বাঙালি বিজ্ঞানীর দাবি

করোনাভাইরাস ঠেকাতে পারে ত্রিফলা ও ভেষজ!

ঢাকাটাইমস ডেস্ক
  প্রকাশিত : ০২ এপ্রিল ২০২০, ০০:৩৭| আপডেট : ০২ এপ্রিল ২০২০, ০০:৪৪
অ- অ+

মানুষের বিভিন্ন রোগশোকে ভেষজ ফল-ফুল, গাছগাছড়া কার্যকর হতে দেখা গেছে সেই প্রাচীনকাল থেকে। এখনো ভারতীয় উপমহাদেশ, চীনসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অনেক মানুষ ভেষজ চিকিৎসায় আস্থা রাখেন। বর্তমানে বিশ্বে প্রাণসংহরণের তাণ্ডব চালানো করোনাভাইরাস ঠেকাবে আমলকি, হরীতকী, বহেড়া – এই ত্রিফলাসহ ভারতীয় ভেষজ উদ্ভিদ!

ঠিকই পড়েছেন। এমন বিস্ময়কর দাবিই করেছেন ভারতীয় বাঙালি গবেষক অধ্যাপক রাজাগোপাল চট্টোপাধ্যায়। এই ক্যামিস্ট এর আগে দীর্ঘ গবেষণার পর বলেছিলেন আমলকি, হরীতকী, বহেড়া, খয়ের, বিলিতি আমড়া, কুলত্থ কলাই এবং অনন্তমূল- এগুলোর ভেষজ প্রয়োগ ক্যানসার নিরাময়ে খুবই ফলপ্রসূ।

বোস ইনস্টিটিউটের বায়োকেমিস্ট্রি বিভাগে দীর্ঘ ২৪ বছর কাজ করা রাজাগোপালের বিশ্বাস, স্বয়ং স্রষ্টা শ্রেষ্ঠ বায়োকেমিস্ট। তাই তার দেওয়া কোনো উপাদানকেই অবহেলা করা যায় না।

খয়ের, আমলকি, বহেড়া, হরীতকী, বিলিতি আমড়ার অ্যান্টি ক্যানসার বৈশিষ্ট্য প্রমাণিত ও খ্যাত। ২০১৬ সালে রাজাগোপাল ও তার ছাত্রী ইন্দ্রাণী করের প্রকাশিত গবেষণাপত্রে এমন একটা ক্ষমতার কথা প্রথম প্রমাণিত হয়েছিল।

আমলকি, হরীতকী, বহেড়া, এই তিনটি ফল বহু দিন ধরেই প্রচলিত ‘ত্রিফলা’ নামে। শারীরিক বহু সমস্যাতে ত্রিফলার ব্যবহার সুবিদিত। তবে খয়ের হিসেবে পানের দোকানে আমরা সচরাচর যা পাই, সেটা তরলীকৃত। খাঁটি খয়ের দুর্মূল্য।

এসব উপাদান দিয়ে তৈরি ওষুধ যে ক্যানসারে কার্যকরী, তার প্রমাণ পেয়েছেন রাজাগোপাল চট্টোপাধ্যায় নিজে। তার মা ক্যানসার আক্রান্ত ছিলেন। রাজাগোপালের দাবি, তার বন্ধুর তৈরি ওষুধে উপকৃত হয়েছিলেন তার মা। কিন্তু নানা জটিলতায় এই ওষুধের কোনো পেটেন্ট নেওয়া হয়নি। তার প্রয়োগ সীমাবদ্ধ আছে গবেষকদের পরিচিত বৃত্তের মধ্যেই।

ফরাসি ভাষায় ‘নুভেল’ শব্দের অর্থ নতুন। ‘করোনা’ শব্দের অর্থ সূর্যের ছটা। অর্থাৎ, সূর্যের নতুন ছটা। অনুবীক্ষণের নিচে জীবাণুর রূপ দেখে এই নামকরণই করেছেন বিজ্ঞানীরা।

তবে অপ্রতিরোধ্য ও বিস্ময়কর করোনাভাইরাসকে কীভাবে ঠেকাতে পারবে ত্রিফলা ও ভারতীয় ভেষজ? বায়োকেমিস্ট রাজাগোপাল চট্টোপাধ্যায়ের ভাষ্য, যেকোনো জীবাণু তার জিনগত বৈশিষ্ট্য বহন করে ডিএনএ অথবা আরএনএ রূপে। করোনা হলো আরএনএ ভাইরাস। ফলে এর মিউটেশনের হার অত্যন্ত বেশি।

সেক্ষেত্রে করোনার বিস্তার কমাতে রোধ করতে হবে এর আরএনএ সিন্থেথিস। এই কাজে এসব উদ্ভিদের ভেষজ উপাদান কার্যকর হবে বলে রাজাগোপালের ধারণা।

তিনি বলেন, ক্যানসারের ক্ষেত্রে যেমন ডিএনএর উপাদানগুলো ভেষজ নির্যাসগুলোর প্রভাবে ধ্বংস হয়, করোনার ক্ষেত্রেও আরএনএর নির্মাণে যে উপাদানগুলো জরুরি, যেমন নিউক্লিওসাইড ও নিউক্লিওটাইডগুলি, ফেনটন বিক্রিয়ার প্রভাবে ধ্বংসপ্রাপ্ত হবে। কারণ ডিএনএ ও আরএনএর উপাদানগুলো রাসায়নিক দিক থেকে প্রায় সমতুল্য। কাজেই নির্যাসগুলোর প্রভাবে আরএনএ তৈরি স্তিমিত হবে।

গবেষণাগার থেকে করোনাভাইরাসের ওষুধ তৈরি এক দীর্ঘ পথ। তার আগে করোনার তাণ্ডব ঠেকাতে এই ভেষজ উপাদানগুলো বিশেষ উপকারী বলে মনে করেন রাজাগোপাল।

তাই তার পরামর্শ, রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে নিয়মিত আমলকি, হরীতকী, বহেরা, খয়ের, বিলিতি আমড়া খাওয়া দরকার। বিলিতি আমড়া পাওয়া না গেলে এর বদলে খাওয়া যেতে পারে বেদানা বা ডালিম। এতেও পলিফিনলিক অণুর প্রাচুর্য ও অ্যান্টি ক্যানসার গুণ রয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/২এপ্রিল/মোআ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় আরও ৭৮ ফিলিস্তিনি নিহত
ঢাকাসহ দেশের ৭ জেলায় ঝড় ও বজ্রবৃষ্টির পূর্বাভাস
আজ পবিত্র আশুরা শোক ও ত্যাগের মহিমাময় দিন
‘ধামাকা শপিং’-এর চেয়ারম্যান এম আলীকে ধরে থানায় দিল জনতা
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা