শরণার্থী, অভিবাসী- দেশত্যাগী মানুষের ভিন্ন নাম কেন?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ১৪ জানুয়ারি ২০১৯, ১০:১৬
অ- অ+

এক দেশ থেকে আরেক দেশে পাড়ি জমানো মানুষদের বিভিন্ন নামে ডাকা হয়। দেশ ত্যাগ করে ভিন্ন দেশে পাড়ি দেয়া মানুষকে অভিবাসী, শরণার্থী, আশ্রয়প্রার্থী ও প্রবাসী বিভিন্ন নামে ডাকা হয়। কিন্তু নিজ দেশ ছেড়ে অন্য দেশে পাড়ি দেয়া মানুষকে কীসের ভিত্তিতে ভিন্ন নামকরণ করা হয়?

সাসেক্স বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিবাসন বিষয়ক কেন্দ্রের শিক্ষক শার্লট টাইলরের এই বিষয়টি নিয়েই গবেষণার করছেন। সীমান্ত পাড়ি দেয়া মানুষকে মিডিয়া কেন এবং কী ভিত্তিতে ভিন্ন নামে অভিহিত করে থাকে - সেবিষয়ে লিখে থাকেন তিনি। ভিনদেশে পাড়ি দেয়া মানুষের ভিন্ন নামকরণের কারণ সম্পর্কে বিশ্লেষণ করেছেন তিনি।

অভিবাসী

অভিবাসী- এই শব্দটি আপনি প্রায়ই শুনে থাকবেন। অভিবাসী সাধারণত এমন কাউকে বলা হয়, যে উন্নত জীবনযাত্রা বা কর্মসংস্থানের খোঁজে স্থান পরিবর্তন করে থাকেন। অর্থাৎ, আপনি যদি বাংলাদেশের অধিবাসী হন এবং বছরে কয়েকমাস কাজের খোঁজে বা ব্যবসায়িক প্রয়োজনে ভারত বা নেপালে অবস্থান করেন, তাহলে আপনাকে অভিবাসী বলা যাবে।

শার্লট টাইলরের মতে, ‘অভিবাসী যথেষ্ট নিরাপদ একটি পরিভাষা। এমন নয় যে এটি ভবিষ্যতেও নিরাপদ হিসেবে বিবেচিত হবে, তবে বর্তমানে অভিবাসী বেশ নিরাপদ একটি পরিভাষা। ’

তবে রাজনৈতিক অভিবাসনের ক্ষেত্রে কিছুটা জটিলতা তৈরি হয়। কোনও ব্যক্তি যখন বিশেষ কোনও শাসনাবস্থা থেকে দূরে যেতে চায়, তখন এই পরিস্থিতির উদ্ভব হয়। একটি দেশে ক্রমাগত অভিবাসীদের আগমন হতে থাকলে যখন সেই সংক্রান্ত খবরে বা লেখায় ‘ঢল’, ‘জোয়ার’ বা ‘বন্যা’র মত শব্দ ব্যবহার করা হয়, তখন অভিবাসীদের সাথে অমানবিক আচরণ করা হয় বলে মনে করেন টাইলর। কারণ এরকম শব্দ ব্যবহারের মাধ্যমে অভিবাসীদের ‘পণ্য’ হিসেবে মূল্যায়ণ করা হয় বলে মনে করেন তিনি।

প্রবাসী

ভিনদেশে স্থায়ীভাবে যখন কেউ বসবাস করতে আসে তখন তাদের সাধারণত প্রবাসী বলা হয়। এই ধরনের মানুষ সাধারণত নিজের ইচ্ছাতেই নিজ দেশ ছেড়ে অন্য দেশে পাড়ি জমান। কর্মসংস্থান বা উন্নত জীবনের খোঁজের পাশাপাশি পারিবারিক বা ব্যক্তিগত কারণেও অনেকে স্থায়ীভাবে বিদেশে বসবাস করার সিদ্ধান্ত নেন।

শরণার্থী

শরণার্থী বলা হয় এমন কোনও ব্যক্তিকে যিনি যুদ্ধ, গণহত্যা বা প্রাকৃতিক দুর্যোগ এড়াতে দেশান্তরী হন। শার্লট টাইলর বলেন, ‘এটি সম্পূর্ণ অন্যরকম একটি পরিস্থিতি।যে মুহুর্তে আপনি কাউকে শরণার্থী হিসেবে স্বীকৃতি দেবেন, তখনই তার নির্দিষ্ট কিছু অধিকারকেও স্বীকৃতি দিতে হবে আপনার। তারা এমন পরিস্থিতির শিকার হয়েছে, যা তাদের নিজেদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে।’

আশ্রয়প্রার্থী

উপরের সবকটি প্রকারের মিশ্রণ হতে পারে একজন আশ্রয় প্রার্থী। তবে আশ্রয় প্রার্থীর বিশেষত্ব হলো, তিনি নিজ দেশ বাদে অন্য দেশে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সুরক্ষার জন্য আবেদন করেন। ব্যাপক ঝুঁকি নিয়ে সমুদ্রপথে যারা সীমান্ত পাড়ি দেয়ার চেষ্টা করেন তাদেরকেই কেবল আশ্রয় প্রার্থী হিসেবে সংজ্ঞায়িত করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন বলে জানান শার্লট টাইলর।

টাইলর বলেন, ‘আজকাল আশ্রয় প্রার্থীদের মধ্যেও আসল-নকল শ্রেণিবিন্যাসের একটি প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। ক্ষেত্রবিশেষে এটি যৌক্তিক হলেও তাদের আশ্রয় চাওয়ার বিষয়টি কিন্তু অস্বীকার করা যায় না।’

ঢাকা টাইমস/১৪জানুয়ারি/একে

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
লন্ডনে সিজদা দিয়ে ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের ওহি এনেছেন প্রধান উপদেষ্টা
'অসম্পূর্ণ সংস্কারে পুরনো বন্দোবস্তে নির্বাচন হলে বিপর্যয় অনিবার্য'
এনসিপির পাঁচ নেতার কক্সবাজার ভ্রমণে দলীয় শৃঙ্খলার ব্যত্যয় ঘটেনি, শোকজ প্রত্যাহার
পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকে ব্যবসা উন্নয়ন মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা