জিপিওর ফুটপাতে সাহেবিয়ানা
কোট-টাই পরা জনা কয়েক ধোপদুরস্ত ভদ্রলোক। আলাপেও সাহেবিয়ানা ‘ভাই, এই শীতে নতুন কালেশন। কম দামের কোট বেছে বেছে নিয়ে যান।’
তারা আসলে সাহেব-সুবো নন। ফুটপাতের সামান্য দোকানি। তবে তাদের পণ্য কিন্তু সাহেবদের জন্যই। রাজধানী ঢাকার জিপিওর সামনের ফুটপাতে শত-হাজার কোট নিয়ে বসে আছেন তারা। তাদের কাছে পাবেন রকমারিও টাইও। ক্রেতাদের দেখাতে গিয়েই নিজেরাই মাঝেসাঝে গায়ে জড়ান কোট, গলায় ঝোলান টাই। তাই কেউ কেউ তাদের দেখে আচমকা সাহেব মনে করতেই পারেন।
জিপিওর সামনে দু পাশের ফুটপাতে গেলে কোটের বিশাল এক বাজারই মিলবে। এর একদিকে মুক্তাঙ্গন, অন্যদিকে বায়তুল মোকারম মসজিদ। ছোট-বড় নানা আকারের, নানা রঙের কোট আছে এখানে। এর মধ্যে আছে মুজিব কোট, মোদি কোট, প্রিন্স কোট, কটি, টাই, ব্লেজার।
এই বাজার কিন্তু শীতকালেই থাকে। গরমে তেমন একটা দেখা যায় না। এবারের মৌসুমে বেচাবিক্রি কেমন, জানতে চাইলে কোট বিক্রেতা রাকিব হোসেন বললেন, ‘বেচাবিক্রি অনেক ভালো, দামে কম হওয়ায় এখান থেকে অনেকে কোট কিনতে আসেন।’ চাকরিজীবীরাই এখান থেকে বেশি কোট কেনেন বলে তিনি জানান।
আরেক কোট ব্যবসায়ী জহির উদ্দিন বলেন, এখানে সাধারণত ৭০০ টাকা থেকে ১ হাজার টাকা দামের কোট বিক্রি করা হয়। তবে কিছু কিছু কোট আছে যার দাম এক হাজার ৫০০ টাকা। ছোট কটি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকায়। কোটের ধরন বদলে গেলে দামও এদিক-সেদিক হয় বলে তিনি জানালেন।
ঘুরে ঘুরে কোট দেখছিলেন রিয়াজ উদ্দিন। রাজধানী ঢাকায় একটি বেসরকারি ব্যাংকে কাজ করছেন। তিনি গ্রামের বাড়ি ভোলায় যাবেন। তাই পরিবারের জন্য কিছু শীতের কাপড়-চোপড় কিনতে এসেছেন। কিনেছেন তিনটি কোট। নিজের জন্য একটি, অন্যগুলো ভাইদের জন্য। তিনি বলেন, ‘এখানে কম দামে বেশ ভালো কোট পাওয়া যায়। একই মানের কোট দোকান থেকে কিনলে তিন হাজার টাকা দিয়ে কিনতে হয়।’
ক্রেতাদের মধ্যে চাকরিজীবী ছাড়াও আছে শিক্ষার্থী। ১৫ বছর ধরে এই ফুটপাতে কোট বিক্রি করেন মহসিন মিয়া। তিনি জানালেন, বিকালের পর থেকে বেচাবিক্রি বাড়তে থাকে। তবে সন্ধ্যার পরে ভিড় সবচেয়ে বেশি থাকে। কোটের সঙ্গে মানানসই টাইও আছেন এখানে। এগুলোর দাম ১০০ টাকা থেকে ১৫০ টাকা।
(ঢাকাটাইমস/১৯ ডিসেম্বর/এসএস/টিএমএইচ)