ধর্মভিত্তিক ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের প্রতিবাদে ঢাবিতে ইশার বিক্ষোভ
ডাকসু কর্তৃক ধর্মভিত্তিক ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ মিছিল এবং সমাবেশ করেছে ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন। বিক্ষোভে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেন।
বুধবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশ থেকে ‘মুক্তমনা শিক্ষার্থীবৃন্দ’র ব্যানারে এ মিছিল শুরু হয়। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে এসে শেষ হয়।
এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘নারায়ে তাকবির, আল্লাহু আকবার’, ‘মুক্তচিন্তার ঢাবিতে ইসলামি রাজনীতি চলবে, ডাকসু তুই বলার কে’, ‘ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই হবে একসাথে’ এমন নানান স্লোগান দেন।
এর আগে রাজু ভাস্কর্যের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে সংগঠনটি।
সমাবেশ থেকে ধর্মভিত্তিক ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত বাতিলসহ চার দফা দাবি উত্থাপন করে সংগঠনটি।
দাবিগুলো হলো: ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধের প্রস্তাব বাতিল করা, প্রকাশিত সকল দুর্নীতির তদন্ত পরবর্তী জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা, রাজনৈতিক বিবেচনায় সিট প্রদান বন্ধ করে প্রশাসনের মাধ্যমে প্রথম বর্ষ থেকে বৈধ সিটের ব্যবস্থা করা ইত্যাদি।
সমাবেশে আইন বর্ষের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ শুভ্র আক্তার বলেন, ডাকসু সম্পূর্ণ অগণতান্ত্রিক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের চেতনা পরিপন্থী সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যেই মুহূর্তে ছাত্ররা ছাত্রলীগের অব্যাহত নির্যাতন-নিপীড়ন এবং দুর্নীতির প্রতিবাদে তাদের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে লিপ্ত সেই মুহূর্তে ছাত্রদের দৃষ্টিকে অন্যদিকে ফিরিয়ে দেয়ার জন্যই এ অবৈধ তৎপরতা।
ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলনের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘ডাকসুর কাজ ছিল ঢাবি শিক্ষার্থীদের সমস্যা সমাধান করা। তাদের ইশতেহার বাস্তবায়ন করা। কিন্তু তারা সেগুলো না করে ধর্মভিত্তিক ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করল।’
তিনি ছাত্রলীগকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনারা বলেন প্রগতিশীল। কিন্তু কাজে আপনারা প্রতিক্রিয়াশীল। একটি আদর্শকে নিষিদ্ধ করলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কোনোদিন গণতান্ত্রিক ক্যাম্পাস থাকবে না। প্রগতিশীল ক্যাম্পাস থাকবে না। মুক্তচিন্তার অভয়ারণ্য থাকবে না।
এই নেতা বলেন, ‘প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠন যদি হয়ে থাকেন, তাহলে কোনো সংগঠনকে নিষেধাজ্ঞা নয় বরং আদর্শিকভাবে প্রতিহত করেন। যদি আদর্শিকভাবে প্রতিহত করতে ব্যর্থ হন তাহলে ডাকসু থেকে পদত্যাগ করুন।’
‘যেখানে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নিয়ে রাজনীতি করা যায়, মার্ক্স-লেনিনের আদর্শ নিয়ে রাজনীতি করা যায় সেখানে অবশ্যই মহামানব মুহাম্মদ (স.) এর আদর্শ নিয়ে রাজনীতি করা যাবে।’
সমাবেশে ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি শফিকুল ইসলামসহ আরো অনেকে বক্তব্য রাখেন।
গত বৃহস্পতিবার ডাকসুর কার্যনির্বাহী সভায় ক্যাম্পাসে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এ সিদ্ধান্তকে এখতিয়ার বহির্ভূত, অগণতান্ত্রিক এবং অসাংবিধানিক আখ্যা দিয়ে তারা এ বিক্ষোভের ডাক দেন।
ঢাকাটাইমস/০২অক্টোবর/ইএস