বাংলাদেশ নিয়ে আমেরিকা শুধু পিঠ চুলকানোর কাজ করছে না: মান্না

জাহিদ বিপ্লব, ঢাকা টাইমস
| আপডেট : ২৬ জুন ২০২৩, ১১:০৮ | প্রকাশিত : ২৬ জুন ২০২৩, ০৮:২৬

জাতীয় নির্বাচনের আগে বাংলাদেশের জন্য যুক্তরাষ্ট্র যে নতুন ভিসা নীতি গ্রহণ করেছে তা কেবল ‘পিঠ চুলকানোর’ জন্য নয় বলে মনে করেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না।

তার মতে, যুক্তরাষ্ট্রের এই ভিসা নীতি বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও সৃষ্ট নির্বাচনের পক্ষে দেওয়া হয়েছে। এখন যুক্তরাষ্ট্র তাদের এই নীতি বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে চাইবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক ভিপি মাহমুদুর রহমান মান্না ২০১২ সালে নাগরিক ঐক্য নামের একটি নাগরিক সংগঠন গড়ে তোলেন। ২০১৭ সালের জুনে নাগরিক ঐক্য নামে নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করেন তিনি। সেই দল নিয়েই রাজনীতিতে সক্রিয় মান্না গণতন্ত্র মঞ্চেরও শীর্ষ নেতা। বর্তমানে নাগরিক ঐক্য নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধনের অপেক্ষায় রয়েছে।

রাজধানীর তোপখানা রোডে নাগরিক ঐক্যের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢাকা টাইমসকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে মান্না রাজনীতি, গণতন্ত্র মঞ্চ, চূড়ান্ত আন্দোলনসহ সমমনা জোটের মধ্যে বিরাজমান অস্থিরতা নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন।

ঢাকা টাইমস: দেশের বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি কীভাবে দেখছেন?

মাহমুদুর রহমান মান্না: একটি ভয়াবহ অনিশ্চয়তার মধ্যে বাংলাদেশ। দেশে প্রায় দেড় যুগ সময় গণতন্ত্র নেই। নির্বাচন ব্যবস্থা সরকার প্রায় ধ্বংস করে দিয়েছে। সরকার নিজেদের গদি রক্ষার্থে জনগণের অধিকার কেড়ে নিয়েছে।

একটি নতজানু পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করছে এবং দেশের অর্থনীতি ধ্বংস করে দিয়েছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, টাকার মান ধ্বংসাত্মকভাবে নেমে যাওয়া, ডলার আকাশচুম্বী হওয়া, অর্থনৈতিক ঘাটতি দেশকে এক খাদের কিনারায় এনে দাঁড় করিয়েছে।

পরিস্থিতি এতদূরে গিয়েছে যে, আন্তর্জাতিকভাবেও এ সরকার স্বৈরশাসক হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। আমেরিকা ও ইউরোপের দেশসমূহ স্যাংশন ও ভিসানীতিসহ বিভিন্ন ধরনের দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। এক কথায় সরকারের অবস্থা এখন লেজেগোবরে।

পাশাপাশি দেশে গণতন্ত্রের জন্য গণআন্দোলন তীব্রতর হচ্ছে। এ পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণের একমাত্র পথ সরকারের পদত্যাগ করা, সংসদ বাতিল করা এবং একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করে তার অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করা। অন্যথায় আরো অন্ধকার গহ্বরে তলিয়ে যাবে দেশ।

ঢাকা টাইমস: স্যাংশন, ভিসানীতিকে কীভাবে দেখছেন?

মাহমুদুর রহমান মান্না: আমার ধারণা, আমেরিকা শুধু পিঠ চুলকানোর কাজ করছে না। ডেমোক্রেটিক পার্টি এবং আমেরিকান সরকার যে নীতি ঘোষণা করেছে তা গণতন্ত্র ও সৃষ্ট নির্বাচনের পক্ষে। তারা এর বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে চাইবে। সরকার যদি গোয়ার্তুমি করে এগুলোতে কর্ণপাত না করে তাহলে তার পরিনতি আরো খারাপ হবে।

ঢাকা টাইমস: সম্প্রতি গণ অধিকার পরিষদসহ বিএনপির সমমনা জোটে অস্থিরতা বা বিশ্বাস-অবিশ্বাসের দোলাচল লক্ষ্য করা যাচ্ছে, বিষয়টি কীভাবে দেখছেন?

মাহমুদুর রহমান মান্না: আমরা আগেও বলেছি গণ অধিকার বেরিয়ে যাওয়াতে গণতন্ত্র মঞ্চের কোনো ক্ষতি হয়নি। আমরা আন্দোলনের কর্মসূচি গ্রহণ করেছি এবং পালন করছি। একইভাবে আমি বলতে পারি ১১ দল বা ১২ দল থেকে কেউ বেরিয়ে যাওয়াতে বিএনপির কোনো ক্ষতি হয়নি। গণ অধিকার পরিষদের অভ্যন্তরীণ কোন্দল সম্পূর্ণই তাদের ঘরোয়া ব্যাপার। তাদের ঘরের বাইরে এর কোনো আছর নেই।

ঢাকা টাইমস: সামনে কি গণতন্ত্র মঞ্চ থেকে এ ধরণের আর কোনো বেরিয়ে যাওয়ার আশংকা করছেন?

মাহমুদুর রহমান মান্না: না, এরকম আমি দেখছি না। তবে, একথা ঠিক আন্দোলনের মধ্যে ভাঙ্গন আনার জন্য সরকার চেষ্টার কোনো ত্রুটি করবে না। কিন্তু ইতোমধ্যে সরকার শুধু জনপ্রিয়তা হারিয়েছে তাই নয়, জনগণ ও রাজনীতিবিদদের কাছ থেকে বিশ্বাসও হারিয়েছে। সরকারের কোনো ষড়যন্ত্রমূলক তৎপরতা রিরোধীদলের ওপর কোনো প্রকার প্রভাব ফেলতে পারবে বলে মনে হয় না।

ঢাকা টাইমস: রোড মার্চ, সচিবালয় অভিমুখী যাত্রাসহ গণতন্ত্র মঞ্চ কঠোর কর্মসূচি দিয়েছে। বিএনপি সমাবেশ ও পদযাত্রার মধ্যে সীমাবদ্ধ...

মাহমুদুর রহমান মান্না: বিএনপি হয়ত আন্দোলনকে অন্যভাবে দেখছে। তাতে করে দেখার পার্থক্য হতে পারে। সে কারণেই কর্মসূচি গ্রহণেও পার্থক্য থাকতে পারে। তবে দিন শেষে আমরা যুগপৎ আন্দোলনে আছি।

ঢাকা টাইমস: চূড়ান্ত বা এক দফার আন্দোলন কবে বা কখন থেকে শুরু হবে বলে মনে করেন?

মাহমুদুর রহমান মান্না: আন্দোলনকে জোরদার করার বিষয়ে বিএনপির সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা তাদের কর্মসূচি দিচ্ছেন। সব কর্মসূচি একই হতে হবে সেই রকম কোনো কথা নেই। আমরা যেহেতু আলাদা কর্মসূচি পালন করছি, সেজন্য যৌথ ঘোষণার কথাও আসছে না। তবে আন্দোলনের যে ন্যূনতম লক্ষ্য—সরকারের পতন ঘটানো, সংসদ বাতিল এবং অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠন করার বিষয়ে আমরা এক মঞ্চে কথা বলতেও পারি।

ঢাকা টাইমস: বিএনপির সঙ্গে নির্বচনী জোট বা আসন নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে?

মাহমুদুর রহমান মান্না: না, এ বিষয়ে আমাদের মধ্যে কোনো আলোচনা হয়নি।

ঢাকা টাইমস: আপনাদের নির্বাচনী প্রস্তুতি কেমন?

মাহমুদুর রহমান মান্না: এখনো নির্বাচন নিয়ে কিছু ভাবছি না। আন্দোলন নিয়ে ভাবছি। আন্দোলনে জয়ী হলে নির্বাচন নিয়ে ভাববো।

ঢাকা টাইমস: ইসি থেকে আপনার দল নাগরিক ঐক্যের নিবন্ধনের বিষয়ে আপনি কতটুকু আশাবাদী?

মাহমুদুর রহমান মান্না: এটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। সরকার যদি মনে করে রাজনীতিক দল হিসেবে আমাদের নিবন্ধন দেবে তাহলে আমরা পাবো।

ঢাকা টাইমস: আপনি একসময় আওয়ামী লীগ করতেন। আওয়ামী লীগ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন কি?

মাহমুদুর রহমান মান্না: এত বছর পর আমি আওয়ামী লীগ করি বা না করি সেটি কথা নয়। তবে যে কেউ বর্তমান আওয়ামী লীগের ভূমিকা থেকে একথা বলতে পারবে—আওয়ামী লীগ ক্ষমতার বাইরে থাকলে আন্দোলন-মারামারি করে। আর ক্ষমতায় থাকলে স্বৈরাচারী হয়।

(ঢাকাটাইমস/২৬জুন/ডিএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

সাক্ষাৎকার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

সাক্ষাৎকার এর সর্বশেষ

‘স্থিতিশীল সামষ্টিক অর্থনীতির স্বার্থে সরকারকে ভারসাম্যমূলক নীতি-উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে’: ড. আতিউর রহমান

প্রতি মুহূর্তেই মনে হচ্ছিল আর্মিরা ধরে নিয়ে যাবে: ফরিদা খানম সাকি

দাম বাড়ালে এতক্ষণে কার্যকর হয়ে যেত: ক্যাব সহ-সভাপতি নাজের হোসাইন

জন্ম থেকেই নারীদের যুদ্ধ শুরু হয়: নারী উদ্যোক্তা ফরিদা আশা

নারীরা এখন আর পিছিয়ে নেই

ভবন নির্মাণে সিটি করপোরেশনের ছাড়পত্র নেওয়ার নিয়ম করা উচিত: কাউন্সিলর আবুল বাশার

তদারকি সংস্থা এবং ভবন নির্মাতাদের দায়িত্বশীল হতে হবে: অধ্যাপক আদিল মুহাম্মদ খান

বেইলি রোডের আগুনে রাজউকের ঘাটতি রয়েছে: মো. আশরাফুল ইসলাম

নতুন করে পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত হয়ে ভবন অনুমোদন দিতে হবে: ইকবাল হাবিব

বীমা খাতে আস্থা ফেরাতে কাজ করছি: আইডিআরএ চেয়ারম্যান জয়নুল বারী

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :