ধার করা বই পড়ে জিপিএ-৫ পেল নাটোরের ইতি

সাইফুল ইসলাম, নাটোর
 | প্রকাশিত : ০৭ মে ২০১৭, ২১:১৯

শত কষ্ট ও দারিদ্র্যকে হার মানিয়ে অন্যের ধার করা বই পড়ে আলোকিত হয়েছেন সিংড়া উপজেলার পার সাঐল গ্রামের হতদরিদ্র মেধাবী ইতি রাণী। তিনি এবার এসএসসি পরীক্ষায় কতুয়াবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছেন।

বাবা অসুস্থ ভ্যানচালক শ্রী মুকুল চন্দ্র তরফদার। তিন ভাই-বোনের অভাবের সংসারে ইতি রাণী মেঝো।

ইতির বাড়িতে গিয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভূমিহীন হতদরিদ্র এই পরিবার অন্যের জায়গায় ছোট্ট একটি মাত্র কুড়ে ঘরে বসবাস করেন। একটু বৃষ্টি নামলেই সে ঘরে আবার পানি জমে। নুন আনতে যাদের পান্তা ফুরায়, তাদের তিন বেলা খাবার জুটবে বা কীভাবে? প্রায়ই ইতিকে না খেয়ে স্কুলে যেতে হয়েছে। পাকা রাস্তা থাকলেও অভাবের কারণে প্রতিদিন স্কুলে যেতে ৬ কি.মি. পথ হাঁটতে হয়েছে ইতিকে। সহপাঠীদের ধার করা বই ও শিক্ষকদের সহযোগিতা তার সাফল্যের অন্যতম কারণ।

মেধাবী ইতি জানান, ছোটবেলা থেকেই অনেক কষ্ট করে লেখাপড়া করছি। জেএসি পরীক্ষায়ও জিপিএ-৫ পেয়েছি। তার ইচ্ছা ইঞ্জিনিয়ার হয়ে বাবার কষ্ট লাঘব করা এবং দেশ ও জাতির সেবা করা। অর্থের অভাবে পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় ভুগছি। আকুতি তার পড়াশোনা চালাতে সহযোগিতা করার কি কেউ নেই।

ইতির বাবা হতদরিদ্র ভ্যানচালক মুকুল চন্দ্র জানান, সংসারই চলে না মেয়েকে পড়াব বা কী করে? মেয়ের ফলাফল শুনে স্বপ্ন দেখছেন তিনি। কিন্তু হঠাৎ ঘুম ভেঙে যাবার মতো, সেই স্বপ্ন বুঝি ভেঙে না যায়।

ইতির মা শ্রীমতি দীপালী রাণী জানান, অভাবের কারণে তার বড় মেয়ে দীপ্তিরাণীকে মাত্র ১২ বছর বয়সে বিয়ে দিতে হয়েছে। অন্যের জায়গায় ছোট্ট এই কুড়ে ঘরে কোনরকম নিভু নিভু করে বেঁচে আছেন। তারা সরকার ও সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা কামনা করেন।

কতুয়াবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শারদুল ইসলাম জানান, ইতি রাণী ছাত্রী হিসেবে অনেক মেধাবী। দরিদ্র মেধাবী ছাত্রী হওয়ায় আমরা তাকে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেছি। সেও অনেক শ্রম দিয়েছে, যার ফলে ভালো রেজাল্ট করতে সক্ষম হয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/৭মে/প্রতিনিধি/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :