বিশ্বে চকলেটের জন্য বিখ্যাত যেসব শহর

ফিচার ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ১৪ জুলাই ২০২৪, ০৮:৪২
অ- অ+

চকলেট ছোট-বড়, সকলের কাছেই সমান প্রিয় এবং লোভনীয়। চকলেট খেতে ভালবাসেন না, এমন মানুষ চকলেট কেক, চকলেট মুজ, চকলেট বিস্কুট, চকলেট শেক- এমন সব লোভনীয় খাবারের প্রতি দুর্বলতা রয়েছে অনেকেরই। শরীর-মন তরতাজা করতে ডার্ক চকলেটের জুড়ি মেলা ভার। অনেকর ধারণা, চকলেটের প্রকোপে শরীরের অতিরিক্ত মেদ জমতে শুরু করে। তবে আধুনিক গবেষণা বলছে, ফিট ও সুস্থ থাকতে ডায়েট প্ল্যানে অল্প পরিমাণে ডার্ক বা কনসেনট্রেটেড চকলেট খেতেই পারেন। তাতে রক্তে শর্করা মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করবে। ক্ষুধাও কম পাবে। ডার্ক চকলেটের পুষ্টিগুণ অনেক বেশি। ডার্ক চকলেটে রয়েছে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অন্যান্য উপকারী উপাদান, শরীরে প্রবেশ করা মাত্র টক্সিক উপাদানেরা বেরিয়ে যেতে শুরু করে। ডার্ক চললেট খেলে ক্যানসারও দূরেও থাকে।

প্রথম দিকে চকলেট তৈরি করা হতো কোকোয়া বীজ থেকে। যা একধরনের পানীয় তৈরি করা হতো। ১৮ শতকের মাঝামাঝি সময়ে এসে কোকোয়া বাটারের সঙ্গে তরল চকলেট ও চিনি মিশিয়ে প্রথম আধুনিক চকলেট তৈরি হয় যুক্তরাজ্যে। এরপর ১৮৭৬ সালে সুইজারল্যান্ডে এর সঙ্গে দুধ মিশিয়ে তৈরি করা হয় মিল্ক চকলেট, যা ছেলেবুড়ো সবার প্রিয় হয়ে ওঠে। একদল বিজ্ঞানী চকলেটের প্রাকৃতিক উপাদান বিশ্লেষণ করেছেন। তাঁরা দেখেছেন, এক টুকরা চকলেট মুখে পুরলে এতে থাকা চর্বি মুখের ভেতর একটা পাতলা আবরণ তৈরি করে। এই আবরণ মুখের ভেতর সৃষ্টি করে একটা কোমল অনুভূতি। আবার চকলেটের বিভিন্ন উপাদান ও লালা মিলেমিশে অনুভূতিটা করে তোলে আরও জমজমাট।

তবে চকোলেটের ইতিহাস বেশ প্রাচীন। স্বাদে, গন্ধে, বৈচিত্রে এক একটি দেশের চকলেটের চরিত্র এক এক রকম। একাধিক দেশে রয়েছে চকলেটের জাদুঘরও। প্রায় ২০০ বছর ছুঁই ছুঁই এই ইতিহাসে চকলেট পৌঁছেছে পৃথিবীর নানা প্রান্তে। আপনি যদি একজন চকলেট-প্রেমী হন তাহলে আপনাকে পৃথিবীর কয়েকটি জাদুঘরে যেতেই হবে। কারণ এই সব জাদুঘরে ধরা আছে সেই ২০০ বছরের ইতিহাস। জেনে নিন বিশ্বে চকলেটের স্বর্গরাজ্য কোন কোন শহর-

বার্মিংহ্যাম, ইংল্যান্ড

বার্মিংহ্যাম শহরের এই জাদুঘরে চকলেটের ২০০ বছরের ইতিহাস ধরা হয়েছে নিপুণভাবে। তার সঙ্গে ক্যাডবেরির সেরা চকলেটগুলো বিনামূল্যে চেখে দেখার সুযোগ।

পেনসিলভেনিয়া, আমেরিকা

পেনসিলভানিয়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চকলেট রাজধানী হিসাবে পরিচিত। হারশে কোম্পানি , আমেরিকান খাদ্য পণ্যের প্রস্তুতকারক, প্রধানত চকলেট এবং চিনি-ভিত্তিক মিষ্টান্ন। হার্শে'স মিল্ক চকলেট, তার বাদামী-ও-রূপালী মোড়কে, সম্ভবত ২০ শতকের সবচেয়ে পরিচিত আমেরিকান ক্যান্ডি বার ছিল। চকলেট কোম্পানির পেনসিলভানিয়ার হারশেতে অবস্থিত। শিশুদের অত্যন্ত পছন্দের এই জাদুঘর । আমেরিকায় কীভাবে চকলেট এসে পৌঁছল, তার বিস্তারিত ইতিহাস রয়েছে এখানে। এর পাশাপাশি এখানে নিজের পছন্দ মতো চকলেট বার বানিয়ে নেওয়ার সুযোগও রয়েছে।

জুরিখ, সুইজারল্যান্ড

পৃথিবীর সবচেয়ে বিখ্যাত এই চকলেট ব্র্যান্ডের সব ক’টি চকলেট সুইজারল্যান্ডের জুরিখে রয়েছে চেখে দেখার সুযোগ। সেটাও সম্পূর্ণ বিনামূল্যে। এখানে অন্যতম আকর্ষণ হল, এর মধ্যে থাকা চকোলেটের বৃহত্তম ফোয়ারা। ৩০ ফুট উচ্চতা এবং ৬৫,০০০ বর্গফুট এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে বিস্তৃত এই চকলেট ফাউন্টেন, বিশ্বের বৃহত্তম চকলেট ফাউন্টেন।

ব্রাসেল্‌স, বেলজিয়াম

বেলজিয়াম শহর চকলেটপ্রেমীদের পছন্দের শহর। এই দেশের ব্রাসেল্‌স শহর পরিচিত বিশ্বের চকলেটের রাজধানী হিসাবে। শহর জুড়ে অসংখ্য দোকানে বিক্রি হয় হরেক রকমের চকলেট। বিভিন্ন রকমের চকলেট বানিয়েছেন বেলজিয়ামের কারিগরেরা। কোনওটির সঙ্গে ফল, কোনওটির সঙ্গে বাদাম। কোনওটি দুধের, কোনওটিতে আবার শুধুই চকলেট। এখানে দেখা যায় চকলেটের ‘ঝর্না’। সেই তরল চকলেটও বিস্কুট ডুবিয়ে খাওয়া যায়। এই শহরে গেলে চকলেট খেয়ে দেখার পাশাপাশি চকলেটের জাদুঘর দেখতে ভুলবেন না। কীভাবে চকলেটবেলজিয়ামে এল, তার ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে সেখানে। এমনকি, চকলেট তৈরির পদ্ধতিও চাক্ষুষ করতে পারবেন। নয়হাউস, উইটামার, পিয়ের মার্কোলিনি এখানকার নামজাদা চকলেটের দোকান।

প্যারিস, ফ্রান্স

রাজা ত্রয়োদশ লুই তার ১৪ বছরের স্ত্রী অ্যান অফ অস্ট্রিয়াকে চকলেট উপহার দিয়েছিলেন। সেই উপহারের হাত ধরে ফ্রান্সে প্রথম চকলেটের আবির্ভাব। এখন এই শহরে মিষ্টি থেকে নোনতা, রকমারি স্বাদের চকলেট মেলে। শুরুতে অবশ্য কোকো বীজ বেটে তরল চকলেট তৈরি হত। সময়ের বদলে চকলেটনিয়ে অসংখ্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা হয়েছে এখানে। পিয়ের আর্মে, প্যাট্রিক রজার, লা মেজো দু শকোলা এখানকার জনপ্রিয় চকলেটের দোকান।

তুরিন, ইটালি

১৫৬০ সালে স্যাভয়ের ডিউক ইমানুয়েল তাঁর রাজধানী তুরিনে স্থানান্তরণের আনন্দ অনুষ্ঠানে তরল কোকোর ব্যবস্থা করেছিলেন। পরবর্তীকালে তরল থেকে শক্ত চকলেটের জন্ম। ইটালির তুরিন শহরও নানা স্বাদের রকমারি চকলেটের জন্য বিখ্যাত।

কোলোন, জার্মানি

জার্মানির চকলেটের শহর কোলোন। বিখ্যাত স্টলরেক চকলেটকোম্পানির ঘর কালোন। প্রতি বছর ১ লক্ষ চকলেট উৎপাদন করে এই সংস্থা। এখানে রয়েছে চকলেটের বিখ্যাত মিউজিয়াম। যেখানে চকলেট তৈরির ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে। তিন ফুট উচ্চতার চকলেটের ফোয়ারা এই জাদুঘরের সেরা আকর্ষণ। তা ছাড়া এই জাদুঘরের ভিতরে রয়েছে বিরাট দোকান। সেখানে পৃথিবীর সেরা মানের চকলেট রয়েছে বিক্রির জন্য।

উটি, মুন্নার, ভারত

ভারতে এমন শহর আছে, যেখানে থরে থরে সাজানো রকমারি চকলেটের স্বাদ নিতে পারেন আপনি। সেই তালিকায় প্রথমেই নাম আসে তামিলনাড়ুর উটির। এই শৈলশহরে গেলে দেখা যাবে সারিবদ্ধ চকলেটের দোকান। সেই দোকানগুলোতে বিভিন্ন ট্রে সাজানো রয়েছে বিভিন্ন স্বাদের চকোলেটে। এ ছাড়াও কেরলের মুন্নারে পাবেন রকমারি ডার্ক চকলেট।

(ঢাকাটাইমস/১৪ জুলাই/আরজেড)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
ঈদুল ফিতরে ৯ দিন বন্ধ থাকবে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সোনামসজিদ স্থলবন্দর
জ্বর হলে যে পাঁচ খাবার খেলেই বিপদ! জানুন, সাবধান হোন
এশিয়ার দেশগুলোকে সমৃদ্ধির জন্য স্পষ্ট রোডম্যাপ তৈরির আহ্বান ড. ইউনূসের
স্বাধীনতা দিবসে ড. ইউনূসকে মোদির বার্তা, যা বললেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা