জনআকাঙ্খা পূরণে সরকার ব্যর্থ: কাদের গনি চৌধুরী

বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব কাদের গনি চৌধুরী অভিযোগ করেছেন, সরকার জনআকাঙ্খা ও সাংবাদিক সমাজের ন্যায্য দাবিগুলো পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। তিনি বলেন, 'ফ্যাসিস্ট হাসিনার বিচার ও ফ্যাসিবাদের পুনরুত্থান রোধে সরকার কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেয়নি।'
মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে 'ফ্যাসিবাদী দুঃশাসনের অবসানে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে' আয়োজিত সাংবাদিক সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি। সমাবেশের আয়োজন করে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে)।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ডিইউজে সভাপতি শহীদুল ইসলাম। আরও বক্তব্য রাখেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ও কালের কণ্ঠ সম্পাদক হাসান হাফিজ, বিএফইউজের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীন, ডিইউজের সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলম, বাকের হোসেন, একেএম মহসিন, খায়রুল বাশার, বাছির জামাল, এরফানুল হক নাহিদ, রাশিদুল হক, রফিক মোহাম্মদ ও সাঈদ খান প্রমুখ।
কাদের গনি চৌধুরী বলেন, 'দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে দেশের মানুষ ভোটাধিকার হারিয়েছে। সেটি পুনঃপ্রতিষ্ঠায় কোনো উদ্যোগ নেই। সংস্কারের মুলা ঝুলিয়ে সরকার ক্ষমতা আঁকড়ে থাকার চেষ্টা করছে।'
তিনি অভিযোগ করেন, সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের বিচার, সাংবাদিক সুরক্ষা আইন বাস্তবায়ন এবং বিতর্কিত সাইবার নিরাপত্তা আইন বিলোপের মতো মৌলিক দাবিগুলো উপেক্ষিত থেকে গেছে।
তথ্য উপদেষ্টাকে ইঙ্গিত করে কাদের গনি বলেন, 'আপনি যদি এক/এগারোর আলামত দেখতে পান, তবে সেটা সরকারের ব্যর্থতা। সেই দিনই আপনাকে পদত্যাগ করা উচিত ছিল।'
গত বছরের জুলাই-আগস্ট গণআন্দোলনে সাংবাদিকদের ভূমিকা তুলে ধরে কাদের গনি বলেন, '৩ ও ৪ আগস্ট আমরা হাজার হাজার সাংবাদিক ও পেশাজীবী নিয়ে রাজপথে ছিলাম। সে সময় আমাদের ওপর গুলি, হামলা, অবরোধ চালানো হয়। ৬৭ জন সাংবাদিক জীবন দিয়েছেন ফ্যাসিস্ট শাসনের বিরুদ্ধে। অথচ আজ সেই মানুষদের বাদ দিয়ে অচেনা কিছু লোককে সাহসী সাংবাদিক হিসেবে পুরস্কৃত করা হচ্ছে।'
তিনি সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের বিতর্কিত তালিকা প্রত্যাখ্যান করে বলেন, 'যারা আন্দোলনে ছিল না, তাদের পুরস্কার দিয়ে প্রকৃত সাহসী সাংবাদিকদের অসম্মান করা হচ্ছে।'
জাতীয় প্রেসক্লাব সভাপতি হাসান হাফিজ বলেন, 'জুলাই অভ্যুত্থানে প্রাথমিক বিজয় অর্জিত হলেও চূড়ান্ত বিজয় আসেনি। গণতন্ত্রের পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও ফ্যাসিবাদের বিচার করতে হবে।'
তিনি আরও বলেন, 'সীমান্ত হত্যা বন্ধ হয়নি, উপনিবেশবাদী চিন্তা এখনও টিকে আছে। ভারতীয় স্যাটেলাইট চ্যানেল কেন বন্ধ হলো না, সেটাও প্রশ্নের বিষয়।'
ডিইউজে সভাপতি শহীদুল ইসলাম বলেন, 'তথ্য মন্ত্রণালয় সাংবাদিকদের উপেক্ষা করে এক ব্যক্তির পরামর্শে ফ্যাসিবাদীদের পুনর্বাসন করছে।'
সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলম বলেন, 'সরকার সাংবাদিক বান্ধব নয়। এক বছরে একটি দাবিও পূরণ হয়নি।'
ডিইউজের সাংগঠনিক সম্পাদক ও কালের কণ্ঠের যুগ্ম সম্পাদক সাঈদ খান বলেন, 'সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের সাহসী সাংবাদিক তালিকা পক্ষপাতদুষ্ট ও অগ্রহণযোগ্য। ফ্যাসিবাদের দোসররা এখনও প্রশাসন ও গণমাধ্যমে সক্রিয়। তাদের দ্রুত উচ্ছেদ করতে হবে।'

মন্তব্য করুন