লন্ডনে যাচ্ছেন খালেদা জিয়া, কবে দেশে ফিরবেন তারেক রহমান?

বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ০৬ জানুয়ারি ২০২৫, ১৬:১০| আপডেট : ০৬ জানুয়ারি ২০২৫, ১৬:৪৭
অ- অ+

উন্নত চিকিৎসার জন্য মঙ্গলবার বিদেশে যাচ্ছেন বিএনপি চেয়ারম্যান খালেদা জিয়া। কিন্তু দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডন থেকে কবে দেশে ফিরবেন কবে এ নিয়ে এখনো রয়ে গেছে ধোঁয়াশা। সেই ধোঁয়াশা আরো বাড়িয়ে দিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ, যিনি সপ্তাহ দুয়েক লন্ডনে কাটিয়ে রবিবার দেশে ফিরে এসেছেন। তিনি জানিয়েছেন, তারেক রহমান এখনই দেশে ফিরে আসার ‘পরিবেশ-পরিস্থিতি’ তৈরি হয়নি।

কেন সেই ‘পরিবেশ-পরিস্থিতি’ তৈরি হয়নি? আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ও শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর এখন তো ক্ষমতায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এই সরকারের মাধ্যমে অনেক রকম সুবিধাও ভোগ করছে বিএনপি। তারপরও কেন তারেক রহমানের দেশে ফেরার ‘পরিবেশ-পরিস্থিতি’ নিয়ে প্রশ্ন?

রাজনৈতিক মহলে আলোচনা, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের সময় নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সাথে বিএনপির বেশ ভালোরকম টানাপোড়েনই চলছে। এসময় তারেক রহমানকে মানসিক চাপে রাখার অস্ত্রও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের হাতে আছে। সেই অস্ত্র হচ্ছে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দায়ের করা বিভিন্ন সময়ের মামলা। এই টানাপোড়েন শেষ না হওয়া পর্যন্ত সময়টিকেই তারেক রহমানের দেশে ফেরার পরিস্থিতি তৈরি বলে বোঝাতে চাইছেন সালাহউদ্দিন আহমেদ, এমনটিও মনে করেন অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক।

গত ১৭ বছরে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে অন্তত ৮৪টি। অন্তত বলার কারণ, তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার সুনির্দিষ্ট সংখ্যা কেউ বলতে পারে না। ওয়ান ইলেভেনের সেনা-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে তাঁর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অভিযোগে ১৭টি মামলা দায়ের করা হয়। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর দায়ের করা হয়, জ্ঞাত আয় বহির্ভূত আয়, কর ফাঁকি, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি, বিদেশে অর্থ পাচার, রাষ্ট্রদ্রোহ, মানহানি, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি দেয়ার মত মামলা। কখনো বঙ্গবন্ধুর নামে কটূক্তি, কখনো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে কটূক্তির অভিযোগে দেশের প্রায় সব জেলাতেই তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মানহাণির মামলা করেন আওয়ামী লীগ ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংগঠনের নেতা-উপনেতারা। সারাদেশে দায়ের করা এসব মামলার সুনির্দিষ্ট সংখ্যাটাই কেউ বলতে পারছেন না।

এসব মামলার মধ্যে পাঁচটিতে তারেক রহমানকে সাজা দেয় বিচারিক আদালত, যার মধ্যে সবচেয়ে বড় সাজা ছিলো ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। এছাড়াও সাজা হয় জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় ১০ বছর, জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় তিন বছর, অর্থ পাচার মামলায় সাত বছর এবং মানহানির একটি মামলায় দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

গত বছর ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অনেকগুলো মামলা থেকে তারেক রহমানকে অব্যহতি দেয় আদালত। গ্রেনেড হামলা মামলার ডেথ রেফারেন্সে ও আপিল শুনানি শেষে নিম্নআদালতে দেওয়া তারেক রহমানের সাজা বাতিল করে তাঁকে খালাস দেয় হাইকোর্ট। এছাড়া সেনাসমর্থিত তত্বাবধায়ক সরকারের আমলে দায়ের করা চাঁদাবাজির চারটি মামলাও বাতিল করা হয়। তবে এখনো তাঁর বিরুদ্ধে ১৮/১৯টি মামলা ঝুলছে বলে জানিয়েছেন বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল।

রাজনৈতিক মহলে এখন আলোচনা, এই ঝুলে থাকা মামলাগুলোকেই কি তারেক রহমানকে মানসিক চাপে রাখার অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করতে চাইছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার? যথাসম্ভব দ্রুত নির্বাচনের দাবি থেকে সরে গেলেই কি এসব মামলাও দ্রুত নিষ্পত্তি করা হবে? ঝুলে থাকা মামলা নিষ্পত্তি না হওয়াকেই কি তারেক রহমানের দেশে ফেরার পরিস্থিতি তৈরি হয়নি বলে বোঝাতে চাইছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ?

এসব প্রশ্নের পরিস্কার কোন জবাব অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, তারেক রহমান কিংবা বিএনপির পক্ষ থেকে দেওয়া হচ্ছে না। তাই তারেক রহমানের দেশে ফেরার পরিস্থিতি নিয়ে আরো গভীর হয়েছে ধোঁয়াশা।

(ঢাকাটাইমস/০৬জানুয়ারি/এমএইচ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন 
ক্রান্তিকালে দেশ, আয় কমছে শ্রমজীবী মানুষের: রিজভী
পিপিএম পদক পেলেন এসপি কুদরত-ই-খুদা
বিভেদের রাজনীতি আমাদের ঐতিহ্য নষ্ট করেছে: মির্জা ফখরুল 
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা