তুরস্কের নারীদের সৌন্দর্যের গোপন রহস্য

ফিচার ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ১৭ জানুয়ারি ২০২৩, ১১:০১ | প্রকাশিত : ১৭ জানুয়ারি ২০২৩, ১০:৫৮

তুরস্ক বিশ্বের কয়েকটি দর্শনীয় দেশগুলো মধ্যে অন্যতম একটি সুন্দর দেশ। প্রাকৃতিক দৃশ্যে ভরপুর তুরস্কে আছে পাহাড়-পর্বত, সমুদ্র, হ্রদ, জলপ্রপাত, নদী, বন এবং এমনকি উষ্ম জলস্রোত। প্রকৃতি তার সবটুকু সৌন্দর্য যেন ঢেলে দিয়েছে তুরস্কে।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকেই দেশটি ঘুরে দাঁড়িয়েছে। সাথে সাথে উন্নতি ঘটেছে অর্থনীতিতেও। সেই সূত্র ধরেই বৃদ্ধি পেয়েছে নগরায়ন। এর বৃহত্তম শহরের নাম ইস্তাম্বুল। আর এর রাজধানীর নাম আঙ্কারা। এখানকার মানুষ তাদের নিজস্ব তুর্কি ভাষাতেই কথা বলে।

তুরস্কের মুদ্রার নাম তুর্কি লিরা। তাদের নিজস্ব ভাষার সাথে সাথে আরো প্রায় ত্রিশটি ভাষা প্রচলিত। এদের মধ্য আদিগে, আরবি, আর্মেনীয়া, জর্জীয়, কুর্তি এবং রোমানি ভাষা উল্লেখযোগ্য। নানা ধর্মের লোকের বসবাস এই ছোট দেশটিতে। তবে এখানে মুসলিম ধর্মাবলম্বী মানুষের সংখ্যাই তুলনামূলক বেশি।

তুরস্কের সংস্কৃতিও বৈচিত্র্যময়। গ্রিক, রোমান, ইসলামিক সব মিলিয়ে তাদের একটি নতুন ধরনের সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে। পশ্চিমা সংস্কৃতি এখনো তাদের মাঝে বিদ্যমান আছে। তুরস্কের সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা হচ্ছে ফুটবল। একই সাথে তারা ফ্যাশনপ্রেমী জাতি।

তুরস্কের নারীরাও তাদের সৌন্দর্যের দিক দিয়ে অনেক এগিয়ে। যখনই বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দরী নারীদের কথা আসে, তুরস্ক প্রথমে আসে। এখানকার নারীদের স্বর্ণকেশী চুল এবং সৌন্দর্যের জন্য পরিচিত। তুরষ্কের কোনো নারীর চেহারা মনে করার চেষ্টা করলে চোখের সামনে ভেসে উঠবে, লম্বা নাক, সুন্দর ভাঁজহীন ত্বক, বড়-বড় চোখ আর শ্যাম-সুন্দর চুল। হ্যাঁ, আসলেই তারা অনিন্দ্য সুন্দর। দেশটির মারিয়াম ওজরেলি, হান্দে আর্সেল ও হাজেল কায়ার মত অভিনেত্রীদের পৃথিবীর অন্যতম সুন্দর নারী হিসেবে গণ্য করা হয়। শুধু দেশটির নায়িকাই নয়, সাধারণ মেয়েরাও একেকজন অনিন্দ্য সুন্দর। তাদের চুল, চোখ, ত্বক, বডি শেপ সবমিলিয়ে তারা এতই সুন্দর যে, যে কোনো অবস্থাতেই তারা আবেদনময়ী। তারা কি জন্মগতভাবেই এত সুন্দর নাকি এ পেছনে রয়েছে অন্য রহস্য? তুরস্কের মেয়েরা এত সুন্দর হয় কেন? সৌন্দর্য ধরে রাখতে কি কি পন্থাই বা অবলম্বন করে। জেনে নিন তুরষ্কের নারীদের সৌন্দর্যের গোপন রহস্য।

তুরস্কের নারীরা নিজের পছন্দকে প্রাধান্য দিতে পছন্দ করে। এতে তাদের ব্যক্তিত্ব ও চেহারায় আত্মবিশ্বাস প্রতিফলিত হয়। আপনি জানেনকি, তুর্কি নারীদের রূপচর্চার পাশাপাশি কিছু সিক্রেটও রয়েছে যা তাদেরকে নরম আর কোমল করে তোলে।

পরিস্কার ত্বকের মধ্যে রোদের মতো সোনালি আভা দেখা যায় তুরস্কের বিভিন্ন অঞ্চলের নারীদের মধ্যে। এটি বংশ পরম্পরায় হয়ে থাকে। গোলাপজল এদের সৌন্দর্যচর্চায় নিয়মিত অনুসঙ্গ। তুরস্কের নারীরা ক্লিনজার হিসেবে গোলাপজল ব্যবহার করে থাকে। প্রাকৃতিক এই উপাদান ত্বক থেকে ময়লা ও তেল দূর করার পাশাপাশি পিচ ভারসাম্য ফিরিয়ে আনে। একই সঙ্গে ত্বক রাখে সতেজ ও সজীব। গোলাপজল সাধারণত দোকানে পাওয়া যায়। তবে অনেক তার্কিশ নারীরা তাদের নিজস্ব রেসিপিতে বাসায় গোলাপজল তৈরি করে থাকে। ময়েশ্চারাইজিং- এর জন্য এরা মধু ব্যবহার করে থাকে।

তুরস্কের নারীদের চোখ কালো, সবুজ ও নীল রঙের হয়। বিশেষ করে ইস্তাম্বুল ও ইজমীরের নারীদের মধ্যে বৈচিত্র্যময় সৌন্দর্য দেখা যায় এবং আনাতোলিয়া প্রদেশের মেয়েদের গায়ের রং থাকে কিছুটা ডার্ক তবে তাদের গড়ন ও চুলের সৌন্দর্য হয় নজরকাড়া।

তুরস্কের নারীরা ন্যাচারাল সৌন্দর্য ফুটিয়ে তুলতে মেকআপ করে থাকে তারা। তবে খুব ভারী মেকআপ করতে খুব একটা অভ্যন্ত নয় তারা। সাধারণত মিনিমাম ও ন্যাচারাল ত্বক ফুটিয়ে তুলতে দেখা যায়। এজন্য বেশিরভাগ অনুষ্ঠানের জন্য তুর্কি নারীরা সামান্য মাশকারা, আইলাইনার ও ব্রাশ ব্যবহার করে। চোখ সাজাতে মিশরীয় রীতি অনুসরণ করতেও দেখা যায়।

তবে দেশীয় রীতি অনুযায়ী জন্মদিনের মত অনুষ্ঠানে অনেক সময় ভারী মেকআপ করে তারা। তুরস্কের নারীরা চুল সাজাতে ভালোবাসে। সুস্থ, সুন্দর ঢেউখেলানো চুলের জন্য তাদের সৌন্দর্য আলাদাভাবে চিহ্নিত করা যায়। অধিকাংশ নারী চুলের যত্নে পার্লারে যায়।

পোশাক-পরিচ্ছেদের ব্যাপারে তার্কিশ নারীরা বেশ অভিজাত। সাধারণত ক্যাজুয়াল ও শালীন পোশাকেই স্বাচ্ছন্দ বোধ করে তারা। এছাড়া নেকলেস ও ইয়ারিংয়ের মতো গয়নাও তাদের কাছে অনেক প্রিয়। তুর্কি নারীদের সৌন্দর্যের আরেকটি গোপন রহস্য হচ্ছে সুগারিং। এটি মূলত প্রাচীন মিসরের রূপচর্চার একটি বিশেষ পদ্ধতি, যা মূলত শরীরের অবাঞ্চিত লোম দূর করতে ব্যবহার করা হয়। এ পদ্ধতি খুব সহজ ও প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করেই তৈরি করা যায়। তুরস্কের নারীরা নিয়মিতই এই রিমুভাল সুগারিং পদ্ধতি ব্যবহার করে থাকে।

দেশটির নারীদের সৌন্দর্যের আরেকটি কারণ হচ্ছে হাম্মাম বা তার্কিশ বাথ। বিশেষ পদ্ধতির এই গোসল তুরস্কে অনেক জনপ্রিয়। এর মাধ্যমে দেহ ও মনের সজীবতা পায় তুর্কি নারীরা। তুরস্কের নারীদের অন্যতম একটি সৌন্দর্যচর্চার উপায় হচ্ছে হ্যাজাল নাট অয়েল। এটি একধরণের বাদাম তেল, যা মূলত তুরস্কেই উৎপন্ন হয় বেশি। ভিটামিন ও ফ্যাটি এসিড সমৃদ্ধ এই তেল নিজেদের রূপচর্চায় ব্যবহার করে থাকে তুর্কি নারীরা। তুরস্কের নারীদের ডায়েট বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। যার মাধ্যমে সুস্থ থাকার পাশাপাশি সৌন্দর্যে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছে তুরস্কের নারীরা।

তুর্কি মেয়েদের পছন্দের পোশাক বোরকা। তারা খুব ছোট থেকেই হাতে এবং পায়ে মোজা পরে থাকে। এমনকি তারা কোন অনুষ্ঠানে গেলেও এই ধরনের পোশাক পরে যায়। এছাড়া তারা লম্বা কামিজ জাতীয় পোশাকেও বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। তবে এর সাথে মাথায় নানা রঙের মিশ্রণের স্কার্ফ পরতেও ভালোবাসে। বর্তমানে সেখানে বাইরের দেশের পোশাকেরও বেশ কদর রয়েছে। মেয়েরা বর্তমানে স্কার্টের সাথে লম্বা শার্ট পরতে ভালোবাসে। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তাদের মাঝে এই ফ্যাশন বৈচিত্র্য দেখা যায়।

ঢাকাটাইমস/১৭ জানুয়ারি/আরজেড)

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফিচার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

ফিচার এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :