‘সাঁওতালদের ঘরে আগুনে পুলিশের যোগসাজশ আছে’

আশিক আহমেদ
ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২০ ডিসেম্বর ২০১৬, ১৫:০১ | প্রকাশিত : ১৭ ডিসেম্বর ২০১৬, ০৯:২৪

গত ৬ নভেম্বর গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে সাঁওতালদের ওপর হামলার ঘটনায় প্রথম থেকেই অভিযোগের তীর স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, পুলিশ ও রংপুর সুগার মিল কর্তৃপক্ষের দিকে।

সম্প্রতি মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল আল-জাজিরায় প্রচারিত একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, সাঁওতালদের ঘরে আগুন দিচ্ছে পুলিশ। এ নিয়ে দেশের সংবাদম্যধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তোলপাড় ওঠে।

বলা হচ্ছে, সাঁওতালদের উচ্ছেদ ও তাদের ঘরে আগুন দেয়ার মধ্য দিয়ে লঙ্ঘন করা হয়েছে এই আদিবাসী নৃগোষ্ঠীর মানবাধিকার। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক তা-ই বলছেন। ঢাকাটাইমস টোয়েন্টিফোর ডটকমের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, তাদের প্রতি অবিচার করা হয়েছে। তাদের উচ্ছেদে কোনো আইন প্রক্রিয়া মানা হয়নি। পুলিশের যোগসাজশে আগুন দেয়া হয়েছে সাঁওতালদের ঘরে।

ঢাকাটাইমস: গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে সাঁওতালদের ঘরে আগুন দিয়েছে পুলিশ- এমন একটি ভিডিও কি আপনি দেখেছেন?

কাজী রিয়াজুল হক: হ্যাঁ, আল-জাজিরার ওই ভিডিও ফুটেজটা আমি ইউটিউবে দেখেছি।

ঢাকাটাইমস: আপনারা সরেজমিনে গিয়েছিলেন। কী দেখলেন?

কাজী রিয়াজুল হক: আমরা সাঁওতালদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। আমরা স্থানীয় প্রশাসনের বা স্থানীয় জনগণের সঙ্গে আলোচনা করেছি। আমরা বোঝার চেষ্টা করেছি প্রকৃত ঘটনাটা, যা দেশে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। এ দেশের নাগরিক হিসেবে সাঁওতালদেরও সব ধরনের সাংবিধানিক সুযোগ-সুবিধাসহ মৌলিক মানবাধিকার রয়েছে। তাদের কতটুকু মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে তা আমরা বুঝতে চেষ্টা করেছি ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে। আমরা তাদের সঙ্গে আলোচনা করেছি, তাদের কথা শুনেছি।

দেখুন, এটা সাঁওতালদের পূর্বপুরুষের জমি। এখানে স্থানীয় বাঙালিদেরও জমি আছে। প্রায় ১৮০০ একর জমি নিয়ে রংপুর সুগার মিল। জমি অধিগ্রহণের সময় আইনটা এমন ছিল- আখ চাষ না করলে তাদের জমি ফেরত দিতে হবে। এখানে যে ব্যত্যয় ঘটেছে- সাহেবগঞ্জের বাগদা ফার্ম বলে ওই জমি ওদের লিজ না দিয়ে স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী লোকজন লিজ নিয়েছিল। এটাতে সাঁওতালদের ক্ষোভ।

আর দ্বিতীয়টি হলো, জমি লিজই যখন দেয়া হলো তো সেটা সাঁওতালদের কেন দেবে না। ইতোমধ্যে বেশ কিছু সাঁওতাল বসতি স্থাপন করেছিল। তাই উচ্ছেদ প্রতিরোধে বাধাটা ওরাই দেয়। এই পর্যায়ে রংপুর সুগার মিল কর্তৃপক্ষ পুলিশ নিয়ে গেলে তাদের সঙ্গে স্থানীয় কিছু লোকজন, যারা এই জমি ভোগদখল করছিল, তারাও যোগ দিয়ে সাঁওতালদের ওপর আক্রমণ করে।

আমরা যেটা জানতে পেরেছি, ওই আক্রমণের সঙ্গে সাঁওতালদের নির্যাতন করা হয়েছে, তারা যে ছোট ছোট স্থাপনা তৈরি করেছিল সেগুলো ভেঙে দেওয়া হয়েছে এবং আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সেখানে স্থাপনার কোনো চিহ্নই আর নেই। কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে ঘিরে ফেলেছে সুগার মিল কর্তৃপক্ষ।

এখন সাঁওতালদের মধ্যে একটা আতঙ্ক কাজ করছে। তাদের ক্ষোভ- ‘আমরা আমাদের বাপ-দাদার সম্পত্তি তো পেলামই না, উপরন্তু আমাদের নিহত হতে হচ্ছে, আহত হতে হচ্ছে এবং মামলার বোঝা নিয়ে পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে।’ এই যে আতঙ্কটা সৃষ্টি হয়েছে, আমার মনে হয় রংপুর সুগার মিল কর্তৃপক্ষ এবং পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসন টেকেল করতে পারেনি। তাদের প্রশাসনিক দুর্বলতা আর পুলিশের বাড়াবাড়ির শিকার হয়েছে সাঁওতালরা।

ঢাকাটাইমস: সাঁওতালদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে বিভিন্ন মহল থেকে।

কাজী রিয়াজুল হক: হ্যাঁ, সেখানে মানবাধিকার চরমভাবে লঙ্ঘিত হয়েছে। মানবাধিকারের যে সংজ্ঞা- মানবিক মর্যাদা নিয়ে বেঁচে থাকা, তার সমতা থাকা এবং ন্যায়বিচার পাওয়া। সেখানে সে ন্যায্য বিচার পায়নি এবং তার মনুষ্যত্বের মর্যাদা চরমভাবে ক্ষুণœ করা হয়েছে। নির্বিচারে তাদের ওপর গুলি করা হয়েছে, তাদের নির্যাতন করা হয়েছে, তাদের ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সংবিধানে তার যে অধিকার রয়েছে, তা থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে তাদের। সব দিক থেকে বলতে গেলে তাদের সাংবিধানিক মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছে।

ঢাকাটাইমস: আল-জজিরার ভিডিওটি আপনি দেখেছেন। এটা আপনি কীভাবে নিচ্ছেন?

কাজী রিয়াজুল হক: আমরা সরেজমিনে অনেকগুলো ঘরে গিয়েছিলাম। তখন দেখেছিলাম সেখানে কোনো পুরুষ মানুষ নেই। আমরা ওখান থেকে ফিরে এসে দেখলাম যে অনেক লোক জড়ো হয়ে আছে, তাদের হাতে তীর-ধনুক। আমি তাদের জিজ্ঞাসা করলাম তারা তীর-ধুনক নিয়ে কেন দাঁড়িয়ে। তারা জানাল, তাদের মধ্যে প্রচ- ভীতি কাজ করছে, যেকোনো মুহূর্তে তাদের ওপর আক্রমণ হতে পারে। আত্মরক্ষার জন্য এই আয়োজন তাদের।

তো আমি তাদের আশ্বস্ত করলাম, তীর-ধনুক রাখতে হবে না। আমরা পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনকে বলে যাব যাতে তাদের ওপরে কোনো রকম নির্যাতন না হয়। আমরা এটাও তাদের বলেছি যে, তাদের ওপর অবিচার হয়েছে, অন্যায় হয়েছে, সেটা আমরা তদন্ত করে সরকারের কাছে রিপোর্ট দেব।

আর আমি তাদের বেশ কয়েকজনের বক্তব্য শুনলাম পাশের একটি ঘরে বসে। ওই সময় দেখেছি তাদের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতার আতঙ্ক কাজ করছে। তারা আমাদের বলেছেন, পুলিশের উপস্থিতিতে, স্থানীয় একজন চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে তাদের ঘরে আগুন দেয়া হয়েছে। দুয়েকজন বলেছে, পুলিশ তাদের মেরেছে। পুলিশ তাদের ঘর আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে সভা-সেমিনারে অভিযোগের কথা বলেছে তারা।

আমি ওখানে একজন ৮০ বছরের বৃদ্ধের সঙ্গে কথা বলেছি, যিনি হজ করেছেন। আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলাম, আপনি সত্য কথাটা আমাদের জানান। তিনি বললেন, পুলিশের সামনে আগুন দিয়েছে দেখেছেন। আরেক চেয়ারম্যন আছে বুলবুল চেয়ারম্যান, তার সামনে আগুন জ্বালিয়েছে। কিন্তু পুলিশ আগুন দিয়েছে, সেভাবে কেউ বলেনি।

ঢাকাটাইমস: ভিডিও থেকে কি আপনার মনে হয় পুলিশ আগুন দিয়েছে?

কাজী রিয়াজুল হক: আমার ও রকম টেকনিক্যাল নলেজ নেই। আমি ভিডিও ফুটেজের একটি জায়গায় দেখলাম পুলিশ আগুনের খুব কাছে। তো এখন আগুন জ্বালিয়েছে, না জ্বালায়নি, সেটা আমি বুঝতে পারছি না। যারা ওখানে উপস্থিত ছিল তারা বলতে পারবে। তবে আমাদের কাছে যারা বক্তব্য দিয়েছে তারা ঠিক এভাবে কথাটা বলেননি। তারা বলেছেন পুলিশের সহযোগিতায় আগুন দিয়েছে, তাদের তাড়িয়ে দিয়েছে, তাদের ওপর গুলি করেছে- এভাবে বলেছেন। আগুন দিয়েছে এভাবে বলেনি।

ঢাকাটাইমস: এই ভিডিও ফুটেজ ধরে কোনো তদন্ত করার চিন্তা আছে কি না আপনাদের?

কাজী রিয়াজুল হক: হ্যাঁ। ওই ঘটনার (উচ্ছেদ) পরপর একটি প্রতিনিধিদল ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছিলাম মানবাধিকারের কমিশনের পক্ষে। প্রতিনিধিদল সেখান থেকে ফিরে এসে আমাদের কাছে যে প্রতিবেদন দিয়েছে তার ভিত্তিতে পরে আমরা বিভিন্ন ধরনের মানুষের সঙ্গে আলোচনা করেছি। সংবাদমাধ্যমের রিপোর্টের মাধ্যমে জানতে পেরেছি। এরপর আমাদের কাছে প্রতীয়মান হয়েছে যে সাঁওতালদের ওপর নির্যাতন হয়েছে। সাঁওতালদের বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে। এটা প্রাথমিকভাবে আমাদের কাছে মনে হয়েছে।

এরপর আমরা দেখলাম, এই বিষয়টা প্রচন্ডভাবে সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে। তখন আমরা মনে করলাম প্রকৃত ঘটনাটি বের করা উচিত। আমাদের এখানে একটি ককাস আছে যারা ক্ষুদ্র জাতি-গোষ্ঠীদের স্বার্থ ও অধিকার নিয়ে কাজ করে। তাদের সঙ্গে আমরা একটি সভা করলাম।

ঢাকাটাইমস: এতে আপনাদের দেরি হলো না?

কাজী রিয়াজুল হক: না, দেরি না। এটাকে দেরি বলা যাবে না। ঘটনার পর আমরা আমাদের টিম পাঠিয়েছি, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদনও দিয়েছি। বিভিন্ন মিডিয়ার কাছে আমরা কথাগুলো বলেছি। কিন্তু পরবর্তীকালে এখানে দেখলাম জিনিসটা অনেক বেশি গভীরে চলে যাচ্ছে। রাষ্ট্রের ভাবমূর্তির প্রশ্ন রয়েছে এতে। বাংলাদেশ যে একটা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ, আমাদের সেই গর্বের জায়গাটা প্রশ্নের সম্মুখীন হচ্ছে। তখন আমরা মনে করলাম, আরো গভীর ও বিস্তারিতভাবে বিষয়টা দেখা দরকার। সরেজমিনে তদন্ত করে কারা দোষী, তাদের শাস্তি নিশ্চিত করা; আমাদের যারা ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী আছে তাদের অধিকারগুলো কীভাবে প্রতিষ্ঠা করা যায়; তাদের কীভাবে হ্যান্ডেল করতে হবে- এসব নিয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ সুপারিশমালা বা আমাদের একটি বিস্তারিত পর্যবেক্ষণ সরকারের কাছে উপস্থাপন করার উদ্দেশ্যে আমরা আবার সেখানে গিয়েছিলাম। এ কারণে আমাদের দেরি হয়েছে। তবে আমরা একটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দেব।

ঢাকাটাইমস: প্রতিবেদনটি কত দিনের মধ্যে দেবেন বলে আশা করছেন?

কাজী রিয়াজুল হক: আমরা চেষ্টা করছি এই ডিসেম্বরের মধ্যেই দিতে। যদিও আমরা গতকাল (সোমবার) ফিরে আসলাম মাত্র। আজকে (মঙ্গলবার ঈদে মিলাদুন্নবি) ছুটির দিন, আগামীকাল আমরা অফিসে যাব। আমাদের সঙ্গে যে টিম মেম্বার ছিল, তাদের সঙ্গে কথা বলব। আমরা যেসব পয়েন্ট নিয়ে এসেছি, যে স্টেটমেন্ট নিয়ে এসেছি সেগুলো নিয়ে বসব। আশা করছি এ মাসেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবেদন জমা দিতে পারব।

ঢাকাটাইমস: সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ মানে রাষ্ট্রপতির কাছে?

কাজী রিয়াজুল হক: না, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। আমরা ভাবছি কমিশনের সভা করে প্রতিবেদনটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তো দেবই, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ও রাষ্ট্রপতির কাছেও দেব।

ঢাকাটাইমস: এখন তো তদন্ত প্রাথমিক পর্যায়ে আছে। জানতে চাইছি আপনাদের চোখে কি এল?

কাজী রিয়াজুল হক: গতকালকের ভিজিটের পর আমাদের কাছে মনে হয়েছে সেখানে পুলিশের বাড়াবাড়ি ছিল অতিরিক্তি মাত্রায়।

ঢাকাটাইমস: কী ধরনের বাড়বাড়ি?

কাজী রিয়াজুল হক: পুলিশ যখন সাওঁতালদের উচ্ছেদ করতে যায় তখন ওখানে অনেক লোক ছিল। তাদের উচ্ছেদের জন্য কোনো নিয়ম মানা হয়নি। উচ্ছেদের একটি প্রক্রিয়া আছে, সেখানে ডেপুটি কমিশনারকে ৩০ দিনের জন্য একটা নোটিশ জারি করতে হয় জায়গা ছেড়ে দেয়ার জন্য। সেই নিয়মটা মানা হয়নি।

ঢাকাটাইমস: এটা তো ডিসি অফিসের কাজ। কিন্তু পুলিশের বাড়াবাড়ি কী?

কাজী রিয়াজুল হক: বলছি। এরপরে যদি তারা জায়গা ছেড়ে না যায় তখন ডিসির কাছ থেকে আদেশ নিয়ে পুলিশ তাদের উচ্ছেদ করতে পারে। এখানে যে ঘটনাটি ঘটেছে, কোনো নোটিশ দেয়া হয়নি। ডিসির নোটিশটা একটি আইনি প্রক্রিয়া। এটা হলো (গভর্নর লোকাল অথরিটি ল্যান্ড অ্যান্ড হাউজ অর্ডিনেন্স ১৯৭০) ১৯৭০ সালের একটি আইন। সেটা এখানে মানা হয়নি। পুলিশ এখানে সরাসরি চলে গেছে। সাওঁতালদের উচ্ছেদ করেছে, নির্যাতন করেছে। এটা আইনি প্রক্রিয়ায় হলে এত কথা উঠত না। আর তা ছাড়া নির্যাতন করার কোনো অধিকারই আপনার নেই।

ঢাকাটাইমস: কোনো স্থাপনায় পুলিশের আগুন দেওয়ার ক্ষমতা আছে কি?

কাজী রিয়াজুল হক: পুলিশের আগুন দেওয়ার কোনো ক্ষমতা নেই। পুলিশকে শুধু প্রক্রিয়া মেনে উচ্ছেদ করার ক্ষমতা দেওয়া আছে। তবে পুলিশ আগুন দিয়েছে এমন কোনো প্রমাণ আমাদের দিতে পারেনি কেউ।

ঢাকাটাইমস: পুলিশের সামনে অন্য মানুষ আগুন ধরিয়ে দিচ্ছে- এটা কি গ্রহণযোগ্য?

কাজী রিয়াজুল হক: না। ডেফিনিটলি পুলিশের সেখানে বরং দায়িত্ব রয়েছে আগুন ঠেকানো। পুলিশের সামনে যখন আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়, সেখানে কোনো য্দ্ধু চলছিল না, কোনো সংঘর্ষ চলছিল না। পুলিশের সামনে কেউ আগুন ধরিয়ে দিচ্ছে, এটা পুলিশ অ্যালাউ করতে পারে না। পুলিশের পক্ষ থেকে আইনের যে প্রয়োগটা হওয়া উচিত ছিল, সেটা তারা করতে পারেনি। পুলিশের উচিত ছিল এদের বাধা দেওয়া, যারা আগুন দিচ্ছিল। সেটা তো পুলিশ করলই না, উপরন্তু তাদের বিরুদ্ধে এখন অভিযোগ উঠেছে যে তারা নিজেরা আগুন দিয়েছে। পুলিশের সহযোগিতায় কিংবা পুলিশের নীরবতা কিংবা কোনো বাধা ছাড়া তারা আগুন দিতে পেরেছে, এটা তো ঠিক। অতএব সেখানে পুলিশ সম্পূর্ণ ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। পুলিশ তার দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করেনি।

ঢাকাটাইমস: এখানে ব্যর্থতা, নাকি করতে চায়নি?

কাজী রিয়াজুল হক: পুলিশের সঙ্গে তাদের (আক্রমণকারী) একটা বোঝাপড়া ছিল বলে প্রতীয়মান হয়েছে প্রাথমিকভাবে। যেহেতু পুলিশের উপস্থিতিতে আগুন দিয়েছে, পুলিশ নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে, তাই এটাকে ব্যর্থতা বলা যাবে না; এটা যোগসাজশেই হয়েছে। কয়েকজন সাঁওতালকে উচ্ছেদ করতে এত বড় বাহিনী নিয়ে যাওয়া মশা মারতে কামান দাগানোর মতো। এটারই বা কী যুক্তি ছিল সেটাও আমার জানা নেই।

ঢাকাটাইমস: কতজন পুলিশ ছিল?

কাজী রিয়াজুল হক:সংখ্যাটা ঠিক ঠিক বলতে পারছে না ওরা (সাঁওতাল)। বলেছে, পুলিশের সঙ্গে বিজিবি ছিল, র‌্যাব ছিল। তবে প্রচুর সংখ্যক পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি ছিল। তাদের সঙ্গে আরো অনেক লোক ছিল অস্ত্রপাতি নিয়ে।

ঢাকাটাইমস: তাহলে যে ভিডিও ফুটেজটি আল-জাজিরা দেখিয়েছে, সেটা এখনো বিশ^াস করতে পারছেন না।

কাজী রিয়াজুল হক: না, পুলিশ আগুন দিয়েছে এই কথাটা কেউ বলেনি আমাদের। আমরা যাদের বক্তব্য নিয়েছি, আমার যত দূর মনে পড়ে তাদের কাছ থেকে এই কথাটি এভাবে আসেনি। তবে স্থানীয়দের স্লোগানের মাধ্যমে ‘পুলিশের গুলি’ ‘পুলিশের আগুন’ এই জাতীয় কথা আমাদের কানে এসেছে।

ঢাকাটাইমস: এই ভিডিওটির বিষয়ে আপনারা কী করবেন?

কাজী রিয়াজুল হক: আমরা যখন তদন্ত করব আবার কিছু লোককে ডাকব। ডেকে আমাদের অফিসে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেব।

ঢাকাটাইমস: এই ভিডিও ফুটেজে এখন পর্যন্ত আপনারা স্যাটিসফাইড না?

কাজী রিয়াজুল হক: আমরা স্যাটিসফাইড না ডিস-স্যাটিসফাইডও না। আমরা এখনই নিশ্চিত বলতে পারছি না যে পুলিশ আগুন দিয়েছে। আবার পুলিশ আগুন দেয়নি সে কথাও বলছি না। কারণ আমরা তো দেখিনি যে পুলিশ আগুন দেয়নি।

(ঢাকাটাইমস/১৪ডিসেম্বর/এএ/মোআ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

সাক্ষাৎকার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

সাক্ষাৎকার এর সর্বশেষ

স্বাধীনতার পর থেকেই দেশ গড়তে কাজ করে যাচ্ছেন প্রকৌশলীরা: এস. এম. মঞ্জুরুল হক 

‘স্থিতিশীল সামষ্টিক অর্থনীতির স্বার্থে সরকারকে ভারসাম্যমূলক নীতি-উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে’: ড. আতিউর রহমান

প্রতি মুহূর্তেই মনে হচ্ছিল আর্মিরা ধরে নিয়ে যাবে: ফরিদা খানম সাকি

দাম বাড়ালে এতক্ষণে কার্যকর হয়ে যেত: ক্যাব সহ-সভাপতি নাজের হোসাইন

জন্ম থেকেই নারীদের যুদ্ধ শুরু হয়: নারী উদ্যোক্তা ফরিদা আশা

নারীরা এখন আর পিছিয়ে নেই

ভবন নির্মাণে সিটি করপোরেশনের ছাড়পত্র নেওয়ার নিয়ম করা উচিত: কাউন্সিলর আবুল বাশার

তদারকি সংস্থা এবং ভবন নির্মাতাদের দায়িত্বশীল হতে হবে: অধ্যাপক আদিল মুহাম্মদ খান

বেইলি রোডের আগুনে রাজউকের ঘাটতি রয়েছে: মো. আশরাফুল ইসলাম

নতুন করে পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত হয়ে ভবন অনুমোদন দিতে হবে: ইকবাল হাবিব

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :