নাশকতার মামলায় জামায়াত নেতা গোলাম পরোয়ার কারাগারে
নাশকতার মামলায় জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মিয়া গোলাম পরওয়ারের গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত। ফলে তাকে কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। বুধবার দুপুরে রাজধানীর পল্টন থানার একটি মামলায় ঢাকার মহানগর হাকিম রাজেশ চৌধুরী এই আদেশ দেন।
আদালতের পল্টন থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা শাহ আলম ঢাকাটাইমসকে বলেন, গত ১৩ জুন আসামিকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পল্টন থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. সালাহ উদ্দিন কাদের। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মামলার তদন্তকর্মকর্তার উপস্থিতিতে আজ শুনানির জন্য দিন ধার্য করেন আদালত। সে উপলক্ষে আজ আসামিদের আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপরে বিচারক গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন।
গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদনে তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, ‘মামলার বাদী (রুমাম শেখ) ২০২১ সালের ২৬ মার্চ দুপুর সাড়ে ১২টায় মুসল্লিগণের সঙ্গে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে জুম্মার নামাজ পড়তে যান। ফরজ নামার শেষে বাদী মসজিদের ভেতরে উচ্ছৃঙ্খল ধর্মান্ধ ব্যক্তিদের জুতা প্রদর্শনসহ নানা ধরনের রাষ্ট্রবিরোধী স্লোগান দিতে দেখেন। ওই দিন জুমার নামাজ শেষে মসজিদ থেকে বের হয়ে মসজিদের বাইরে উত্তর গেটের সিঁড়িতে কয়েক হাজার হেফাজত ও জামাত-শিবির-বিএনপি কর্মীদের উচ্ছৃঙ্খল জমায়েত দেখেন।’
‘নেতাকর্মীদের স্লোগান ও কথোপকথনে বাদী জানতে পারেন হেফাজত ইসলামের যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হকের নেতৃত্বে শীর্ষস্থানীয় জামাত-শিবির-বিএনপি-হেফাজত নেতৃবৃন্দ ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে দেশি-বিদেশি সরকার প্রধান ও রাষ্ট্র প্রধানদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত কর্মসূচিকে বানচাল করা ও ঢাকাসহ সারা দেশে ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়ে নৈরাজ্য সৃষ্টির পরিকল্পনা ও ষড়যন্ত্র করে। এ সময় হেফাজত ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হকের প্রত্যক্ষ নির্দেশে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ঘৃণ্য ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নের জন্য দেশি-বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্রে সজ্জিত হয়ে বাদীসহ সাধারণ মুসল্লিদের ওপর অতর্কিত হামলা করে।’
আবেদনে তদন্ত কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘আসামিরাসহ অজ্ঞাতনামা আসামিরা সরকারবিরোধী স্লোগান দিয়ে ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগ অফিসের দিকে মিছিলসহ অগ্রসর হয়। কিন্তু উপস্থিত মুসল্লি ও জনতার শক্ত প্রতিরোধে মুখে তারা পিছু হটে এবং আসামি মাওলানা লোকমান হাকিম (যুগ্ম মহাসচিব) বাদীর বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ গেটে থাকা মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। আসামি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরোয়ার এ মামলার ঘটনার সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ও তার নির্দেশে হেফাজতের অন্যান্য নেতাকর্মীরা এসব ঘটনা ঘটিয়েছে বলে সাক্ষ্য-প্রমাণ পাওয়া গেছে।’
মামলার মূল রহস্য উদঘাটন ও মামলার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে আসামি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরোয়ারকে (৬৩) অস্ত্র মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো একান্ত প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা।
২০২১ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ভাটারা থানার সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর তাকে একাধিক মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে রিমান্ডে নেওয়া হয়।
(ঢাকাটাইমস/২১জুন/এএ/কেএম)