বাড়ির জানালার গ্রিল কেটে ভেতরে প্রবেশ করে চাপাতি ও দায়ের ভয় দেখিয়ে ১১ লাখ টাকা, ৩০০ ইউএস ডলার ও ৩৩ ভরি স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় মামলা হয়। ওই মামলার তদন্ত করতে গিয়ে এই অভিনব কৌশলে ডাকাত চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়।

তিনি বলেন, এ চক্রের মূলহোতাসহ বাকি সদস্যদেরকেও গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/১এপ্রিল/এআর/কেআর)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
সেই রাত স্মরণে তালা ভেঙে বেরিয়ে এলেন রোকেয়া হলের ছাত্রীরা
রাতে ‘তুমি কে আমি কে রাজাকার রাজাকার’ স্লোগানে মুখর ঢাবি ক্যাম্পাস
চাপাতি ধরে ফোন-মানিব্যাগের সঙ্গে জামা-জুতা ছিনতাইয়ের ঘটনায় গ্রেপ্তার ১
সিরাজগঞ্জে সরকারি অফিস ‘দখল করে’ জামায়াতের কার্যালয়ে
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা