কাপ্তাইয়ে বিস্ফোরণে বাবা-ছেলের মৃত্যু, ৩ দিনেও ক্লু পায়নি পুলিশ

চট্টগ্রাম ব্যুরো, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১০ জানুয়ারি ২০২৩, ১৪:৫০

পার্বত্য জেলা রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদ সংলগ্ন বাদশা মিয়া টিলায় বিস্ফোরণের ঘটনায় নিহত একই পরিবারের বাবা ও ছেলের মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশ এখনো কোনো ক্লু পায়নি। কারণ জানতে গঠন করা হয়েছে তদন্ত কমিটি। এছাড়াও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এই ঘটনার কারণ জানতে কাজ করছে।

তবে ইউএনও মুনতাসির জাহান জানান, পুলিশের পক্ষ থেকে তদন্তের কাজ চলছে। তবে আমি যতটুকু জেনেছি, ঘটনাস্থলে গ্রেনেডের স্প্লিন্টার পাওয়া গেছে। বিষয়টি আরও তদন্তের পর বলা যাবে’।

নিহত মো. ইসমাইল মিয়ার বাড়িতে সোমবার গিয়ে দেখা গেছে, বিস্ফোরণের ঘটনায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে আছে সবকিছু। বিস্ফোরণ হওয়া রান্না ঘরের এখানে সেখানে এখনো রক্তের ছাপ রয়েছে। এখনো চা এবং ভাত রান্না করার চাউল পড়ে আছে রান্না ঘরে। এই রান্না ঘরেই চা বানাতে চুলায় আগুন জ্বালানোর পরই ওই বিস্ফোরণের ঘটনাটি ঘটে বলে জানা গেছে। এতে ঘরের মালিক ইসমাইল হোসেন (৪৫) ও তার শিশু পুত্র রিফাত (৬) ঘটনাস্থলে মৃত্যুবরণ করলেও ভাগ্যক্রমে বাসায় না থাকায় তার মেয়ে ইসরাত জাহান ফারিয়া (৭) প্রাণে বেঁচে যায়। ফারিয়া স্থানীয় দারুল আরকাম মাদ্রাসার ২য় শ্রেণির ছাত্রী। এছাড়া বিস্ফোরণের ঘটনায় তার স্ত্রী সখিনা বেগম (৩৫) গুরুতর অগ্নিদদ্ধ হয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেলে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

নিহত ইসমাইল মিয়ার প্রতিবেশী মো. শহীদুল জানান, আমরা মসজিদে নামাজ পড়ার সময় বিকট একটি শব্দ শুনতে পাই। পরে এসে দেখি মানুষের আহাজারি ও ঘরের ভিতরে থাকা ইসমাইলের স্ত্রী কান্না করছে। ঘরের দরজা বন্ধ থাকায় আমরা দরজা ভেঙ্গে ঘরে ঢুকে দেখি, ইসমাইল ও তার ছেলে বিস্ফোরণে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। সাথে সাথে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করি।

আরেক প্রতিবেশী রুমানা জানান, ঘটনার দিন রবিবার সকালেও ইসমাইলের বৌ সহ তিনি জীবতলি এলাকায় গিয়েছিলেন গরুর ঘাস সংগ্রহ করতে। সেখানে তারা একটি লাল বল জাতীয় বস্তু দেখতে পায়। যেটি ইসমাইলের বউ খেলার বস্তু ভেবে ছেলের জন্য নিয়ে আসে। এলাকাবাসী ধারণা করছে ওই বস্তুটিই হয়তো বিস্ফোরিত হয়েছে।

এদিকে, সোমবার ঘটনাস্থলে গিয়ে আরও দেখা যায়, তদন্তকারী সদস্যরা ওই ঘর থেকে কিছু লোহার ক্লিপ সংগ্রহ করেছে। কাপ্তাই পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. শাহীনুর রহমান জানান, তদন্ত টিম বিস্ফোরণের কারণ খুঁজতে তদন্ত কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানা যাবে।

এব্যাপারে কাপ্তাইয়ের সার্কেল এএসপি রওশন আরা রব জানান, কি কারণে বিস্ফোরণ হয়েছে, তা এখনই বলা যাচ্ছে না। তদন্ত চলছে। তদন্তের পর প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে। তিনি আরও জানান, সৃষ্ট ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি। আইনী প্রক্রিয়া চলছে।

এদিকে ময়নাতদন্তের পর সোমবার বিকাল ৫ টায় জানাযা শেষে বাদশা মাঝির টিলায় নিহত পিতা-পুত্রকে দাফন করা হয়।

কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মুনতাসির জাহান বলেন, ‘মৃত দু’জনের লাশ ময়নাতদন্তের পর দাফনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে তদন্তের কাজ চলছে। তবে আমি যতটুকু জেনেছি, ঘটনাস্থলে গ্রেনেডের স্প্লিন্টার পাওয়া গেছে। বিষয়টি আরও তদন্তে পর বলা যাবে’।

উল্লেখ্য, গত রবিবার সন্ধ্যা প্রায় সাড়ে ৬ টায় কাপ্তাই হ্রদ সংলগ্ন বাদশা মাঝির টিলায় নৌকার মাঝি মো. ইসমাইল মিয়ার বসত ঘরে হঠাৎ ওই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে ইসলাইল মিয়া (৪৫) ও তার ছেলে মো. রিফাত (৭) নিহত হয়। এঘটনায় আহত হয় নিহত ইসমাইলের স্ত্রী সখিনা বেগম (৩৫)। গুরুতর আহত অবস্থায় সখিনাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/১০জানুয়ারি/এআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :