শেবাচিম হাসপাতালে চিকিৎসকের ওপর নার্সের হামলা
বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে চিকিৎসকের ওপর হামলা চালিয়েছে সিনিয়র স্টাফ নার্স ও তার স্বামী। বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় হাসপাতালের শিশু বহিঃবিভাগের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. ফাইজুল হক পনিরের ওপর এ হামলা চালনো হয়।
এ ঘটনায় একই হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স এলিজা বেগম ও তার স্বামী মো. শাহ আলম ভূঁইয়াকে দুপুর ১টায় আটক করে পুলিশ।
সিরিয়াল ভঙ্গ করে রোগী দেখতে অনিহা প্রকাশ করায় চিকিৎসকের ওপর এই হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে নিশ্চিত করেছেন হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. মো. আব্দুল কাদির।
অপরদিকে এই ঘটনার প্রতিবাদে তৎক্ষণিক বিক্ষোভ করেছে হাসপাতালের অনান্য চিকিৎসকরা। অভিযুক্ত নার্স ও তার স্বামী দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়েছে কর্তৃপক্ষকে।
হাসপাতালের মেডিকেল কর্মকর্তা ও বিএমএর কেন্দ্রীয় কমিটির সিসি মেম্বার ডা. শিরিন সাবিহা তন্নি বলেন, বেলা সাড়ে ১১টার পর হাসপাতালের বহিঃবিভাগের বিদ্যুৎ ছিল না। তবু শিশু বহিঃবিভাগের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. ফাইজুল হক পনির টর্চলাইট জ্বালিয়ে মেডিকেল কর্মকর্তাদের রেফার্ড করা রোগী দেখছিলেন। এমন সময় এই হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স এলিজা বেগম ও তার স্বামী মো. শাহ আলম ভূঁইয়া তাদের অসুস্থ শিশু সন্তানকে চিকিৎসককে দেখাবেন বলে সেখানে যান। তখন ফাইজুল হক পনির সিরিয়াল ভঙ্গ করে রোগী দেখানো যাবে না বলে জানান এবং পাশের মেডিকেল কর্মকর্তার কাছ থেকে রোগী রেফার্ড করে তার কাছে নিয়ে আসার অনুরোধ করেন। কিন্তু নার্সের সন্তান বলে সিরিয়াল ছাড়াই দেখার দাবি তোলেন এলিজার স্বামী শাহ আলম। এ নিয়ে চিকিৎসকে প্রথমে গালিগালাজ করে সে। এসময় পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে এক পর্যায় শাহ আলম ও তার স্ত্রী নার্স এলিজা বেগম ক্ষিপ্ত হয়ে চিকিৎসকের শার্টের কলার ধরে টানা হেঁচড়া ও মারধর করে।
হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. মো. আব্দুল কাদির জানান, বিষয়টি খুবই ন্যক্কারজনক। চিকিৎসকের ওপর হামলা চালিয়ে অপরাধ করেছে নার্স ও তার স্বামী। তাই ঘটনাস্থল থেকেই নার্সের স্বামী শাহ আলমকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে। পরে দুপুর ১টায় আমার কার্যালয় থেকে নার্স এলিজাকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, এ ব্যাপারে ওই নার্স ও তার স্বামীর বিরুদ্ধে কোতয়ালি থানায় একটি মামলার প্রস্তুতি হাতে নেয়া হয়েছে।
এদিকে ঘটনার পরপরই হাসপাতালের আন্তঃ ও বহিঃবিভাগের রেজিস্ট্রার, সহকারী রেজিস্ট্রার ও মেডিকেল অফিসার এবং ইনডোর মেডিকেল অফিসাররা বিক্ষোভ করে। হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে তারা পরিচালকের কাযালয়ে অবস্থান নেয়।
বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত তারা সেখানে অবস্থান নেয়ার পর হামলাকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার পরিচালকের আশ্বাসে নিজ নিজ কর্মস্থলে ফিরে যান তারা।
বরিশাল কোতয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আওলাদ হোসেন বলেন, পরিচালকের নির্দেশে নার্স ও তার স্বামীকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। পরিচালক মামলা করলে পুলিশ পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
(ঢাকাটাইমস/৩আগস্ট/টিটি/এলএ)