পাগলা মিজানের আচরণ কেমন কারাগারে, জানুন বিস্তারিত

মো. হাবিবুর রহমান এলাকায় পরিচিত পাগলা মিজান নামে। ঢাকার মোহাম্মদপুরে কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন একাধিকবার। ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের সময় ভারতের পালানোর চেষ্টাকালে গ্রেপ্তার হন র্যাবের হাতে।
এরপর অর্থ পাচার এবং অবৈধ অস্ত্র মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে। অস্ত্র মামলায় আদালতে অভিযোগ গঠন হবে মার্চে। আর অর্থ পাচারের মামলায় অভিযোগপত্র জমা পড়েছে আদালতে।
মোহাম্মদপুর থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিজানের বিরুদ্ধে রয়েছে হত্যা, মাদকের কারবার, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অভিযোগ। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মিজান ওরফে পাগলা মিজান তার এলাকার মানুষের কাছে ছিলেন মূর্তমান ত্রাস।
ক্যাসিনোবিরোধী অভিযোন চলাকালে ২০২০ সালের ১১ অক্টোবর র্যাবের একটি বিশেষ টিম মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে গুহ রোড থেকে পাগলা মিজানকে আটক করে। তখন র্যাব জানিয়েছিল, তিনি ভারতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। ওই সময়ে শ্রীমঙ্গল থানায় তার বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে একটি মামলা করে র্যাব। এছাড়া রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানায় অর্থপাচার আইনে আরেকটি মামলা করে র্যাব।
গ্রেপ্তারের পর প্রথমে মৌলভীবাজার কারাগারে পাঠানো হয় পাগলা মিজানকে। পরে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার হয়ে এখন তিনি আছেন কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কারাগারে। এখন তিনি এই কারাগারের হাজতি সেলে আর দশজন বন্দির মতো দিন পার করছেন।
কারাসূত্রে জানা গেছে, সকালে ঘুম থেকে উঠে পত্রিকা পড়ে দিন শুরু হয় মিজানের। তারপর নাস্তা সেরে তিনি অন্য হাজতিদের সঙ্গে গল্পগুজব করেন। পরে দুপুরে খাওয়ার পর বিশ্রাম আর বিকালে চা-নাস্তার পরে আবারো গল্প-গুজবে মাতেন। এভাবেই কারাগারে দিন কাটছে পাগলা মিজানের।
মহামারী করোনাভাইরাসের কারণে পরিবারের সদস্যরা পাগলা মিজানকে দেখতে যেতে পারেন না। তবে কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে মোবাইল ফোনে পরিবারের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখেন। একজন হাজতি কারাগারে যেসব সুবিধা পেয়ে থাকেন কারাবিধি মোতাবেক পাগলা মিজানও সেইসব সুযোগ সুবিধা ভোগ করে থাকেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল থানায় করা অস্ত্র মামলায় অভিযোগপত্র দিয়েছে পুলিশ। মামলাটি বর্তমানে মৌলভীবাজারের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন। আগামী ৬ মার্চ মামলাটির অভিযোগ গঠনে তারিখ রেখেছে আদালত।
মৌলভীবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর মো. আজাদুর রহমান ঢাকা টাইমসকে বলেন, পাগলা মিজানের বিরুদ্ধে শ্রীমঙ্গল থানায় র্যাবের করা অস্ত্র মামলায় এখনও চার্জগঠন করা হয়নি। আগামী ৬ মার্চ এই মামলায় চার্জ গঠনের কথা রয়েছে।
২০২০ সালে ঢাকায় দুর্নীতি-সন্ত্রাস-ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরুর হয়। সেসময় গা ঢাকা দেন পাগলা মিজান। দেশ ছাড়ার উদ্দেশে চলে যান শ্রীমঙ্গলে। সেখানকার গুহ রোড এলাকার একটি গেস্ট হাউজের সামনে থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
ক্যাসিনো কারবারে জড়িত থাকার অভিযোগে মানি লন্ডারিং আইনে একটি মামলা করে র্যা ব। ওই মামলটি তদন্ত করে অভিযোগপত্র (চার্জশীট) দেয় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। মামলাটির তদন্ত করেন সিআইডি পুলিশের পরিদর্শক মিরাস উদ্দিন আহমেদ।
সিআইডি কর্মকর্তা মিরাস ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘কিছুদিন আগে এই মামলায় অভিযোগপত্র (চার্জশীট) দিয়েছি। মামলাটি বর্তমানে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৯-এ বিচারাধীন।’
মামলাটির বিষয়ে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউর রহমান আবদুল্লাহ আবু ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘মামলাটি বিচারাধীন রয়েছে। তবে কী পর্যায়ে রয়েছে তা নথি না দেখে বলতে পারবো না।’
(ঢাকাটাইমস/১৩ফেব্রুয়ারি/এএ/ডিএম)

মন্তব্য করুন