কাপাসিয়ায় তাজউদ্দীন আহমদের জন্মদিনের অনুষ্ঠান মঞ্চে ধর্ষণ মামলার আসামি, সমালোচনার ঝড়

কাপাসিয়া (গাজীপুর) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২৬ জুলাই ২০২৩, ২২:৪৩ | প্রকাশিত : ২৫ জুলাই ২০২৩, ১৯:৫৯
মঞ্চে বক্তব্য দিচ্ছেন ধর্ষণ মামলার আসামি যুবলীগ নেতা সাখাওয়াত হোসেন।

গাজীপুরের কাপাসিয়ায় আওয়ামী যুবলীগের একটি অনুষ্ঠানের মঞ্চে ধর্ষণ মামলার এক আসামির উপস্থিত থাকা নিয়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। দলের ভেতরে বাইরে চলছে সমালোচনার ঝড়। ইতোমধ্যে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।

রবিবার কাপাসিয়া উপজেলা সদর ইউনিয়ন পরিষদের সামনে উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের আয়োজনে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদের ৯৮তম জন্মদিন উপলক্ষে শান্তি, উন্নয়ন ও আনন্দ শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন সংসদ সদস্য সিমিন হোসেন রিমি। তাঁরই উপস্থিতিতে মঞ্চে উঠে বক্তব্য দেন ধর্ষণ মামলার আসামি কাপাসিয়া উপজেলার সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও কাপাসিয়া উপজেলা যুবলীগের সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন। গত বছরের আগস্টে তার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ তোলেন তার বাড়ির এক কিশোরী গৃহ পরিচালিকা। ওই গৃহপরিচারিকা ধর্ষণের শিকার হওয়ার পর বাচ্চা প্রসব করেন। এই ঘটনায় আদালতে মামলা দায়ের করেন নির্যাতনের শিকার ওই গৃহপরিচারিকার বাবা।

সাখাওয়াত হোসেনের বিরুদ্ধে আদালতের পরোয়ানার এক পৃষ্ঠার একটি কপি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। পরোয়ানার কপিতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল গাজীপুরের একটি সীলমোহর আছে। এছাড়া সেখানে পরোয়ানাভুক্ত আসামি হিসেবে সাখাওয়াত হোসেনের নামসহ ব্যক্তিগত পরিচিতি রয়েছে। তবে ওই কপির বাকি অংশ পাওয়া যায়নি।

পরোয়ানার কপির বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত হতে গাজীপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের এপিপি মো. আফফানকে ফোন দেওয়া হয়। তিনি বলেছেন, পরোয়ানার তথ্য সঠিক। ২০ জুলাই পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।

তবে কাপাসিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএইচএম লুৎফুল কবীর বলেন, পরোয়ানার একটি কপি ছড়িয়ে পড়ার বিষয়টি জেনেছি। কিন্তু এ ধরনের কোনো কপি থানায় আসেনি। কপি পেলে অবশ্যই আসামি গ্রেপ্তার করা হবে।

অভিযুক্ত চেয়ারম্যান সাখাওয়াত হোসেন বলেন, আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করা হয়েছে। রাজনৈতিক কারণে আমাকে ভুয়া ঘটনায় আসামি করা হয়েছে। আমি আত্মসমর্পণের প্রস্তুতি নিচ্ছি।

এদিকে, গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রশিদ সরকার কাপাসিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের নেতৃত্বের সমালোচনা করে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, ‘কিছুদিন আগে কমিউনিস্ট নেতার (কাপাসিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের) সভাপতির পদ থেকে নেক্কারজনক বিদায় এবং বর্তমান যুবলীগ নেতৃত্ব যে দোষে দুষি, সামনে দ্বাদশ সংসদ এর একটি কঠিন নির্বাচনের মুহূর্তে কাপাসিয়ার হাজার লক্ষ আও়য়ামী লীগ নেতা-কর্মী আজ বড়ই ব্যথিত, চিন্তিত।”

তিনি ঢাকাটাইমসকে বলেন, ত্যাগী নেতাদের সরিয়ে কখনো আওয়ামী লীগ করেনি এমন এক কমিউনিস্ট নেতাকে কাপাসিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্বে বসিয়ে রাখা হয়েছিল দীর্ঘদিন। অনৈতিকতার কারণে কিছুদিন আগে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। এখন উপজেলা যুবলীগ সভাপতির বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা। এসব নেতৃত্ব কাপাসিয়া আওয়ামী লীগ ও যুবলীগকে ধ্বংস করবে। এজন্য বঙ্গতাজকন্যা মাননীয় সংসদ সদস্য সিমিন হোসেন রিমির উচিত কাাপাসিয়া আওয়ামী লীগ ও যুবলীগে উপযুক্ত নেতৃত্ব বাছাই করা। এ বিষয়ে তাঁর আরও বিচক্ষণ হওয়া জরুরি।

(ঢাকাটাইমস/২৫জুলাই/এআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :