ইটভাটায় বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি, কৃষি উৎপাদন ব্যাহত

চরফ্যাশন (ভোলা) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২৩ জানুয়ারি ২০২৪, ১৬:৪৬

ভোলার চরফ্যাশনে পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি ছাড়াই কৃষিজমি ও আবাসিক এলাকায় গড়ে উঠেছে অবৈধ ইটভাটা। উপকূলজুড়ে বৈশ্বিক তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে সৃজন ম্যানগ্রোভ বন উজাড় হচ্ছে সেই ইটভাটার জ্বালানির জোগান দিতে। এতে বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি, ব্যাহত হচ্ছে কৃষি উৎপাদন। উজাড় হচ্ছে সবুজ বেষ্টনী। প্রশাসনের নজরদারি না থাকায় আইন অমান্য করে ম্যানগ্রোভ বাগান এলাকা, ফসলি জমি, জনবসতিপূর্ণ এলাকাসহ চরফ্যাশনের বিভিন্ন স্থানে স্থাপন করা হয়েছে ৩৪টি ইটভাটা।

এর মধ্যে ৩২টি অনুমোদনহীন। নেই পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র এবং ইট পোড়ানোর লাইসেন্স। ১২টি ভাটা জিগজ্যাগ প্রযুক্তি ব্যবহার করছে দাবি করলেও বাস্তবে প্রমাণ মেলেনি। বাকিগুলোতে মাত্র ৩০ থেকে ৪০ ফুট উচ্চতার ড্রাম চিমনি ব্যবহার করা হয়েছে। অথচ নিয়ম হল ১২০ ফুট ওপরে চিমনি ব্যবহার।

এ ছাড়াও ১৯৯২ সালে ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপন ও ২০০১ সালের (সংশোধিত) ইট পোড়ানো নিয়ন্ত্রণ আইন অনুযায়ী আবাদি জমি ও ঘনবসতি এলাকায় ইটভাটা নির্মাণে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তা মানা হয়নি। ২১টি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এ চিত্র পাওয়া গেছে।

ইটভাটায় কর্মরত শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতি মৌসুমে এক চিমনির একটি ভাটায় ২৭ থেকে ২৮ লাখ এবং দুই চিমনির ভাটায় ৫০ লাখ পর্যন্ত ইট তৈরি হয়। এক লাখ ইট তৈরিতে কাঠ লাগে দুই হাজার মণ। সেই হিসাবে ৩৪ ভাটায় প্রতি মৌসুমে ন্যূনতম কয়েক কোটি কোটি মণ কাঠ পুড়ছে। জলবায়ুর পরিবর্তন ঝুঁকিতে থাকা ভোলাকে রক্ষায় গড়ে তোলা উপকূলীয় ম্যানগ্রোভ বাগান এসব কাঠের প্রধান উৎস বলে অভিযোগ উঠেছে।

ভাটা মালিকরা নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে ম্যানগ্রোভ বাগান, সংলগ্ন ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় ভাটা স্থাপন করেছেন। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পরিবেশ ও বিনষ্ট হচ্ছে কৃষকের ফসল এবং ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে জনস্বাস্থ্য।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ভাটা মালিক জানান, পরিবেশগত ছাড়পত্রের জন্য কয়েক দফা আবেদন করেছেন তারা। নানা কারণে ছাড়পত্র মেলেনি। তাই ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে ইটভাটার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্তাদের ‘ম্যানেজ’ করেই ইট উৎপাদন ও বিপণন কাজ চলছে।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, জলবায়ুর পরিবর্তন ঝুঁকিতে থাকা ভোলাকে রক্ষায় গড়ে তোলা উপকূলীয় ম্যানগ্রোভ বাগান এসব কাঠের প্রধান উৎস। এতে একদিকে ম্যানগ্রোভ বাগান বিলীন হচ্ছে, অন্যদিকে গড়ে উঠেছে এক শ্রেণির পেশাদার কাঠ চোরচক্র।

পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. তোতা মিয়া ঢাকা টাইমসকে জানান, জনবসতি এলাকায় ইট পোড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। কেউ এ আইন অমান্য করলে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

চরফ্যাশন উপজেলা রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. সালাম হোসেন জানান, ভাটায় কাঠ পোড়ানোর কোনো বৈধতা নেই। যদি কোনো ভাটা মালিক ম্যানগ্রোভ বাগানের কাঠ কেটে পুড়ে থাকে, তাহলে বিষয়টি খতিয়ে দেখে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) সহকারী কমিশনার (ভূমি) মুহাম্মদ সালেক মুহীত জানান, পরিবেশ অধিদপ্তরের সঙ্গে সমন্বয় করে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে।

(ঢাকাটাইমস/২৩জানুয়ারি/ ইএইচ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

সারাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

সারাদেশ এর সর্বশেষ

ধামরাইয়ে বিয়ের দাবিতে আ.লীগ নেতার বাড়িতে তরুণীর অনশন

বগুড়ায় নিজেদের অফিসে আগুনের মামলায় আ.লীগ ও ছাত্রলীগ নেতা আসামি

কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহতদের স্মরণে ফেনীতে গায়েবানা জানাজা 

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মাদক সেবনের টাকা না পেয়ে স্ত্রীকে খুন

মুক্তিযোদ্ধাদের কোনো কোটাই এখন আর নেই: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

মাদারীপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার শিকার ৬ সাংবাদিক

শেরপুরে পুলিশ সদস্যের সম্পদের পাহাড়, দুদককে তদন্তের নির্দেশ আদালতের

চাঁদপুর সদরে পুলিশের অভিযান, ৯ বিএনপি নেতা গ্রেপ্তার

সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি হলো ২ হাজার ৮শ মেট্রিক টন পেঁয়াজ

কুমিল্লায় আট মামলায় আসামি ৮ হাজার, গ্রেপ্তার ১৬০

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :