যেভাবে নাশতা বিক্রেতা থেকে পাকিস্তান জাতীয় দলে হারিস রউফ

ক্রীড়া ডেস্ক, ঢাকা টাইমস
 | প্রকাশিত : ০৪ অক্টোবর ২০২৩, ১২:০৪

পাকিস্তান ক্রিকেট দলে বর্তমানে অন্যতম ভরসার নাম হারিস রউফ। যাকে ঘিরে আইসিসি ওয়ানডে বিশ্বকাপের ১৩তম আসরে শিরোপা জয়ের স্বপ্ন দেখছে পাকিস্তান। নিজের প্রথম বিশ্বকাপ খেলতে যাওয়া এই পেসার তার লেখাপড়ার খরচ যোগাতে বাজারে নাশতা বিক্রির কাজ করতেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে টেপ টেনিস ক্রিকেট খেলে লেখাপড়ার খরচ যোগাড় করতেন।

বিশ্বকাপের আগে ইএসপিএন ক্রিকইনফোর প্রামাণ্যচিত্র ‘ইনক্রেডিবল রাইজ অব হারিস রউফ’–এ নিজের জীবনের গল্প শুনিয়েছেন হারিস।

ওই তথ্যচিত্রে রউফ বলেছেন, ‘ম্যাট্রিকের পর আমি বাজারে গিয়ে খাবার বিক্রি করতাম খরচ জোগানোর জন্য। রবিবার এই কাজটা করতাম। তাতে আমার পড়াশোনা আর একাডেমির খরচটা ওঠে আসত।’

এরপর রউফ কীভাবে টেপ-টেনিস বলের ক্রিকেট খেলে অর্থ উপার্জন করেছেন সেটাও জানিয়েছেন। টেনিস বলে টেপ জড়িয়ে ম্যাচ খেলার বেশ প্রচলন রয়েছে। যার ব্যতিক্রম নয় পাকিস্তানও। এ নিয়ে রউফ বলছেন, ‘আমি যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হই, তখন আমার বাবা সেরকম কিছু উপার্জন করতেন না। ফলে আমার বেতন দেওয়া সম্ভব হচ্ছিল না তার পক্ষে। আমিও সেরকম উপার্জন করছিলাম না। তারপর আমি টেপ-টেনিস ক্রিকেট খেলা শুরু করি। যার মাধ্যমে সহজেই ফি দিতে পারতাম। টেপ টেনিস ক্রিকেট খেলে পাকিস্তানে ক্রিকেটাররা দুই থেকে আড়াই লাখ রুপি পর্যন্ত আয় করতে পারেন। আমিও এমন আয় করতাম, আর টাকা মায়ের হাতে দিতাম।’

নিজেদের একেবারে খারাপ সময়ের কথাও জানাতে ভুললেন না ২৯ বছর বয়সী এই পেসার, ‘আমার বাবারা তিন ভাই ছিলেন। কাকাদের বিয়ের পরে নিজের ঘরটা ছেড়ে দেন বাবা। তখন এমন অবস্থা দাঁড়ায় যে, আমরা একটা সময় রান্নাঘরে ঘুমাতাম।’

জাতীয় দলে তার জায়গা পাওয়ার সুযোগটা আসে ২০১৭ সালে। সে সময় রউফ লাহোর কালান্দার্সের ট্রায়ালে অংশ নেন এবং কোচ আকিব জাভেদের চোখে পড়েন। আকিবই মূলত বদলে দিয়েছেন হারিসকে। সেই ট্রায়াল থেকে তার যাত্রা শুরু। ট্রায়াল থেকে নজরে আসার প্রসঙ্গে হারিস বলেছেন, ‘ট্রায়ালে যারা ঘণ্টায় ৮৩ থেকে ৮৪ মাইল গতিতে বল করছিলেন, তাদের নির্বাচন করা হচ্ছিল। কিন্তু আমি যখন বল করি, প্রথম বলের গতি ছিল ঘণ্টায় ৮৮ মাইল। তাহির মুঘল (কোচ) ভেবেছিলেন স্পিড মেশিনে কোনো সমস্যা আছে। তিনি আকিব ভাইকে ডাক দেন। আকিব ভাই আমাকে বল করতে বলেন, দ্বিতীয় বলটা করলাম ৯০ মাইল গতিতে। যখন আবার বোলিং করতে বললেন, তৃতীয় বলটা করলাম ৯২ মাইল গতিতে।’

এ নিয়ে প্রামাণ্যচিত্রে আকিব বলেছেন, ‘যখন দেখেছি একজন প্রতিভাবান তরুণ ঘণ্টায় ৯২ মাইল গতিতে বল করছে। তখনই মনে হয়েছে যে উদ্দেশে ট্রায়াল করা, সেটা পেয়ে গেছি।’

২০২০ সালে অভিষিক্ত হবার পর পাকিস্তান দলের পেস আক্রমনের গুরুত্বপুর্ন ক্রিকেটার হয়ে উঠেছিলেন রউফ। খুব সহজেই ১৪৫ কিমি গতিতে বল করা রউফ এ পর্যন্ত পাকিস্তানের হয়ে ওয়ানডেতে ৫৩টি এবং টি২০’তে ৮৩টি উইকেট শিকার করেছেন।

(ঢাকাটাইমস/০৪অক্টোবর/এনবিডব্লিউ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

খেলাধুলা বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :