দেশ ধ্বংসের চেষ্টা করছে মিয়ানমার জান্তা: জাতিসংঘ

বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে সংঘাতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়ে মিয়ানমারের জান্তা দেশটিকে ধ্বংস করার চেষ্টা করছে বলে সতর্ক করেছেন দেশটিতে জাতিসংঘের বিশেষ র্যাপোর্টার টম অ্যান্ড্রুস। খবর ইরাবতির।
বৃহস্পতিবার থাইল্যান্ডের জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থার কাছে এক ব্রিফিংয়ে অ্যান্ড্রুস বলেন, ‘(মিয়ানমারের) জান্তা এখন ব্যাপক চাপে রয়েছে। তারা জনবল, সামরিক সরঞ্জাম এমনকি ভূখণ্ডের ওপর নিয়ন্ত্রণও হারাচ্ছে; কিন্তু তারপরও নমনীয় হচ্ছে না।’
তিনি বলেন, ‘গত প্রায় ১০ মাস ধরে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে জান্তা বাহিনী এবং তাদের বিভিন্ন স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো। এসব হামলার জবাবে জান্তা বাহিনী যেসব পাল্টা হামলা চালাচ্ছে, তাতে মারা যাচ্ছে মূলত বেসামরিক লোকজন। যদি এই অবস্থা চলতে থাকে, তাহলে অদূর ভবিষ্যতে মিয়ানমার নামে কোনো একক রাষ্ট্রের অস্তিত্ব আর থাকবে না। এ ব্যাপারটি জান্তাও বুঝতে পারছে; কিন্তু তারপরও তারা শান্তি স্থাপনে উদ্যোগ নিচ্ছে না। তাদের এই ভূমিকা মিয়ানমারের জন্য ধ্বংস ডেকে আনবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘গত ছয় মাসে স্কুল, হাসপাতাল এবং মঠে হামলার সংখ্যা যথেষ্ট বৃদ্ধি করেছে জান্তা বাহিনী। এতে বেসামরিক হতাহতে বেড়েই চলছে।
প্রসঙ্গত, সামরিক বাহিনীর দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে সশস্ত্র বিদ্রোহ নতুন মাত্রা পায় উত্তরাঞ্চলের তিনটি বিদ্রোহী বাহিনী এক হয়ে আক্রমণ শুরুর পর। ২০২৩ সালের অক্টোবরের শেষের দিকে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর ওপর একজোট হয়ে সুসংগঠিতভাবে হামলা চালায় দেশটির উত্তরের শান রাজ্যের জাতিগতভাবে সংখ্যালঘু তিনটি বিদ্রোহী বাহিনী, যাদের একসঙ্গে ডাকা হচ্ছে ‘থ্রি গ্রুপ অ্যালায়েন্স’ নামে। ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স আর্মি (এমএনডিএএ), তায়াং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি (টিএনএলএ) এবং আরাকান আর্মি (এএ) নিয়ে এই জোট গঠন করা হয়েছে।
এদিকে অক্টোবরে হামলা শুরু হবার পর থেকে হাজার হাজার সৈন্য তাদের অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে বিদ্রোহী বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করেছে। একই সঙ্গে মিয়ানমারের সামরিক জান্তার দখলে থাকা অনেক শহর ও এলাকা বিদ্রোহীরা নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে বলে খবর প্রকাশ হয়েছে।
অন্যদিকে গুরুত্বপূর্ণ শহরে সেনাবাহিনীর ব্যর্থতার কারণে ৬৭ বছর বয়সি জান্তা প্রধানের নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিদ্রোহীদের কাছে লড়াইয়ে ব্যর্থতার কথা প্রকাশ্যে স্বীকার না করলেও কিছু ভূখণ্ডের নিয়ন্ত্রণ হারানোর বিষয়টি মেনে নিয়েছে জান্তা সরকার। ফলে বহুমুখি চাপে রয়েছে সেনাবাহিনী।
(ঢাকাটাইমস/১২জুলাই/এমআর)

মন্তব্য করুন