বোয়ালমারীতে বেড়েছে ডেঙ্গুর প্রকোপ

বোয়ালমারী (ফরিদপুর) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২৪ জুলাই ২০২৩, ২১:৪৫
ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে ডেঙ্গুর প্রকোপ এখন ভয়াবহতার দিকে ধাবমান। শহুরে রোগ খ্যাত এডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু এখন চোখ রাঙাচ্ছে গ্রামেও। শহর ছাড়িয়ে রোগটি ছড়িয়ে পড়েছে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলেও। দিন দিন রোগটির ভয়াবহতা ঝুঁকির দিকে এগোচ্ছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সূত্রে জানা যায়, হাসপাতালটিতে ২৪ জুলাই অতীতের রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ সংখ্যক ১৭জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি রয়েছেন। গত জুন মাসে ১৮ জন আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেলেও চলতি মাসে ভর্তি হয়েছে ৬৯ জন ডেঙ্গু রোগী, যার মধ্যে অধিকাংশ স্থানীয় ভাবে আক্রান্ত। আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে এ মাসে ৩ জন রোগীর অবস্থার অবনতি হলে তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তর করা হয়। হাসপাতালটিতে ডেঙ্গু রোগীদের জন্য আলাদা কোন ওয়ার্ড না থাকায় সাধারণ ওয়ার্ডেই মশারি টানিয়ে চলছে ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসা। ডেঙ্গু কর্নার না থাকায় আলাদা কোনো চিকিৎসকও নেই। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত চিকিৎসক ও সেবিকাগণই দিনরাত সেবা দিয়ে যাচ্ছেন এসব রোগীদের। দিন দিন রোগটির প্রকোপ ভয়াবহতার দিকে এগোচ্ছে এ পরিস্থিতিতে ডেঙ্গুকে বড় জনস্বাস্থ্য সমস্যা বিবেচনা করে মশা নিধনের উদ্যোগ নেয়ার ওপর চিকিৎসার জোর দিলেও উপজেলাটিতে মশা নিধনে কার্যকরী কোনো পদক্ষেপ চোখে পড়ছে না বলে জানালেন একজন রোগীর স্বজন।
গত সাতদিন ধরে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিচ্ছেন শেখর ইউনিয়নের সহস্রাইল গ্রামের বাসিন্দা শাহজাহান কাজীর ছেলে তপু কাজী। তিনি জানান, গত তিন মাসের মধ্যে এলাকার বাইরে কোথাও ভ্রমণে যাননি তিনি। এক সপ্তাহ আগে জ্বর, মাথা ব্যথা, বমি ও শারীরিক দুর্বলতা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়। পরে টেস্ট করালে ধরা পড়ে ডেঙ্গু।
বোয়ালমারী পৌরসভার আঁধারকোটা নিবাসী সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব গাজী শামসুজ্জামান খোকনের সহধর্মিণী চতুল ইউনিয়নের সংরক্ষিত ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য ফরিদা বেগম স্থানীয়ভাবে আক্রান্ত হয়েছেন। তিনি জানান, কোথাও বেড়াতে যাইনি তারপরও ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি।
বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. কে এম মাহমুদুর রহমান বলেন, উপজেলার ডেঙ্গুর প্রকোপ খুবই খারাপ, এখনই প্রতিরোধে ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে বর্ষা মৌসুমে অবস্থা আরও খারাপ হবে।
বোয়ালমারী পৌরমেয়র মো. সেলিম রেজা লিপন মিয়া জানান- এককভাবে ডেঙ্গু প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়। এ জন্য সবার এগিয়ে আসতে হবে। আমরা প্রতিটি ওয়ার্ডে কমিটি করে ইতোমধ্যেই জনসচেতনতায় মিটিং করেছি। এছাড়া প্রচার প্রচারণায় লিফলেট বিতরণ ও মাইকিং করাসহ নিয়মিত মশা নিধনে ওষুধ ছিঁটানো হচ্ছে। ডেঙ্গু প্রতিরোধে তিনি সবাইকে এগিয়ে আসতে আহ্বান জানিয়েছেন পৌর মেয়র।
বোয়ালমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মোশারফ হোসাইন বলেন, ডেঙ্গুর প্রকোপ বৃদ্ধিতে আমার ইতোমধ্যেই বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছি- উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় থাকতে। পৌরসভাকে মশা নিধনে স্প্রে করেসহ পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালাতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া জনসচেতনতা সৃষ্টিতে আমরা প্রচার প্রচারণায় মাইকিং করাচ্ছি। ইউনিয়ন পরিষদগুলোও সতর্ক আছে তাদেরকেও কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে ।
(ঢাকাটাইমস/২৪জুলাই/এআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :