শেখ হাসিনা গণতন্ত্রকে পুলিশের বুটের তলায় পিষে মহা ফ্যাসিবাদের রাজত্ব কায়েম করেছিল: রিজভী

বিএনপি সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, আওয়ামী লীগ এ দেশ থেকে যেভাবে লুটপাট করেছেন, যে দেশকে নতুন ভাবে তৈরি করতে আরও কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। বিদেশ থেকে যদি ১৮ লাখ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়া হয় সেখান থেকে যদি ১৭ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা পাচার হয় তাহলে সেই দেশ উন্নত হবে কী করে।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা এদেশের ব্যাংক লুটপাট করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক লুটপাট করেছে আর সেই লুটপাটের টাকা শেখ পরিবার লন্ডন কানাডায় পাচার করেছে। সে লুট পাটের বিরুদ্ধে কেউ যাতে কথা না বলতে পারে, কোনো বিরোধীদল যাতে টকশোতে বা বিভিন্ন জায়গায় কথা না বলতে পারে, সেজন্যে তিনি গুম-খুনের পদ্ধতি, ক্রসফায়ারের পদ্ধতি চালু করেছিলেন। অর্থাৎ বিরোধীদল যদি তার দুর্নীতির বিরুদ্ধে মিছিল করে কথা বলে তাহলে তার মান সন্মান থাকবে না, এই কারণে প্রায় ৬০০ জন তরুণকে সে ক্রসফায়ার দিয়ে হত্যা করা হয়েছিল। কত লোককে গুম করেছিল, খুন করেছিল তার কোন ইয়ত্তা নাই। শেখ হাসিনা গণতন্ত্রকে পুলিশের বুটের তলায় পিষে দিয়ে এক মহা ফ্যাসিবাদের রাজত্ব কায়েম করেছিল।
শনিবার তেজগাঁও এলাকায় ডেঙ্গু সচেতনায় লিফলেট বিতরণকালে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, শেখ হাসিনা এদেশে কোনো হাসপাতাল করেননি। প্রাইমারি স্কুল, কলেজ করেননি। যেখান থেকে টাকা মারা যাবে, লুট করা যাবে সেটা করেছেন। লোক দেখানো ফ্লাইওভার মেট্রোরেল তিনি করেছেন। কারণ এগুলো থেকে কাঁচা টাকা যাতে লুট করে বিদেশে পালিয়ে যাওয়া যায় বা বিদেশে পাচার করা যায়। অথচ তিনি উন্নত হাসপাতাল প্রাইমারি স্কুল করেনি। যদি করতেন তাহলে হাসপাতালের বারান্দায় রোগী শুয়ে থাকতো না। স্বৈরাশাসকরা কখনো এগুলো করে না।
ছাত্রদলের সাবেক এই নেতা বলেন, গত ১৫ বছর বিএনপি ও সম্ভাবনা দলগুলো লড়াই করেছে। অনেক বন্ধুর সাথী ছিল যারা এখন এখানে থাকতো তাদেরকে শেখ হাসিনা খুন করেছে, গুম করেছে। কারো লাশ রাস্তায় পড়েছিল, কারো লাশ বুড়িগঙ্গায় শীতলক্ষ্মায় পড়েছিল। শেখ হাসিনা গোটা দেশের জনগণকে পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্রের কাছে বিক্রি করে দিতে চেয়েছিল। আল্লাহ আমাদেরকে সেখান থেকে বাঁচিয়েছেন। যারা গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছে। জীবন দিয়েছে তাদের রক্তের স্রোত ধারায় আমরা গণতন্ত্র পেয়েছি। সেই গণতন্ত্র রক্ষার জন্য কাজ করে যেতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের নেতা তারেক রহমান ও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া অনেক নির্যাতন হামলা মামলা সহ্য করেও গণতন্ত্রের জন্য হিমালয় পর্বতমালার মতো দাঁড়িয়ে থেকেছেন। শেখ হাসিনা বিন্দুমাত্র তাদেরকে দমাতে পারেনি। আমরা যারা গণতন্ত্রকামী, দেশে গণতন্ত্র চাই, তারা ছাত্রলীগের মতো কারো ওপর হামলা করবে না বা কারো কোনো কিছু দখল করবো না এটাই হোক আমাদের অঙ্গীকার। আমরা যদি ওই পথে যাই জনগণ কিন্তু আমাদের ছেড়ে দেবে না। মানুষ মুখ ফিরিয়ে নেবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা জানি অনেকেই এই ফ্যাসিবাদের দোসর ছিল। তারাও লুটপাট করেছে, বিএনপি নেতাকর্মীদেরকে খুন-গুম করেছে। ছাত্রদেরকে, মাসুম বাচ্চাদেরকে হত্যা করেছে। তাদেরকেও বিচারের আওতায় আনতে হবে। কিন্তু আপনারা আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না। কোনো অপরাধীকে দেখলে, যে মিছিলে হামলা করেছে, ছাত্রদেরকে মেরেছে, পুলিশের খবর দিয়ে তাকে ধরিয়ে দেবেন। কিন্তু আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না। যারা নিরীহ আওয়ামী লীগ আছে, যারা ছোট ব্যবসা করে, চাকরি করে কারো ক্ষতি করেনি। তাদের যেন ক্ষতি না হয়। তাদের ওপর যেন জুলুম নির্যাতন না হয়। যারা অপরাধী তাদের বিচার হবে। কিন্তু বিচার করবে আদালত। তাদের গ্রেপ্তারের দায়িত্ব হচ্ছে পুলিশের। আমরা সে লাইনে যাব না। আমরা কোন রাজনৈতিক দলের অফিস, কারো বাড়ি ঘরে হামলা করবো না। মানুষ যেন আমাদেরকে দেখে নিরাপদ মনে করে। আমরা শান্তির পথে যেখানে সকল রাজনৈতিক দল কথা বলবে, মিছিল করবে। এটাই তো গণতান্ত্রিক নীতি।
বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, ঢাকা মহানগর উত্তরের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম নিরব, ডা. জাহিদুল কবির, যুবদল নেতা মেহেবুব মাসুম শান্ত, ডা. তৌহিদুল ইসলাম আউয়ালসহ নেতাকর্মীরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকাটাইমস/০২নভেম্বর/জেবি

মন্তব্য করুন