আদালত চাইলে শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে দিতে হবে: জামায়াত আমির
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনাকে আদালত চাইলে ভারতের ফিরিয়ে দিতে হবে- এমনই আগাম আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।
শুক্রবার (৮ নভেম্বর) সকালে নীলফামারী বড়মাঠে জেলা জামায়াতের কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন জামায়াতের আমির।
শেখ হাসিনা ২০০৯ সালের ১০ জানুয়ারি ক্ষমতায় আসার পর দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন বলে অভিযোগ করে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘ক্ষমতার দুই মাসের মধ্যে তৎকালীন বিডিআরের সদর দপ্তরে ৫৭ জন চৌকস সেনা কর্মকর্তাকে হত্যা করেন। তাদের লাশ ভাসিয়ে দিয়েছিলেন পিলখানার ড্রেনে। রাতে বাতি নিভিয়ে ঘাতকদের পিলখানা থেকে পালানোর সুযোগ করে দেয়া হয়েছিল। এই ঘাতকদের পরিচয় জাতিকে জানতে দেয়া হয়নি।’
জামায়াত আমির বলেন, যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে তারা অন্যায়ভাবে প্রায় ৪২ বছর পর জমায়াতের ১১ জন নেতাকে মৃত্যুদণ্ডের নামে হত্যা করেছে, যাদের নাম শেখ মুজিবুর রহমানের যুদ্ধাপরাধীর তালিকায় ছিল না, এমনকি কোনো মামলাও ছিল না।
আওয়ামী লীগ জাতিকে ধোঁকা দিয়েছে বলে মন্তব্য করেন জামায়াতের আমির। বলেন, ‘তারা (হাসিনা সরকার) জাতির ওপর জুলুম করেছে, মানুষ খুন করেছে, গণহত্যা সংঘটিত করেছে, মানুষ গুম করে আয়নাঘর তৈরি করেছে। হাজারো মায়ের বুক খালি করেছে, ঘরবাড়ি তচনছ করেছে, মানুষের ইজ্জতের ওপর হামলা করেছে, আর জামায়াতে ইসলামীর সব অফিস সিলগালা করে বন্ধ করে দিয়েছে।’
‘তারা আমাদের ঘরেও শান্তিতে থাকতে দেয়নি। তারা বিভিন্ন সময় আমাদের ধরে এনে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় জড়িয়েছে। প্রতিটি অপরাধের বিচার হওয়া দরকার। বিচার না হলে অপরাধ প্রবণতা আরও বাড়বে।’
জামায়াতের আমির বলেন, ‘কাছের প্রতিবেশী দেশ হিসেবে ভারতের সঙ্গে সুপ্রতিবেশীসুলভ আচরণ পেতে চাই। আদালত যখনই চাইবে তখনই শেখ হাসিনাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে দেয়ার আহ্বান জানাই।’
৫ আগস্টের পটপরিবর্তনে ফ্যাসিস্ট পতনের পর রক্তপাত এড়াতে দেশবাসী যে ধৈর্য্য ধারণ করেছেন তারও প্রশংসা করেন জামায়াতের আমির। তিনি বলেন, কেউ যেন বিনা বিচারে হয়রাণি না হয়। আমরা দূর্নীতি করব না, কাউকে দুর্নীতি করতেও দিব না।’
জেলা জামায়াতের আমির আব্দুস সাত্তারের সভাপতিত্বে সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতের সহ-সেক্রেটারি জেনারেল ও রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চল পরিচালক মাওলানা আব্দুল হালিম, রংপুর বিভাগীয় সেক্রেটারি মাওলানা হাবিবুর রহমান বেলাল, রংপুর টিম সদস্য আব্দুর রশিদ, জেলা বিএনপির সভাপতি আ খ ম আলমগীর সরকার প্রমুখ।
(ঢাকাটাইমস/৬নভেম্বর/মোআ
মন্তব্য করুন