বাঁশবাগানে ফেলে দেয়া মাকে ফিরিয়ে নিলেন সন্তানেরা
অবশেষে বৃদ্ধা মা হুজলা বেগমকে (৮৬) বাড়িতে ফিরিয়ে নিলেন তার সন্তানেরা। দীর্ঘদিন চিকিৎসা শেষে বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে হাসপাতাল থেকে হুজলাকে বাড়িতে নিয়ে যান তার ছেলে বাবু শেখসহ অপর সন্তানেরা।
৮৬ বছরের বয়োবৃদ্ধ মা হুজলা বেগমকে ভরণ পোষণ দিতে পারবেন না, এমন অজুহাতে গত ২৬ সেপ্টেম্বর রাত ৮টার দিকে নড়াইলের কুচিয়াবাড়ি গ্রামে রাস্তার পাশে বাঁশবাগানে মাকে ফেলে দেন বাবু শেখ ও তার স্ত্রী। ঘটনাটি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়।
এ খবরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল নড়াইলের পুলিশ সুপারের মাধ্যমে বৃদ্ধা মায়ের চিকিৎসার দায়িত্ব নেন। হুজলা বেগমকে উদ্ধার করে গত ২৯ সেপ্টেম্বর লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য নড়াইল সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
দীর্ঘ এক মাস ৩দিন চিকিৎসা শেষে বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে হাসপাতাল থেকে হুজলাকে বাড়িতে নিয়ে যান তার সেই ছেলে বাবু শেখসহ অন্য সন্তানেরা। এ সময় জেলা প্রশাসক আনজুমান আরা, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিনসহ চিকিৎসক, সাংবাদিক, পুলিশ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এ ব্যাপারে হুজলা বেগমের ছেলে বাবু শেখ (৫৫) জানান, এ ঘটনায় তিনি ভীষণ লজ্জিত এবং ক্ষমাপ্রার্থী। কখনো আর এ ধরণের কাজ করবেন না। তিনিসহ তার পরিবারের সদস্যরা ভুল বুঝতে পেরেছেন। মায়ের সাথে এ ধরণের আচরণ তাদের ঠিক হয়নি। এখন থেকে মায়ের যথাযথ মর্যাদা ও ভরণ-পোষণ দেবেন তারা। পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন পিপিএম বলেন, আমি বৃদ্ধা মায়ের চিকিৎসাসেবাসহ সার্বিক বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী স্যারকে অবগত করেছি। হুজলা বেগম তার ছেলে বাবুর সঙ্গে থাকার ইচ্ছেই বারবার পোষণ করছিলেন। এ পরিস্থিতিতে আমরা তাকে বৃদ্ধাশ্রমে না পাঠিয়ে সন্তানদের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছি। ছেলে- মেয়েরাও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, মায়ের প্রতি আর কখনো অবহেলা করবেন না।
জেলা প্রশাসক আনজুমান আরা বলেন, হাসপাতালের বেডে শুয়ে হুজলা বেগম বারবার বাড়িতে ফেরার আকুতি করছিলেন। এ ক্ষেত্রে তার সন্তানেরাও মাকে যথাযথ দেখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন আমাদের কাছে। আর যদি তার সন্তানেরা প্রতিশ্রুতি রক্ষা না করেন, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ঢাকাটাইমস/০১নভেম্বর/প্রতিনিধি/ওআর