পটুয়াখালীতে ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ নিয়ে আতঙ্কে উপকূলবাসী

স্বপ্নীল দাস, পটুয়াখালী
 | প্রকাশিত : ১০ মে ২০২৩, ১৪:২২

প্রতিবছরই ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়তে হয় সাগর পাড়ের জেলা পটুয়াখালীর এই উপকূল অঞ্চলের মানুষদের। ঝড়ের সঙ্গে লড়াই করা এই অঞ্চলের মানুষের নিয়মমাফিক কাজ। প্রতি বছরেই ঝড়ের খবরে নির্ঘুম রাত কাটাতে হয় পটুয়াখালীর উপকূলীয় এলাকার মানুষদের।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এ এলাকার প্রায় ১৮ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ রয়েছে অতি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায়। ঘূর্ণিঝড়ের সময় নদীর পানি বেড়ে যাওয়ার ফলে দুর্বল বেড়িবাঁধগুলো দিয়ে মুহূর্তের মধ্যেই শত শত গ্রাম পানিতে প্লাবিত হয়ে যায়। ইতোমধ্যে গত কয়েকবছরের ঝড়ের কবলে পড়ে নদীগর্ভে চলে গেছে হাজারও মানুষের সাজানো স্বপ্ন। অনেকের চিরতরে মুছে গেছে ঘড়-বাড়ি। হারিয়ে গেছে নানা ধরনের স্মৃতি।

এমন পরিস্থিতিতে কিছু কিছু এলাকায় বাঁধ সংস্কারে কাজ শুরু করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। তবে ক্ষতিগ্রস্তদের দাবি স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য মতে, পটুয়াখালী জেলায় বেরিবাধঁ রয়েছে ১৩৩৫ কিলোমিটার। যার মধ্যে পটুয়াখালী সার্কেলের অধীনে ৮২২ কিলোমিটার এবং কলাপাড়া সার্কেলের অধীনে রয়েছে ৫১৩ কিলোমিটার। এছাড়াও পোল্ডার রয়েছে ৩৬টি এর মধ্যে পটুয়াখালী সার্কেলে ১৯টি এবং কলাপাড়া সার্কেলে ১৭টি।

ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধগুলোকে তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। এরমধ্যে মোটামুটি ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ ১০ কিলোমিটার। আবার অতি ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ রয়েছে ১৮ কিলোমিটার। যার মধ্যে পটুয়াখালী সার্কেলে ১০ কিলোমিটার এবং কলাপাড়া সার্কেলে ৮ কিলোমিটার এবং আংশিক ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ রয়েছে ৩৪ কিলোমিটার এর মধ্যে পটুয়াখালী সার্কেলে ১৯ কিলোমিটার এবং কলাপাড়া সার্কেলে ১৫ কিলোমিটার।

তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ এলাকা মির্জাগঞ্জ উপজেলা। নদী গর্ভে প্রায় বিলীন হয়ে গেছে পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার পিঁপড়াখালী গ্রাম। শত বছর ধরে নদী ভাঙনে এ এলাকার শত শত একর জমি, বসতবাড়ি, বাজার, কবরস্থান, মসজিদসহ বিলীন হয়েছে একাধিক বেড়িবাঁধ। ঘরবাড়ি হারিয়ে পথে বসতে হয়েছে অনেককে। এবার ঝড়ের খবরে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন ওই এলাকার মানুষ।

পরপর কয়েক বার প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ওই বেড়িবাঁধটি দুর্বল হয়ে পড়ে। গত বছর ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এর প্রভাবে ৩ থেকে ৪ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ঝুঁকিপূর্ণ এই বেড়িবাঁধ নিয়ে স্থানীয়রা রয়েছে চরম আতঙ্কে।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ভাঙ্গা বেড়িবাঁধগুলো জরুরিভাবে কাজ করা হলেও পরবর্তীতে সেগুলো স্থায়ীভাবে মেরামত না করার কারণে উপকূলীয় বেড়িবাঁধগুলো অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে থাকে। তাই আশ্বাস নয় স্থায়ী সমাধানের দাবি স্থানীয় ভুক্তভোগীদের।

এদিকে দুযোর্গ মোকাবেলায় ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় জরুরি ভিত্তিতে কাজ করার কথা জানালেন পানি উন্নয়ন বোর্ড।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফ হোসেন বলেন, উপকূলীয় জেলা পটুয়াখালীতে অন্য সব জেলার চেয়ে বেড়িবাঁধ সবচেয়ে বেশি। এখানে ৩৬টি পোল্ডার ও ১৩৩৫ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ রয়েছে। আমরা সকল বেড়িবাঁধগুলো সংরক্ষণ করার জন্য ইতোমধ্যে কার্যক্রম শুরু করেছি।

(ঢাকাটাইমস/১০মে/এসএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :