আজব হামলা কিমের, দক্ষিণ কোরিয়ায় বেলুনের সঙ্গে আবর্জনা ও মল পাঠাচ্ছে উত্তর কোরিয়া!   

ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ার বিরুদ্ধে এক নতুন কৌশল অবলম্বন করলেন উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন। বুধবার দক্ষিণ কোরিয়ার সীমান্ত এলাকা, রাজধানী সিওল, দক্ষিণ গিয়াংসাং, ইয়োনহাপের মতো প্রদেশগুলোতে অসংখ্য বেলুন আছড়ে পড়ে। এই বেলুনগুলোর সঙ্গে বাঁধা ছিল আবর্জনা ও মল ভর্তি বস্তা, যেগুলো উত্তর কোরিয়া থেকেই পাঠানো হয়েছে বলে দাবি দক্ষিণের।

দক্ষিণ কোরিয়ার জয়েন্ট চিফ অব স্টাফ গ্যায়ংগি-গ্যাংওন জানিয়েছেন, বুধবার সকালে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে অন্তত ২৬০টি আবর্জনা ও মলবহনকারী বেলুন উদ্ধার করেছে তাদের সেনাবাহিনী।

পিয়ংইয়ং অবশ্য আগেই সতর্ক করেছিল, শাস্তি হিসাবে দক্ষিণ কোরিয়ার সীমান্ত এলাকায় বর্জ্য বর্ষণ করা হবে। দক্ষিণ কোরিয়ায় সামরিক বাহিনী পিয়ংইয়ং-এর এই ‘নিম্ন শ্রেণির’ পদক্ষেপের নিন্দা করেছে।

সামাজিক মাধ্যমে এই ঘটনার কয়েকটি ছবি ছড়িয়ে পড়েছে। ছবিগুলোতে দেখা যাচ্ছে, বেশ কয়েকটি বড় মাপের সাদা রঙের বেলুন। বেলুনগুলোর সঙ্গে বাঁধা রয়েছে বস্তা। তার কয়েকটিতে স্পষ্ট লেবেল লাগিয়ে লেখা আছে – ‘মলমূত্র’। এই মল ভরা বস্তা থেকে গুরুতর স্বাস্থ্যগত সমস্যা তৈরি হতে পারে বলে আশঙ্কা সিওলের।

এছাড়া বস্তাগুলোতে কাগজ, প্লাস্টিকের বোতল, খাবারের মোড়কে মতো আবর্জনা রয়েছে। কয়েকটি বস্তায় রয়েছে গাঢ় রঙের মাটি এবং ব্যাটারি। যা থেকে রাসায়নিক কোনও বিপত্তি ঘটতে পারে বলে উদ্বেগ রয়েছে।

অন্যদিকে কয়েকটি বস্তায় রয়েছে লিফলেট। লিফলেটগুলোতে দক্ষিণ কোরিয়ার সরকারের নিন্দা করা হয়েছে এবং উত্তর কোরিয়ার মতাদর্শের প্রচার করা হয়েছে।

এদিকে উত্তরের এই পদক্ষেপের জেরে নাগরিকদের বাইরে বের হতে নিষেধ করেছে দক্ষিণ কোরিয়া সরকার। ওই বস্তাগুলো নাগরিকদের স্পর্শ না করার বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে। এমন কোনও বেলুন বা বস্তা পেলে, সামরিক ঘাঁটি বা স্থানীয় থানায় রিপোর্ট করতে বলা হয়েছে। গ্যায়ংগি-গ্যাংওন জানিয়েছেন, সামরিক বাহিনী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে। তিনি বলেন, পিয়ংইয়ং-এর এই পদক্ষেপে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘিত হয়েছে।

গ্যায়ংগি-গ্যাংওন আরও বলেন, ‘আমরা উত্তরকে অবিলম্বে এই ধরনের অমানবিক ও নিম্ন-শ্রেণির কাজকর্ম বন্ধ করার জন্য কঠোরভাবে সতর্ক করছি।’

কিন্তু কেন হঠাৎ বেলুনে করে দক্ষিণ কোরিয়ায় মল পাঠাচ্ছে উত্তর কোরিয়া? আসলে বেলুন পাঠানো প্রথম শুরু করেছে দক্ষিণ কোরিয়াই। দক্ষিণ কোরিয়ার মানবাধিকার কর্মীরা সম্প্রতি বেলুনের মাধ্যমে উত্তর কোরিয়ায় সরকারবিরোধী প্রচারপত্র এবং অর্থ পাঠায়। দক্ষিণ কোরিয়ার এই প্রচার পদক্ষেপে দীর্ঘদিন ধরেই ক্ষুব্ধ পিয়ংইয়ং।

উত্তর কোরিয়ায় কঠোর হাতে শাসন করেন কিম জং উন। বাইরে থেকে আসা তথ্য, নাগরিকদের মধ্যে অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে, প্রচারপত্রগুলো কিম জং উনের শাসনকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা পিয়ংইয়ংয়ের। এরই প্রতিশোধে উত্তর কোরিয়া এই পদক্ষেপ নেওয়ার হুমকি দিয়েছিল।

সূত্র: সিএনএন

(ঢাকাটাইমস/৩০মে/এমআর)