ডিসেম্বর জানুয়ারির মধ্যে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে: দুদু
আগামী ডিসেম্বর, জানুয়ারির মধ্যে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু। বলেন, ‘দেশের একটা মানুষও বিশ্বাস করে না এই সরকার থাকবে। আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত এই সরকার থাকবে। এটা দিবালোকের মতো সত্য ডিসেম্বর, জানুয়ারির মধ্যে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে, স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠিত হবে, মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে।’
বুধবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ নাগরিক অধিকার আন্দোলনের উদ্যোগে অবিলম্বে বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে এক অবস্থান কর্মসূচিতে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে সরকারকে হুঁশিয়ারি দিয়ে শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া তিনবারের প্রধানমন্ত্রী, আমাদের নেত্রী, দেশনেত্রী। তাকে নির্যাতন করা হচ্ছে, সুচিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। স্পষ্ট করে বলি তার যদি কিছু হয় তাহলে এটাকে দেশবাসী ও বিএনপি হত্যাকাণ্ড বলে গ্রহণ করবে এটা সরকারের মাথায় রাখতে হবে।’
‘শেখ মুজিবুর রহমান হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছিল, তার হত্যার বিচার হয়েছে। জিয়াউর রহমানের হত্যার বিচার হয়েছে। বেগম খালেদা জিয়ার কিছু হলে সেটার বিচারও করা হবে। বর্তমান সরকারপ্রধান এবং যারা দায়িত্বে আছে তারা যদি এটা মনে রাখে তাহলে তাদেরও ভালো হবে, দেশেরও ভালো হবে, আমাদেরও ভালো হবে।’
বিএনপির এই শীর্ষনেতা বলেন, ‘এত একচোখা সরকার এদেশে আর কখনো আসেনি। আওয়ামী লীগ বাকশাল ছাড়া কিছুই বোঝে না। দেশের গোটা পুলিশের মধ্যে ৫ পার্সেন্ট হয়তো খারাপ বাকি ৯৫ পার্সেন্ট ভালো। কিন্তু এই সরকার গোটা পুলিশকে এমন করেছে যে এ দেশের সাধারণ মানুষ পুলিশকে ভালো চোখে দেখে না। পুলিশ তো চাকরি করে। তারা না থাকলে এই সমাজ ভালো থাকবে না। কিন্তু যেভাবেই হোক এই সরকার পুলিশকে ধ্বংস করে ফেলেছে।’
ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, ‘ব্যবসায়ীরা সবাই খারাপ না। কিন্তু এই সরকারের সঙ্গে যারা আঁতাত করে চলে তারাই লুটপাট করে। বাকি সবাই ভালো কিন্তু তাদেরকেও লুটেরা দুর্নীতিবাজ হিসেবে চিহ্নিত করেছে সরকার। কেউ কিছু বলতে পারে না। কেউ সত্য কথা বলতে পারে না। কিছু বললেই ঝামেলা। ভয়ের সাগরে ভাসছে বাংলাদেশ।’
দুদু বলেন, ‘বাংলাদেশের একমাত্র নোবেলবিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তার সঙ্গে কি শুরু করেছে। সারা দেশের মানুষ, সারা বিশ্ব তার পক্ষে, শুধুমাত্র সরকারের পক্ষের গুটিকয়েক মানুষ তার বিপক্ষে। আইনমন্ত্রী বলেছে তার পক্ষে কথা বললে কোনো অসুবিধা নাই। সরকারি ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান বলেছেন ইউনূস ভালো মানুষ তার বিপক্ষে আমি স্বাক্ষর করব না। এখন এমরান সাহেবের নেমপ্লেট ছিঁড়ে ফেলা হচ্ছে। এমরান তো আপনাদেরই লোক। একটু ভিন্নমত পোষণ করেছে। তাতেই আপনাদের এই দশা? এই সরকার যতদিন ক্ষমতায় থাকবে এদেশের কোনো কিছুই নিরাপদ নয়।’
সাবেক এই সংসদ সদস্য বলেন, ‘বর্তমান নির্বাচন কমিশন একবার বলল সবার সাথে আলোচনা করে নির্বাচনের ব্যবস্থা করা হবে। তারপরে বলল কেউ এলে আসুক না এলে নাই। তারা আবার নির্বাচনের ঘোষণা দিল। এদেশের বুদ্ধিজীবী নামের ১৭১ জন চিহ্নিত হয়েছে। তারা কি জিনিস এদেশের জনগণ চিনেছে। ৫০ জন সম্পাদক এরাও চিহ্নিত হয়েছে। নির্বাচন কমিশন আপনারাও চিহ্নিত হয়েছেন।’
সরকারের উদ্দেশে দুদু বলেন, ‘২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনের মতো একটি নির্বাচন আপনারা করতে চান। ভেবেচিন্তে করেন। পাকিস্তানিরা বাঙালিদের দমিয়ে রাখার চেষ্টা করেছিল। ৭০ সালের নির্বাচনে তারা ভেবেছিল শেখ মুজিবুর রহমানকে ক্ষমতা না দিলে কি হবে কিন্তু পাকিস্তান থাকে নাই। এই সরকারে যারা নিয়ন্ত্রণকারী তারাও যদি মনে করে কিচ্ছু হবে না তাহলে তারা ভুল চিন্তায় আছে।’
এসময় তিনি সবাইকে বিএনপির এক দফা আন্দোলনে অংশগ্রহণ করার জন্য রাজপথে নেমে আসার আহ্বান জানান।
বাংলাদেশ নাগরিক অধিকার আন্দোলনের আহ্বায়ক এম জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব ইঞ্জিনিয়ার মোফাজ্জল হোসেন হৃদয়ের সঞ্চালনায় কর্মসূচিতে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মো. রহমাতুল্লাহ, বিলকিস ইসলাম, তাঁতী দলের যুগ্ম আহবায়ক কাজী মনিরুজ্জামান মনির, কৃষক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার ওবায়দুর রহমান টিপু প্রমুখ।
(ঢাকাটাইমস/০৬সেপ্টেম্বর/জেবি/ডিএম)