‘বাসের ওলটপালট খাওয়া দেখে মনে হচ্ছিল পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে’

পুলক রাজ, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২০ মার্চ ২০২৩, ১৮:৪২

হঠাৎ বাসের টায়ার পাংচার। বিকট শব্দ। সকালের শান্ত রূপটা মুহূর্তেই ভয়ংকর। বাসটির ওলট পালট খাওয়া দেখে মনে হচ্ছিল কিছুক্ষণের মধ্যে পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাবে। আমি কিছুক্ষণের মধ্যে মারা যাবো।

এভাবেই বর্ণনা দিচ্ছিলেন মাদারীপুরের শিবচরে এক্সপ্রেসওয়েতে বাস দুর্ঘটনায় প্রাণে বেঁচে যাওয়া পঙ্কজ দাস। পঞ্চাশোর্ধ পঙ্কজ ঢাকায় আনসার ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংক ম্যানেজার। তার বাড়ি গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায়।

রবিবার সকালে শিবচরের কুতুবপুর এলাকায় ঢাকাগামী ইমাদ পরিবহনের বাসটির ভয়াবহ দুর্ঘটনায় প্রাণহানি হয়েছে ১৯ জনের। ঘটনাস্থলে মারা যান ১৪ জন। হাসপাতালে নেওয়ার পর মৃত্যু হয়েছে ৫ জনের। আহত হন অন্তত ২০ জন। তাদের মধ্যে পাঁচ জন ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাদেরই একজন পঙ্কজ দাস।

ঢাকা টাইমসকে তিনি বলেন, ‘আমি ঢাকায় যেতে খুলনা রয়েলের মোড় থেকে ভোর পাঁচটায় ইমাদ পরিবহনের ওই বাসে উঠি। জি-২ আসনে বসেছিলাম। এরপর তো দুর্ঘটনা ঘটলো। এখন অর্ধমৃত হয়ে ঢাকা মেডিকেল ভর্তি হয়েছি।’

পঙ্কজ দাসের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের ক্ষত। বাম চোখে ও কপালে আঘাত পেয়েছেন বেশি। কান্নার স্বরে পঙ্কজ দাস বলেন, ‘আমি সবার আর্তনাদের কারণে বেশি ভয় পেয়েছিলাম। এমনকি মৃত্যুর অপেক্ষায়ও ছিলাম।’

স্বামীর পাশে থাকা পঙ্কজ দাসের স্ত্রী স্বপ্না সিকদার ক্ষোভজড়ানো কণ্ঠে ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘আমাদের দেশে অপরাধ করলেও তাদের সঠিক বিচার করা হয় না। বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চালানোর জন্যই এ ধরণের নির্মম ঘটনা ঘটল। আমি এর সঠিক বিচার চাই।’

শিবচরের বাস দুর্ঘটনায় আহত ৫৪ বছর বয়সী মো. বুলবুল ইসলাম শেখও ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন। তিনি ঢাকার তেজগাঁওয়ে এনার্জি প্যাক পাওয়ার জেনারেশন লিমিটেড কার্যালয়ে অফিস সহকারী। গোপালগঞ্জের হরিদাসপুর এলাকার বুলবুল কাজের সুবাদে থাকেন ঢাকায়।

বুলবুল ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘এখনও কথা বলতে কষ্ট হচ্ছে। বেঁচে আছি এটাই বেশ। গাড়ি চালক অন্যমনস্ক ছিলো। সে নাকি সারা রাত ঘুমায়নি! না গাঁজা খেয়ে গাড়ি চালিয়েছে জানি না। বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চালানোর জন্য এত এত মানুষের মৃত্যু হলো।’

যাত্রার এক পর্যায়ে অতিরিক্ত গতি দেখে বাসচালককে যাত্রীদের কেউ কেউ সতর্ক করেছেন বলেও জানান মো. বুলবুল ইসলাম শেখ। ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘বাস চালককে আমরা বলেছি গাড়ী যেন এত দ্রুতগতিতে না চালায়। কিন্তু সে মানেনি। আমরা চারজন বসেছিলাম ই সিরিয়ালর আসনে। আমি ছাড়া এই সিরিয়ালের কেউ বাঁচেনি।’

বুলবুল ইসলামের বোনের ছেলে ঢাকার বংশাল থানার এসআই রফিকুল ইসলাম। হাসপাতালে মামার পাশে আছেন তিনি। ঢাকা টাইমসকে রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমার মামার বুকের বাম পাশের হাড় ও ডান হাতের হাড় ভেঙে গেছে। মাথায় বড় ধরনের আঘাত পেয়েছেন। কথাই বলতে পাড়ছেন না। এসব দেখে খুব কষ্ট লাগছে।’

(ঢাকাটাইমস/২০মার্চ/ডিএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বিশেষ প্রতিবেদন বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :