মধ্যরাতে মাওয়ায় ইলিশ খেতে গিয়ে চরম বিতর্কের মুখে পরীমনি

পদ্মা নদীর ইলিশ ভাজা খাওয়ার জন্য মুন্সিগঞ্জের মাওয়া ঘাট খুবই বিখ্যাত। প্রতিদিনই বহু মানুষ বন্ধুবান্ধব ও পরিবার নিয়ে সেখানে ছুটে যান ইলিশ ভাজা খাওয়ার জন্য। সেই ইলিশের টানেই গেল বুধবার মধ্যরাতে মাওয়া ঘাটে ছুটে গিয়েছিলেন আলোচিত চিত্রনায়িকা পরীমনিও। সঙ্গে ছিলেন তার স্বামী অভিনেতা শরিফুল রাজ এবং কাছের কয়েকজন বন্ধু।
ঢাকা থেকে যাওয়ার পথে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেস হাইওয়েসহ নানা জায়গায় দাঁড়িয়ে বেশ কিছু ছবি তোলেন অভিনেত্রী, তার স্বামী এবং বন্ধুরা। সেখান থেকে কিছু ছবি ফেসবুকে শেয়ারও করেন। এরপর মাওয়া ঘাটে গিয়ে সবাই মিলে মজা করে খান পদ্মার টাটকা ইলিশ ভাজা। পরীমনি নিজে এসব গণমাধ্যমকে জানান। বলেন, ‘মাওয়া যাব আর ইলিশ খাব না, তা কি হয়? ইলিশের কয়েকটা পদ খেয়েছি।’
কিন্তু মধ্যরাতে পরীমনির এই মাওয়া যাত্রা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় শুরু হয়েছে তুমুল বিতর্ক। বহু নেটিজেন এর সমালোচনা করেছেন। অনেকে করেছেন কটাক্ষ। কেউ কেউ আবার অভিনেত্রীকে বিশ্রি ভাষায় গালমন্দও করেছেন। এক্ষেত্রে নেটিজেনরা টার্গেট করেছেন অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে নায়িকার বারবার আদালতে অনুপস্থিত হওয়ার বিষয়টিকে।
নানা সময়ে পরীমনি অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে আদালতে উপস্থিত হননি। আবার কখনো আদালতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন। এই অভিনেত্রীর বিরুদ্ধে কয়েক মাস ধরে আদালতে মাদকের মামলা চলছে। সম্প্রতি ছিল তারই সাক্ষ্যগ্রহণ। কিন্তু অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে তিনি আদালতে যাননি। উল্টো আইনজীবীর মাধ্যমে আবেদন করে সেই সাক্ষ্যগ্রহণ এক মাস পিছিয়ে দেন।
সেই প্রসঙ্গ টেনে পরীমনিকে নিয়ে বিতর্ক ও সমালোচনায় মেতেছেন নেটিজেনরা। বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ হওয়া নায়িকার মাওয়া যাত্রার যে খবরগুলো সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার হয়েছে, সেগুলোর কমেন্টস বক্সে মাহী উদ্দিন নামে একজন লিখেছেন, ‘গর্ভাবস্থায় কোর্টে যাইতে অসুবিধায হয়। সময় প্রার্থনা করা হয়। অথচ মধ্যরাতে মাওয়া যাইতে সমস্যা হয় না! বিষয়টি কোর্টের নজরে আনা দরকার!’
আবুল খায়ের নামে এক নেটিজেনের মন্তব্য, ‘আদালতের কাঠগড়ায় গেলে অসুস্থ, বাহিরে থাকলে কোনো রোগ নাই। যতসব অভিনয়।’ মিলন আবদুল্লাহ নামে একজন লিখেছেন, ‘ইলিশ খেতে গভীর রাতে মাওয়া যেতে পারে, কিন্তু দিনের বেলা কোর্টে আসতে পারে না আমাদের পরীমনি!’ মো. কাওছির নামে একজনের মন্তব্য, ‘এখন আর অসুস্থ হয় না পরী। আদালতে হাজিরা দেওয়ার তারিখ বা আদালতে গেলেই অজ্ঞান হয়ে যায়।’
এসব প্রসঙ্গ না টেনে সিরাজুল ইসলাম নামে একজন মন্তব্য করেছেন, ‘পরীমনির একটা জিনিস বুঝি না, সবকিছু তার রাতে খেতে মন চায় কেন। রাতে ইলিশ খেতে মন চায়, রাতে পার্টিতে যেতে মন চায়। সবকিছু রাতে করতে মন চায়।’ জুয়েল মাহমুদ নামে এক নেটিজেন আবার অভিনেত্রীকে চাঁদপুরে ইলিশ খেতে যাওয়ার দাওয়াত দিয়ে লিখেছেন, ‘মাওয়ায় না গিয়ে তুমি চাঁদপুরে চলে আসো। চাঁদপুরে রাতের ইলিশ খুবই সুস্বাদু।’
এর বাইরে আরও শত শত কমেন্টস জমা পড়েছে প্রকাশিত ওই খবরগুলোর নিচে, যেগুলো প্রকাশ্য যোগ্য নয়। গত ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকার বিশেষ জজ আদালতে পরীমনির বিরুদ্ধে হওয়া মাদক মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ ছিল। কিন্তু অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে সেদিন আদালতে যাননি নায়িকা। তার আইনজীবী নীলাঞ্জনা রিফাত সুরভী আবেদন করে সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য এক মাস সময় চেয়ে নেন।
তার কয়েক দিন আগে গাজীপুরে ‘মা’ নামে একটি ছবির শুটিং করতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন পরীমনি। তার শরীরে জ্বর ছিল। এরপর নায়িকাকে ঢাকায় এনে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। যার কারণে গত ২৮ জানুয়ারি তিনি শিল্পী সমিতির নির্বাচনে ভোট পর্যন্ত দিতে যাননি। সেই অবস্থা থেকে সুস্থ হতেই স্বামী ও বন্ধুদের নিয়ে মাওয়া থেকে খেয়ে এলেন ইলিশ ভাজা।
ঢাকাটাইমস/০৪ফেব্রুয়ারি/এএইচ

মন্তব্য করুন