বরাবর, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী

পি. আর. প্ল্যাসিড
 | প্রকাশিত : ১১ জুলাই ২০১৭, ১৬:৩১

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, সূর্যোদয়ের দেশ জাপান থেকে আপনাকে প্রাণঢালা শুভেচ্ছা। জাপান এমন একটি দেশ, যে দেশকে পৃথিবীর নিরাপদ দেশগুলোর মধ্যে একটি ধরা হয়। এই নিরাপদ দেশে দীর্ঘ সময় বসবাস করার পর যা দেখলাম, এখানেও বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ঘটে। সব দেশেই কমবেশি ঘটনা-দুর্ঘটনা ঘটে।

সরকার গঠনের পর এ পর্যন্ত আপনার জাপান ভ্রমণের সংখ্যা তিনবার। এর মধ্যে জাপানে আপনাকে দেওয়া নাগরিক সংবর্ধনার প্রতিটি অনুষ্ঠানেই আমি উপস্থিত হয়ে আপনার কথা খুব কাছ থেকে শুনেছি। প্রথমবার প্রধানমন্ত্রী হয়ে জাপান আসার পর হোটেলে আপনার রুমেও আমার যাওয়ার সুযোগ হয়েছে। আপনার প্রতি বিশেষ কারণেই আমার আলাদা এক শ্রদ্ধা-ভক্তি জন্মেছে। তা একমাত্র বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেই নয় শুধু, পাশাপাশি আপনার মতো নিঃস্বার্থ দেশপ্রেমী ও জনদরদী কোনো নেতা আমার বয়সে এখন পর্যন্ত বাংলার মাটিতে পাইনি। এটাও কারণ হতে পারে।

জানতে পেরেছি, সামনেই আপনার আবার জাপান সফরের সম্ভাবনা রয়েছে। শুনে ভালো লাগলো, কারণ জাপানের মতো দেশে যেকোনো রাষ্ট্রের প্রধানদের ঘন ঘন আসাটা অবশ্যই ইতিবাচক। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকেই জাপান বাংলাদেশের ভালো এক বন্ধু। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানও তাঁর জীবদ্দশায় জাপান এসেছিলেন রাষ্ট্রীয় সফরে। জাপানে আমরা বসবাস করে একটা বিষয় খুব বেশি বলি এবং অন্যদেরকেও বলতে শুনি, জাপান এবং বাংলাদেশের পতাকার মধ্যে এক ধরনের মিল রয়েছে। তা হচ্ছে, পতাকার মাঝখানে লাল, চারপাশে সবুজ/সাদা। এটুকুই আমাদের গর্ব বা অহংকার।

প্রবাসে বসে দেশের মানুষের কথা চিন্তা করলে মন খারাপ হয়। মনে হয় আমাদের দেশের মানুষের ধৈর্যশক্তি অনেক বেশি। জীবনে আমার স্বপ্ন ছিল বড় লেখক-সাংবাদিক হওয়ার। সাংবাদিকতা শুরু করেছিলাম ছাত্রজীবনেই, বিভিন্ন কারণে তা ধরে রাখতে পারিনি। পারিনি বললে ভুল হবে, ইচ্ছে করেই ধরে রাখিনি। কারণ, অভিজ্ঞতার আলোকে বলছি, প্রবাসে বসে বাংলাদেশি কমিউনিটির মধ্যে সাংবাদিকতা করলে যেন মানুষের সঙ্গে শত্রুতা বাড়ে। সবসময় সত্য কথা বলা যায় না। আজকাল রাত জেগে প্রায়ই একটা বিষয় নিয়ে ভাবি। আবার আমাকে লিখতে হবে, যেভাবে শুরু করেছিলাম অনেক আগে, ছাত্রজীবনে। লেখা শুরু করার আগে পরম করুণাময় আল্লাহ তালার কাছে প্রার্থনা করে মন স্থির করেছি, পিছনে যা হওয়ার তা হবে, শুরু আমাকে করতেই হবে। কারণ দেশের জন্য যারা জীবনবাজি রেখে যুদ্ধ করেছিল, তাদের ভবিষ্যতে কি হবে, তারা তা কখনো ভাবেনি। আমরা এখন আর অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করতে পারব না ঠিক, কলম তো আছে হাতে। এভাবে কলম দিয়ে সমাজ বদলানোর জন্য যুদ্ধ করে যাব।

দিন কয়েক আগে একটা সংবাদের দিকে আমার নজর কাড়লো। সংবাদটি ছিল এমন, প্রধানমন্ত্রীকে কটূক্তি করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ার কারণে মিরাক্কেল-খ্যাত নাটোরের আবু হেনা রনির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এর কয়েক মুহূর্ত পরেই আবার মিডিয়ার মাধ্যমে জানতে পারি, রনি তার অনিচ্ছাকৃত এমন ভুলের জন্য ক্ষমাও চেয়েছেন। দুটো বিষয়কেই আমি স্বাগত জানাই। প্রথমত, প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে কটূক্তি করায় মামলা। দ্বিতীয়ত, ভুল বুঝতে পেরে সঙ্গে সঙ্গে ক্ষমা চেয়ে সামাজিক সাইট থেকে রনির বিতর্কিত স্ট্যাটাসটি তুলে নেওয়া। অন্যদিকে বনানীর মতো অনেক ঘটনায় মামলা গ্রহণ না করে কর্তৃপক্ষ যে নাটকীয়তা সৃষ্টি করে তা মোটেও সমর্থনযোগ্য নয়।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আমি আপনার ধৈর্যচ্যুতি ঘটাতে চাই না। আপনার শুভ ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি। দেশ নিয়ে আপনার মিশন ও ভিশন সফল হোক সেই প্রত্যাশা রইলো।

পি. আর. প্ল্যাসিড: জাপান প্রবাসী লেখক ও সাংবাদিক

সংবাদটি শেয়ার করুন

প্রবাসের খবর বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

প্রবাসের খবর এর সর্বশেষ

পর্তুগালে ব্রাক্ষণবাড়িয়া কমিটির সভাপতি শাহাদুজ্জামান, সম্পাদক মানিক

বিএনপি-জামায়াত ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে: নাছিম

বাহরাইনে সাবের আহমেদের চাচা ও শাশুড়ির আত্মার মাগফেরাত কামনায় দোয়া

ইতালিতে বাংলাদেশ ইমিগ্র্যান্টস অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক কমিটি গঠন

বাহরাইনে প্রবাসী মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে, দূতাবাসের উদ্বেগ 

আয়ারল্যান্ডে বাংলা নববর্ষ উদযাপন

ইতালিতে কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি শরিফুল আলমকে সংবর্ধনা

কাতারে আল নূর কালচারাল সেন্টারের কর্মশালা সম্পন্ন

ইতালিতে প্রবাসীদের পহেলা বৈশাখ উদযাপন

‘বিদেশে দেশবিরোধী অপপ্রচারকারীদের বিরুদ্ধে স্থানীয় আইনে ব্যবস্থা নিন’

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :