সেনা-পুলিশ পরিচয়ে ব্ল্যাকমেইল করত চক্রটি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ২৩ জানুয়ারি ২০২২, ১৮:৪৭
অ- অ+

নিজেদের সেনা ও পুলিশ কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে গত দুই বছর ধরে বিভিন্ন কৌশলে জিম্মি, ব্ল্যাকমেইল ও প্রতারণা করে আসছে চক্রটি। তারা সাধারণত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রথমে বিভিন্নজনের সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলে। এরপর কৌশলে বিভিন্ন আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও ধারণ করে ভুক্তভোগীদের হেনস্থা ও ব্ল্যাকমেইল করত। এছাড়া অনলাইনেও ভুক্তভোগীদের ফাঁদে ফেলত এই চক্রটির সদস্যরা।

রবিবার বিকালে কারওয়ান বাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

এর আগে রূপান্তরিত নারীকে (ট্রান্সজেন্ডার) যৌন নির্যাতন ও হত্যাচেষ্টার ঘটনার মূল হোতাসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। তারা হলেন- মূল হোতা ফুয়াদ আমিন ইশতিয়াক ওরফে সানি, তার কথিত স্ত্রী সাইমা শিকদার নিরা ওরফে আরজে নিরা ও আব্দুল্লাহ আফিফ সাদমান ওরফে রিশু।

র‌্যাব বলছে, গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা ভুয়া সেনা কর্মকর্তা ও পুলিশ কর্মকর্তা পরিচয়ে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নারী-পুরুষদের কৌশলে আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও ধারণ করতেন। এরপর হেনস্থা ও ব্ল্যাকমেইল করতে আপত্তিকর ভিডিও অনলাইনে ছেড়ে দেওয়ার কথা বলে অর্থ হাতিয়ে নিতেন। অভিযানে ভুক্তভোগীর ছিনিয়ে নেওয়া মোবাইল উদ্ধারসহ জব্দ করা হয় প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত অবৈধ ওয়াকিটকি সেট, খেলনা পিস্তল, মোবাইল ও একাধিক ব্যাংকের কার্ড।

শনিবার রাজধানীর ফার্মগেট ও মহাখালী এলাকায় গভীর রাত থেকে রবিবার দুপুর একটা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এই ঘটনায় ভুক্তভোগী রাজধানীর ভাটারা থানায় একটি মামলা করেন। যার নম্বর ৩৫।

আল মঈন বলেন, একজন ট্রান্সজেন্ডার নারী বিউটি ব্লগারকে যৌন নির্যাতন ও হত্যাচেষ্টার ঘটনার পর গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাব সদরদপ্তর গোয়েন্দা শাখা ও র‌্যাব-১ ও র‌্যাব-২ গতরাত থেকে শুরু করে আজ দুপুর পর্যন্ত রাজধানীর ফার্মগেট ও মহাখালী এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে। তারা একটি সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্র। গ্রেপ্তার ইশতিয়াক এই চক্রের মূল হোতা। গ্রেপ্তার আরজে নিরা ও সাদমান আফিফ ওরফে রিশু তার অন্যতম সহযোগী।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন আরও বলেন, কিছুদিন আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিকটিম ট্রান্সজেন্ডার (রূপান্তরকামী) নারীর সঙ্গে গ্রেপ্তার সাদমান আফিফ রিশুর পরিচয় হয়। পরিচয়ের সূত্রে গত ১০ জানুয়ারি রাজধানীর ভাটারা এলাকার (বসুন্ধরা) একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে একটি রেস্টুরেন্টের সামনে রিশুর সঙ্গে ভিকটিমের সাক্ষাৎ হয়। এরপর সারপ্রাইজ দেওয়ার কথা বলে কৌশলে ভুক্তভোগীকে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় ইশতিয়াকের ভাড়া বাসায় নিয়ে যান। সেখানে ইশতিয়াক, নিরা ও রিশু জোরপূর্বক ভুক্তভোগীকে মারধর, শ্লীলতাহানী ও যৌন নিপীড়নের পাশাপাশি ভিডিও ধারণ করেন। এসময় তারা ট্রান্সজেন্ডার ওই নারীর সঙ্গে থাকা মোবাইল ফোন, স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ টাকা ছিনিয়ে নেন এবং এক লাখ টাকা দাবি করেন।

এ সময় গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা আইন-শৃঙ্খলা ও সামরিক বাহিনীর ভুয়া পরিচয় দিয়ে ভয়-ভীতি দেখান। ওই ট্রান্সজেন্ডার নারীকে থানায় নিয়ে যাওয়ার কথা বলে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ঘুরিয়ে রামপুরায় নামিয়ে দেন।

গ্রেপ্তার ইশতিয়াকের বিরুদ্ধে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় দুটি মামলা রয়েছে। ইতিপূর্বে বিভিন্ন মামলায় তিনি কারাভোগ করেছেন।

এক প্রশ্নের জবাবে র‌্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা ইতিমধ্যে এমন প্রতারণা করে একাধিক অপকর্ম করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে মামলাও রয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/২৩জানুয়ারি/এএ/জেবি)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
বৈষম্যবিরোধী ও এনসিপির আন্দোলনের মুখে পটিয়া থানার ওসি প্রত্যাহার
বাংলামোটরে এনসিপির জুলাই চিত্র প্রদর্শনীর গাড়িতে ককটেল বিস্ফোরণ
তাড়াশে সম্পত্তি লিখে নিয়ে বাবা-মাকে বাড়িছাড়ার অভিযোগ
সাবেক এমপি নাঈমুর রহমান দুর্জয় গ্রেপ্তার
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা