ত্রিশালে পৃথক দুর্ঘটনায় সড়কে ৭ পোশাকশ্রমিকের মৃত্যু: ক্ষতিপূরণের আশ্বাস বিআরটিএর

ত্রিশাল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ১২ অক্টোবর ২০২৩, ১১:৫৭ | প্রকাশিত : ১২ অক্টোবর ২০২৩, ১১:২৭
ট্রাস্টিবোর্ড থেকে নিহতের প্রত্যেক পরিবারকে ৫ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেবে বিআরটিএ।

ময়মনসিংহের ত্রিশালে গত চারদিনের মধ্যে দুটি সড়ক দুর্ঘটনায় সাত পোশাকশ্রমিক নিহত হয়েছেন। বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট (বিআরটিএ) কর্মকর্তারা নিহত পরিবারকে আর্থিক ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দিয়েছেন।

এছাড়াও তাৎক্ষণিকভাবে ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক মো. মোস্তাফিজার রহমান অনুদান প্রদান করেন। ত্রিশাল থানা পুলিশ ঘাতক বাসের ড্রাইভারকে আটক করে আদালতে পাঠিয়েছে৷

গত সোমবার পিক-আপ ভ্যানের চাপায় পিষ্ট হয়ে নিহত দুই পোশাকশ্রমিক হলেন, উপজেলার বৈলর ইউনিয়নের উজান বৈলর গ্রামের মো. রাসেল মিয়ার স্ত্রী সুমি আক্তার (২০) ও একই গ্রামের আজিজুল হকের স্ত্রী আম্বিয়া খাতুন (৩৫)।

এছাড়াও গত বুধবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের চেলেরঘাট নামক এলাকায় ঘটা এ দুর্ঘটনায় এক কসাই ও পাঁচ পোশাকশ্রমিকসহ ৬ জন মারা যান। এতে গুরুতর আহত হন আরও অন্তত পাঁচজন। গুরুতর আহতরা ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

নিহত সুমি আক্তার পার্শ্ববর্তী উপজেলা ভালুকার ক্রাউন গার্মেন্টস কোম্পানিতে এবং আম্বিয়া খাতুন একই উপজেলার লাবিব সোয়েটার কোম্পানিতে চাকরি করতেন।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানান, বুধবার সকালে সদরের চুরখাই ও ত্রিশাল থেকে শেরপুর থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী এসএস ট্রাভেলস নামের একটি বাসে ওঠেন গার্মেন্টসকর্মীরা। চেলেরঘাট এলাকায় যেতে বাসটির চাকা পাংচার হয়। এ সময় বাসটি সড়কের পাশে দাঁড় করিয়ে মেরামত করছিল। এতে গার্মেন্টসকর্মীরা নেমে অন্য বাসের জন্য অপেক্ষা করছিল। এরই মধ্যে বাসের কয়েকজন যাত্রী ইসলাম পরিবহনের আরেকটি বাসকে সিগনাল দিয়ে দাঁড় করান। এ সময় রাসেল গার্মেন্টসের একটি বাস এসে দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রী ও বাসে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই তিনজন নিহত হন এবং পরে ত্রিশাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একজন ও ময়মনসিংহ মেডিকেলে দুইজনের মৃত্যু হয়।

প্রত্যক্ষদর্শী, স্থানীয় ও নিহতদের স্বজনরা অভিযোগ করে বলেন, 'পোশাককর্মীদের জীবনের যেন কোনো মূল্যই নেই কারও কাছে। একই উপজেলায় গত চারদিনে গাড়িচাপায় সাত পোশাককর্মীর মৃত্যু হলো। অথচ এরা নিতান্তই জীবনের প্রয়োজনে অদক্ষ চালক দ্বারা চালিত ফিটনেস বিহীন গাড়িতে করেই নিয়মিত এসব পোশাক কারখানায় যাতায়াত করে থাকেন। বিভিন্ন রোডে চলাচলে অনুপযোগী বাসগুলোকে পোশাক কারখানার শ্রমিক আনা-নেওয়ায় ব্যবহার করা হয় বলেও তারা অভিযোগ করেন।'

জানা যায়, পোশাককর্মীদের বহন করা বাসটি সড়কে চলাচলের অনুমতি হারিয়েছে ২০১৯ সালের ১ জুন। ফিটনেস হারিয়েছে ২০২০ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি। ফিটনেসবিহীন এ বাসটিকে ধাক্কা দেওয়া শেরপুর থেকে ঢাকাগামী এস এস ট্রাভেলসের ঢাকা মেট্রো ব-১১-০৫২৩ নম্বরের গাড়িটির বেপরোয়া গতির কারণেই দুর্ঘটনাটি ঘটে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

বিআরটিএ ময়মনসিংহের সহকারী পরিচালক (ইঞ্জি:) এ.এস.এম ওয়াজেদ হোসেন বলেন, 'খবর পেয়ে আমরা বিষয়টি নিয়ে ঘটনাস্থলে কাজ করেছি। ফিটনেসবিহীন গাড়ির বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হয়। তবুও আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে সড়কে চললে সেগুলোর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নিহতদের পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ট্রাস্টিবোর্ড থেকে প্রত্যেক পরিবারকে ৫ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।'

ত্রিশাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জুয়েল আহমেদ জানান, ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক স্যারের নির্দেশে নিহতদের পরিবারের খোঁজখবর নিতে তাদের বাড়ি গিয়েছিলাম। এ সময় নিহত প্রত্যেক পরিবারকে ২৫ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়া হয় জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে।

ত্রিশাল থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাইনউদ্দিন জানান, ত্রিশালে সড়ক দুর্ঘটনায় ছয়জন নিহত হওয়ার ঘটনায় ঘাতক বাসচালক ওবায়দুল্লাহকে (২০) গ্রেপ্তার করেছে ত্রিশাল থানা পুলিশ।

(ঢাকাটাইমস/১২অক্টোবর/প্রতিনিধি/এআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :