চিকিৎসকদের টেলি পরামর্শ ভূমিকা রাখছে লকডাউনে
নভেল করোনাভাইরাসের মহামারীর মধ্যে দেশের চিকিৎসকরা সাধ্যমতো টেলিফোনে চিকিৎসা পরামর্শ দিচ্ছেন। একারণে মানুষ ঘরে বসেই বিভিন্ন রোগ ও সমস্যার বিষয়ে সহজেই পরামর্শ নিতে পারছেন। এর ফলে হাসপাতালগুলোতে সাধারণ রোগীদের ভিড়ও কম হচ্ছে। চিকিৎসকরা দয়িত্ববোধের সঙ্গে এভাবে সেবা না দিলে হাসপাতালে নানা সমস্যা নিয়ে রোগীদের ভিড় উপচে পড়ত।
ঢাকাটাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ঢাকা ডেন্টাল কলেজের অধ্যক্ষ ও বাংলাদেশ ডেন্টাল সোসাইটির মহাসচিব অধ্যাপক ডা. হুমায়ুন কবীর বুলবুল এসব কথা বলেন।
বৈশ্বিক মহামারী নভেল করোনাভাইরাস তথা কোভিড-১৯ এর সংক্রমণ ঠেকাতে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে বলা হচ্ছে। এই অবস্থায় অধিকাংশ চিকিৎসকের প্রাইভেট প্রাকটিসও বন্ধ রয়েছে। কিন্তু করোনার বাইরেও মানুষকে নানা রকম রোগের ভোগান্তি নিয়ে হাসপাতাল কিংবা চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার অবস্থা সৃষ্টি হয়।
করেনার এই দুর্যোগে ডেন্টালসহ চিকিৎসকরা টেলিফোনে মানুষকে ঘরে বসে পরামর্শ পাওয়ার সুযোগ দিচ্ছেন উল্লেখ করে অধ্যাপক হুমায়ুন কবীর বুলবুল বলেন, ‘লকডাউনের কারণে চিকিৎসকদের প্রাইভেট প্রাকটিস বন্ধ। কিন্তু চিকিৎসকদের পরামর্শ দেয়া থেমে নেই। সংগঠনগতভাবে হোক কিংবা গ্রুপ করে এমনকি ব্যক্তিগতভাবেও চিকিৎসকরা টেলিসেবা দিয়ে যাচ্ছেন।’
‘ডেন্টালসহ মানুষের নানা রোগের সমস্যা তো রয়েছে, তাদের চিকিৎসা দরকার। ফলে আমাদের চিকিৎসকরা টেলিপরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। দায়িত্ববোধের জায়গা থেকেই তারা এই কাজ করে যাচ্ছেন। এতে করে হাসপাতালে সাধারণ রোগীদের ভিড় কিন্তু কম হচ্ছে।’
করোনা চিকিৎসায় কোভিড হাসপাতালগুলোতে নজর দিতে গিয়ে নন-কোভিড হাসপাতালগুলোতে কোনো সমস্যা যাতে তৈরি না হয় সেদিকেও নজর রাখা দরকার বলে মনে করছেন বাংলাদেশ ডেন্টাল সোসাইটির মহাসচিব ডা. হুমায়ুন কবীর বুলবুল।
তিনি বলেন, ‘কারণ এসব হাসপাতালে অন্য রোগীদের চিকিৎসা কিন্তু বন্ধ নেই। আর এখন পর্যন্ত যেসব চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন তাদের অধিকাংশই নন-কোভিড হাসপাতালে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। এজন্য এই মুহুর্তে খুবই জরুরি হলো কোভিডের প্রকোপে আমরা যেন নন-কোভিড হাসপাতালগুলোতে গুরুত্ব কমিয়ে না দিই।’
অধ্যাপক বুলবুল বলেন, ‘করোনাভাইরাস নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইনে চিকিৎসাবিদ্যার শাখাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ বলা হয়েছে ডেন্টিস্ট্রি। যে কারণে ডেন্টাল চেম্বারে সংক্রমণ ঝুঁকিও সবচেয়ে বেশি। ফলে ডেন্টাল চিকিৎসকদের প্রাইভেট প্রাকটিস কার্যত বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ডেন্টাল সার্জনরা অস্বস্তিকর অসুবিধায় নিপতিত হয়েছেন। সেদিকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজর দেয়া দরকার।’
‘কারন মানুষের বহুধরনের জটিল ডেন্টাল সমস্যা রয়েছে। পবিত্র রমজান মাসের সুবাদে এর তীব্রতা আপাতত অনুভুত না হলেও, রমজান পরবর্তী জনগনের স্বাভাবিক চিকিৎসাসেবা জরুরী হয়ে পড়বে।’
তবে আপাতত ডেন্টাল চিকিৎসকরা পেশাগত দায়িত্ববোধের জায়গা থেকেই প্যানডেমিক সিচুয়েশনে ক্লান্তিহীনভাবে টেলিপরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন বলে জানান ঢাকা ডেন্টাল কলেজের অধ্যক্ষ হুমায়ুন কবীর বুলবুল।
(ঢাকাটাইমস/০৯মে/ডিএম)