ডিএনসিসির ঝুঁকিপূর্ণ ৮ মার্কেট ভাঙছে আগামী সপ্তাহে, বিচ্ছিন্ন হচ্ছে বিদ্যুৎ গ্যাস পানির সংযোগ
সম্প্রতি কয়েকটি আগুনের ঘটনায় নড়ে চড়ে বসেছে রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশন। ঝুঁকিপূর্ণ ভবন চিহ্নিতকরণে নেওয়া হয় নানা উদ্যোগ। এরই মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের আওতাধীন আটটি মার্কেটকে ঝুঁকিপূর্ণ বলেও চিহ্নিতও করা হয়। আর এসব ঝুঁকিপূর্ণ মার্কেট সামনের সপ্তাহ থেকে ভাঙার প্রক্রিয়া শুরু হবে। ইতোমধ্যে ভবনগুলো ভাঙতে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ ও ঝুঁকিপূর্ণ মার্কেট- ভবনগুলোর বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার ঢাকা টাইমসকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম রেজা।
সেলিম রেজা ঢাকাটাইমসকে বলেন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের আওতাধীন ঝুঁকিপূর্ণ আটটি মার্কেট ভাঙতে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করেছি। ভবনগুলোতে এখন আর ব্যবসা করার কোনো সুযোগ নেই। ইতোমধ্যে ভবনগুলোয় আমরা লাল-শালু টাঙিয়ে দিয়েছি। বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে চিঠি দিয়েছি। ঝুঁকিপূর্ণ মার্কেটগুলো ভেঙে ফেলার প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে এই চিঠি পাঠানো হয়েছে। আশা করছি আগামী সপ্তাহ থেকে মার্কেটগুলো ভাঙার প্রক্রিয়া শুরু হবে।
ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগের কারণ জানতে চাইলে প্রধান নির্বাহী বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলো থেকে ব্যবসায়ীদের সরিয়ে দিতে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ার কারণে মূলত আমরা এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। দ্রুত ভবনগুলো ভেঙে ফেলা হবে।
মার্কেট ভাঙলে ব্যবসায়ীরা কী করবেন- জানতে চাইলে সেলিম রেজা বলেন, ব্যবসায়ীরা যাতে তাদের ব্যবসা চালিয়ে যেতে পারেন, সেজন্য মার্কেটগুলোর আশপাশের খোলা জায়গা চিহ্নিত করে টিন শেড করে দেওয়া হবে। সিটি করপোরেশন এ বিষয়ে সহযোগিতা করবে।
ঝুঁকিপূর্ণ আটটি মার্কেট হচ্ছে-
গুলশান উত্তর কাঁচা মার্কেট, গুলশান দক্ষিণ পাকা মার্কেট, মোহাম্মদপুর কাঁচা বাজারের প্রথম ও দ্বিতীয় তলা, রায়েরবাজার মার্কেট, কাওরানবাজার ১ নম্বর মার্কেট, কাওরানবাজার ২ নম্বর মার্কেট, কাওরানবাজার অস্থায়ী কাঁচা মার্কেট (কিচেন মার্কেট), কাওরান বাজার কাঁচামালের আড়ত মার্কেট ভবন ‘অতি নাজুক’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ২০১৯ সালের ১ এপ্রিল মার্কেটগুলো পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। তবে এসব মার্কেটে এখনো কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।
এদিকে এই ঝুকিপূর্ণ ভবনগুলোর মধ্যে রাজধানীর কারওয়ান বাজারেই রয়েছে চারটি ভবন। এর আগে গত ১০ এপ্রিল রাজধানীর কারওয়ান বাজারের চারটি ভবন অতিঝুঁকিপূর্ণ বলে জানান ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম। সে সময় বঙ্গবাজার মার্কেটে ভয়াবহ আগুন লাগে।
উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায়ও অনেকগুলো ঝুঁকিপূর্ণ মার্কেট রয়েছে। এই বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে কিনা- জানতে চাইলে মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের কাছে আটটি মার্কেটের তথ্য এসেছে যেটা ঝুঁকিপূর্ণ। এর মধ্যে কারওয়ান বাজারের চারটি মার্কেট অতিঝুঁকিপূর্ণ। গুলশানের একটি মার্কেট, গুলশান-২ নম্বরে একটি, রায়েরবাজারে একটি এবং মোহাম্মদপূর টাউন হল মার্কেটে একটি। এই আটটি মার্কেট ঝুঁকিপূর্ণ। আমি অলরেডি বলে দিয়েছি এবং মার্কেটে লাগিয়ে দিয়েছি (সতর্কতামূলক সাইনবোর্ড), এগুলো ঝুঁকিপূর্ণ মার্কেট।’
মেয়র আতিক বলেন, ‘মার্কেটে যারা কর্তৃপক্ষ আছে তাদেরকে আমি ডেকেছি। আমরা তাদের বলেছি অন্য যায়গায় চলে যাও। এই মার্কেটগুলোকে আমাদের সংস্কার করতে হবে। এটা অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং। কারণ মার্কেট থেকে কেউ যেতে চায় না। কিন্তু আমরা দেখেছি এই মার্কেটগুলো অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আমরা এগুলো খালি করে ফেলবে। তারা আমার কাছে এসেছে, বলেছে ঈদের সময় আমরা কী করব?’
(ঢাকাটাইমস/০৫এপ্রিল/কেআর/কেএম)