বইমেলায় পদচারণ বাড়ছে, অপেক্ষা নতুন বইয়ের

তানিয়া আক্তার, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০০:০১| আপডেট : ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০৯:৪৪
অ- অ+
বই মেলা

বই অনুরাগীর পদচারণ বাড়ছে বাংলা একাডেমির একুশে বইমেলায়। বেলা তিনটায় বইমেলার দ্বার খোলার পর থেকে ভিড় জমছে পছন্দের স্টলগুলোতে। তবে বইমেলার দ্বিতীয় দিনে আজ সোমবার বই কেনার চেয়ে পাতা উল্টেই পার করেছেন অনেকে।

আজ বইমেলার লোকজনের বেশ সমাগম হলেও বই বিক্রি ছিল খুব কম। অবশ্য মেলার প্রথম ১০ দিন বেচাকেনা একটু কম হয় বলে জানালেন প্রকাশকরা। কারণ এই সময়ে প্রকাশকরা সব নতুন বই স্টলে তুলতে পারেন না। তারা বলছেন মেলার মূল বিকিকিনি শুরু হয় ১০ তারিখের পর।

উৎস প্রকাশনের স্বত্বাধিকারী মোস্তফা সেলিম বলেন, এখনো ছাপার কাজ শেষ করে উঠতে পারেননি প্রকাশকরা। কিছু নতুন বই এসেছে। এখন প্রতিদিনই নতুন বাই আসবে। তাই এখন অনেক পাঠক পাতা নেড়েচেড়ে যাচ্ছেন মেলায়। সামনের দিনে বেচাকেনা বাড়বে। অপেক্ষায় আছি আর কয়েকটা দিনের।’ এবারের মেলাকে বেশ গোছালো বলে উল্লেখ করেন এই প্রকাশক।

বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ঘুরে দেখা গেছে,তখনো কিছূ স্টলের সাজসজ্জার কাজ চলছে। কোথাও তাকে তোলা হচ্ছে বই। তবে বেশির ভাগ স্টল সেজেগুজে থরে থরে সাজানো বইয়ে। বইপ্রেমীর আনাগোনা আছে সেসব এলাকায়। সন্ধ্যে হতেই তরুণ-তরুণীদের পদচারণে মুখর হয়ে ওঠে প্রাণে প্রাঙ্গণ। প্রিয় লেখকের এর অটোগ্রাফ নিয়ে বই কিনছেন বইপ্রেমীরা। আবার পছন্দের বইয়ের খোঁজে আসা বইপ্রেমীরা তা না পেয়ে ঘোরাঘুরি করে ফিরে গেছেন।

সন্ধ্যায় বইমেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে কথা হয় বনানীর মাতলুবা মিশুর সঙ্গে। বন্ধুর নতুন বই বেরোবে। সেই অপেক্ষায় আড্ডায় মেতেছেন তারা।

শিহাব মহিউদ্দিন ঘুরে ঘুরে বই দেখছেন। তিনি ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘আপাতত ক্যাটালগ সংগ্রহ করা ছাড়া কোনো বই কেনা হচ্ছে না। পরে আবার আসব, তখন কিনে নেব।'

এবারের মেলা নিয়ে মুগ্ধতা প্রকাশ করলেন সুজন হাওলাদার। গত পাঁচ বছর ধরে প্রতিবারই মেলায় আসছেন তিনি। বলেন, ‘এত বিস্তৃত জায়গা নিয়ে এবার মেলা হয়েছে যে দেখতেই ভালো লাগছে। বিগত বছরগুলোর তুলনায় এবার নিশ্চয়ই মেলা বেমি জমবে। সুবিন্যাস্ত সুন্দর পরিবেশ তোলা হয়েছে এবারের প্রতিটি স্টল।

নতুন বইয়ের ঘ্রাণ নিচ্ছেন এক কিশোর। অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থী ফারদিন ইসলাম ঢাকা টাইমসকে জানায়, নতুন বইয়ের ঘ্রাণ খুব ভালো লাগে। বাজেট খুবই কম তবুও চেষ্টা করছে এর মধ্যে কিছু বই কেনার।'

লেখক বলছি মঞ্চ

আজ বইমেলার দ্বিতীয় দিনে লেখক বলছি মঞ্চে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন রাজু আহমেদ মামুন, গিরীশ গৈরিক, কৌস্তুভ শ্রী, হামিম কামাল।

নতুন বই

বাংলা একাডেমি প্রকাশ করেছে বঙ্গবন্ধুর লেখা আমার দেখা নয়াচীন’, অন্যপ্রকাশ থেকে আনা ইসলামের ‘নভেরা: বিভুঁইয়ে স্বভূ‚মে’, পাঞ্জেরী থেকে সেলিনা হোসেনের ‘আওয়ার বিলাভড শেখ মুজিব’, হক ফারুক আহমেদের গল্পগ্রন্থ ‘শহরে দেবশিশু’, বেঙ্গল পাবলিকেশন্স থেকে সৈয়দ শামসুল ইসলামের নুন-পূর্ণিমা, আদর্শ থেকে আয়মান সাদিক ও সাকিব বীন রশীদের ‘লোকে কি বলে?’, আগামী থেকে ড. সালিম সাবরীনের ‘ভাষা সাম্রাজ্যবাদ ও মানবাধিকার’, একই প্রকাশনা সংস্থা থেকে ড. মোহাম্মদ আমীনের ‘এক নজরে বঙ্গবন্ধু’, অনিন্দ্য থেকে মোশতাক আহমেদের ‘জোছনার ছায়া’, অনন্যা থেকে মহাদেব সাহার ‘আত্মস্মৃতি ১৯৭৫: সেই অন্ধকার সেই বিভীষিকা’, পাঞ্জেরী থেকে ধ্রুব এষের ‘পরেশের বউ’ অন্যতম।

মূলমঞ্চের আয়োজন

বিকেল চারটায় গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রচিত ‘আমার দেখা নয়াচীন’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান।

আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন ড. ফকরুল আলম এবং কবি তারিক সুজাত। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

স্বাগত ভাষণে হাবীবুল্লাহ সিরাজী বলেন, বঙ্গবন্ধু রয়েছেন আমাদের চেতনার অংশ জুড়ে। তার নতুন বই আমার দেখা নয়াচীন-এর পাতায় পাতায় আন্তর্জাতিকতাবাদী এক মহান ব্যক্তিত্বের উপস্থিতি যেমন টের পাওয়া যায় তেমনি বাঙালি জাতিরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় তার সংকল্প পরিস্ফুট হয়।

সভাপতির বক্তব্যে আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামী জীবনের এক অনুপম আলেখ্য ধরা রইল আমার দেখা নয়াচীন বইয়ে। তরুণ শেখ মুজিব চীন দেশ ভ্রমণে তার যে অভিজ্ঞতা ও মূল্যায়ন তুলে ধরেছেন যেন তারই আলোকে তিনি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ সম্পন্ন করেছেন এবং শোষণমুক্ত স্বাধীন স্বদেশ গড়ে তুলতে চেয়েছেন। মূলমঞ্চে কবিকণ্ঠে কবিতা আবৃত্তি করেন কবি মোহাম্মদ সাদিক, খালেদ হোসাইন ও নাসির আহমেদ। আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী সৈয়দ হাসান ইমাম, আসাদুজ্জামান নূর এবং লায়লা আফরোজ। সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী মহিউজ্জামান চৌধুরী, তিমির নন্দী, শ্যামা সরকার এবং কে. এম. আব্দুল্লাহ আল মূর্তজা মুহিন।

মঙ্গলবারের আয়োজন

মঙ্গলবার গ্রন্থমেলার তৃতীয় দিনে বিকেল ৪টায় মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে ‘অধ্যাপক হারুন-অর-রশিদ রচিত বঙ্গবন্ধুর দ্বিতীয় বিপ্লব: কী ও কেন’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন অধ্যাপক গোবিন্দ চক্রবর্ত্তী। আলোচনায় অংশ নেবেন অধ্যাপক এম অহিদুজ্জামান এবং সাংবাদিক মোজাম্মেল বাবু। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন কবি কামাল চৌধুরী। সন্ধ্যায় রয়েছে কবিকণ্ঠে কবিতাপাঠ, আবৃত্তি এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

(ঢাকাটাইমস/৪ফেব্রুয়ারি/মোআ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
খালেদা জিয়ার সঙ্গে কর্নেল অলির সাক্ষাৎ 
বাড্ডায় গ্যাস লিকেজ থেকে বিস্ফোরণ: চিকিৎসাধীন শিশুর মৃত্যু, চারজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক
টাইব্রেকারে সাফ ফাইনালে স্বপ্নভঙ্গ বাংলাদেশের, চ্যাম্পিয়ন ভারত
পদোন্নতি পেয়ে অতিরিক্ত আইজিপি হলেন ১২ পুলিশ কর্মকর্তা
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা