অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে আপসহীন আড়াইহাজারের এসিল্যান্ড

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ০৮ মার্চ ২০২৪, ১৫:৪৫ | প্রকাশিত : ০৮ মার্চ ২০২৪, ১৫:১৬

শামসুজ্জাহান কনক। নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপেজলা ভূমি অফিসের এসিল্যান্ড। গত বছরের ১৪ জুন তিনি যোগদান করেন। যোগদানের মাত্র ৯ মাসে তিনি তার কাজ দিয়ে প্রশংসা কুড়িয়েছেন। অল্প সময়ের মধ্যে এলাকায় তিনি অনিয়ম ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে আপসহীন নারী কর্মকর্তা হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন।

তার সাফল্যে এলাকার নারীরা গর্ব করে বলছেন, ‘আমরা নারী তবে আমরা শুধু ঘরে নয় প্রশাসনেও পারি'

ভয়ভীতি দেখানো ও তদবিরে অনিয়মকে নিয়ম করা যেন তার উপস্থিতিতে একেবারেই অসম্ভব। আড়াইহাজারে ভূমি অফিসের চালকের আসনে একজন নারীও যে শক্তভাবে প্রতিষ্ঠানকে পরিচালনা করতে পারেন তার নজির এখন শামসুজ্জাহান কনক।

স্থানীয়দের মতে, তিনি আড়াইহাজারে যোগদানের পর দূর করেছেন সকল অনিয়ম। তার কঠোর নজরদারিতে দালালচক্র থেকে মুক্তি পেয়েছে ভূমি অফিসের সেবাগ্রহীতারা। এভাবেই তিনি হয়ে উঠেছেন সাধারণ মানুষের কাছে তুমুল জনপ্রিয় আর প্রভাবশালীদের কাছে জাঁদরেল।

ভূমি অফিসে আসা সেবাগ্রহীতারা জানান, তিনি কাজ করেন সকল প্রকার ভয়ভীতির ঊর্ধ্বে উঠে। কারো সাতেপাঁচে না গিয়ে আড়াইহাজার ভূমি অফিসকে জনবান্ধব অফিস হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে সুধীমহলের প্রশংসা অর্জন করতে পেরেছেন এসিল্যান্ড শামসুজ্জাহান কনক।

শামসুজ্জাহান কনক ৩৬তম বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডার। তার গ্রামের বাড়ি শরীয়তপুর জেলা সদরের বিনোদপুর ইউনিয়নে। পড়াশোনা শেষ করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাণিবিদ্যা বিভাগে। তার পিতার নাম এম. শামসুল হক। তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা অবসরপ্রাপ্ত সরকারি চাকরিজীবী। মাতা ফিরোজা আক্তার নিলু।

জানা গেছে, এসিল্যান্ড শামসুজ্জাহান কনক মিসকেসের ব্যাপারে রায় দেন নির্ভয়ে। তিনি কোনো প্রকার ভয়-ভীতির তোয়াক্কা করেন না। কাগজপত্র ঠিক থাকলে দ্রুত মিসকেস নিষ্পত্তি করেন। তাছাড়া কাগজপত্র দেখে সঠিক নামজারি করে দেন। ২০২৩ সালের ১৪ জুন তিনি আড়াইহাজার উপজেলায় যোগদান করেন। তিনি যোগদান করার পর থেকেই আড়াইহাজার ভূমি অফিসে কাজেকর্মে শৃঙ্খলা ফিরে আসে এবং কাজে গতির সঞ্চার হয়। আড়াইহাজার উপজেলায় ২টি পৌরসভা ১০টি ইউনিয়নের ৩১৬টি গ্রামের মানুষের আস্থা অর্জন করেছে উপজেলা ভূমি অফিস। আগের চেয়ে পরিচ্ছন্ন গোছানো অফিসে কাজও হয় দ্রুতগতিতে।

গ্রামের কৃষকরা জানান, ‘আগে ভূমি অফিসে আমরা ঢুকতে পারতাম না। দালালরা কইতো স্যারে তোমাগো মতন মানুষের সঙ্গে কথা কইবো না। কী সমস্যা আমাগো কও। যা লাগে খরচ দিবা কাম কইরা দিমু। এরপর টেকা নিয়াও দালালরা খালি ঘুরাইতো। অহন ম্যাডাম আমাগো লগে কথা কয়। সমস্যা সমাধান কইরাও দেন।

এদিকে, আড়াইহাজার উপজেলা সূত্রে জানা গেছে, এসিল্যান্ড শামসুজ্জাহান কনক যোগদানের পর মাসে কর্মতৎপরতা দেখিয়ে সকলের মনজয় করে নিয়েছেন। তবে ভূমি অফিসের দুর্জনদের কাছে তিনি এক আতঙ্ক। কাগজপত্রে সমস্যা থাকলে তিনি সেই বিষয়টি বাতিল করে দেন। সঠিক কাগজপত্র বুঝে পেলে তবেই সমস্যার সমাধান করে দেন। প্রভাবশালী লোকজন তার ওপর এসব কারণে নাখোশ। কারো কোনো প্রকার অনুরোধে তিনি ঢোক গেলেন না। নিয়ে কত নেতা কত কিছু বলেন তবে তিনি থাকেন তার নীতিতে অটল ও অবিচল।

এসিল্যান্ড শামসুজ্জাহান কনক এবারের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কঠোরভাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। উপজেলার দু-একটি ভোটকেন্দ্রে অনিয়মের অভিযোগ করা হলে তিনি তা শক্তহাতে প্রতিহত করেন। অবরোধের সময় তিনি নিয়মিত টহল দিয়েছেন গাড়ি যৌথ বাহিনী সঙ্গে নিয়ে। এবারের এসএসসিও দাখিল পরীক্ষায় কড়াভাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়া তিনি এখানে যোগদানের পর থেকেই নিয়মিত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে আসছেন। হোটেল-রেস্তোরাঁ, মাদকের স্পট অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বিষয়ে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন।

এসিল্যান্ড শামসুজ্জাহান কনক বলেন, আমি সেবার মান বাড়াতে চাই। জনগণকে সেবা দিতে চাই। নেতিবাচক কাজ আমি কেন, কেউ পছন্দ করে না। অপছন্দনীয় কাজ কেউ করলে সেই বিপদে পড়বে। আমরা মানুষকে তাদের কাঙিক্ষত সেবা দিতেই আগ্রহী।

(ঢাকাটাইমস/৮মার্চ/এআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :