মুরাদনগরে ধর্ষণ: তারকাদের ক্ষোভ, প্রতিবাদ

বাংলাদেশের কুমিল্লার মুরাদনগরে এক নারীকে ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদে সোশাল মিডিয়ায় ক্ষোভ আর প্রতিবাদের ঝড় তুলেছেন বিনোদন অঙ্গনের তারকারা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একের পর এক তারকারা ক্ষোভ প্রকাশ করে ধর্ষকদের বিচার দাবি করছেন।
পুলিশের ভাষ্য অনুযায়ী ঘটনাটি বৃহস্পতিবার হলেও এটি ফেসবুকসহ সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয় শনিবার।
এরপর থেকে অভিনয়শিল্পী থেকে শুরু করে নির্মাতা ও সংগীতশিল্পীরাও ধর্ষণ, নির্যাতন এবং তা ভিডিও করে ছড়িয়ে দেওয়ার মত ঘৃণ্য অপরাধের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন।
প্রতিবাদ জানিয়েছেন অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন ফেসবুকে লিখেছেন, ‘এই দেশে আমি কি নিরাপদ? উত্তরটা সহজ: না। মোটেও না।’
তিনি লেখেন, ‘প্রতিদিন এই দেশের মেয়েরা, নারীরা নির্যাতন, হয়রানি, হুমকি আর অবিচারের শিকার হচ্ছেন। এর পরিবর্তে আমরা কী করি? আমরা সহ্য করি, আমরা প্রতিরোধ করি না। আর কেউ কেউ বেঁচেও থাকে না। কেউ কেউ এই সহিংসতার বলি হয়ে প্রাণ হারান।’
তিনি আরও লেখেন, কেউ প্রাণ হারালেই তখন বাকি সবার টনক নড়ে। তখনই হঠাৎ সবাই উদ্বিগ্ন হয়ে ওঠেন। তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। হ্যাশট্যাগ ছড়ায়। তারপর সবকিছু ফিকে হয়ে যায়। আবার আগের মতো চলতে থাকেন সবাই। এটাই দীর্ঘদিনের বাস্তবতা। এটা নতুন কিছু নয়।
এরপর নিজের প্রসঙ্গে বাঁধন বলেন, ‘আমি কতবার কত ধরনের অনলাইন হুমকি পেয়েছি। ঘৃণা, গালিগালাজ, কুৎসা রটানো, হয়রানি—তাতে কি কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে? না। কারণ, এই দেশে অনেকেই বিশ্বাস করে, আমি এসব প্রাপ্য। যতক্ষণ না আমি খুন হচ্ছি, ততক্ষণ তারা মনে করবে যে আমাকে হয়রানি করাটা ঠিক আছে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমি অনেক দিন ধরে রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার ওপর বিশ্বাস রাখতে পারিনি। জুলাই বিপ্লবের পর আমি আশা রাখতে শুরু করেছিলাম। কিন্তু ভুল করেছিলাম। এই দুর্নীতিগ্রস্ত, পিতৃতান্ত্রিক দেশে আশাবাদী হওয়ার কোনো কারণ নেই। এটাই সত্যি। এটাই বাস্তবতা। আর আমাদের সেই বাস্তবতাই মানতে বাধ্য করা হচ্ছে।’
অপরাধীর ফাঁসির দাবি জানিয়ে মিশা সওদাগর লিখেছেন, ‘দেশের প্রতিটি মানুষ শান্তিতে থাকুক। প্রতিটি নারী নিরাপদে থাকুক। প্রতিটি অন্যায়ের ন্যায়বিচার হোক। প্রতিটি ধর্ষকের ফাঁসি হোক। মুরাদনগরে ঘটে যাওয়া ধর্ষণের তীব্র ঘৃণা এবং নিন্দা জানাচ্ছি। ধর্ষকের ফাঁসির দাবি করছি।’
প্রতিবাদ জানিয়ে অভিনেত্রী মিথিলা এক ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘ধিক্কার’। এরপর হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে অভিনেত্রী লিখেছেন, ‘ধর্ষকের শাস্তি চাই।’ মিথিলার দাবির সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন তাঁর অনুসারীরা।
অভিনেতা নাসির উদ্দিন খান ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘নারী কিংবা শিশু আপনার–আমার প্রত্যেকের ঘরেই আছে। অতীত-বর্তমান সব সময়ের সব ধর্ষণের বিচার হোক দ্রুতগতিতে। দয়া করে কোনো ধরনের “যদি-কিন্তু” বাদ দিয়ে আসুন ধর্ম-বর্ণ–দলমত-নির্বিশেষে সবাই ধর্ষণের বিরুদ্ধে সোচ্চার হই।’
মৌসুমী হামিদ প্রতিবাদ জানিয়ে লিখেছেন, ‘মানুষ আর মানুষ নেই। পৃথিবী শেষ হয়ে যাচ্ছে। কারণ, আর কোনো মানুষ থাকবে না। খুব শীঘ্রই।’
তমা মির্জা ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘মুরাদনগর, কুমিল্লা! বীভৎসতা! লজ্জা…’!
নুসরাত ফারিয়া লিখেছেন, ‘স্টপ রেপ’।
প্রার্থনা ফারদিন দীঘি লিখেছেন, ‘ধর্ষণকে না বলুন। এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান। নীরবতাই সমর্থন। ধর্ষণ বন্ধ করুন।’
আরশ খান লিখেছেন, ‘কাপুরুষত্ব যখন চরম পর্যায়ে পৌঁছায় তখন তা কুপুরুষত্বে রূপ নেয়। জন্মপরিচয়হীন না হলে একজন নারীর সাথে এমন করা সম্ভব না। একবার জারজ সব সময় জারজই থাকে।’
(ঢাকাটাইমস/৩০জুন/এলকে)

মন্তব্য করুন