দুদকের মামলায় পাপিয়া দম্পতির সাড়ে তিন বছর কারাদণ্ড

নরসিংদী জেলা যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত নেত্রী শামীমা নূর পাপিয়া ও তার স্বামী মফিজুর রহমানের অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় রায়ে তিন বছর ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। এছাড়াও তাদের প্রত্যেককে পাঁচ লাখ টাকা করে জরিমানা করেন আদালত।
বৃহস্পতিবার বিকালে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩-এর বিচারক মুহা. আবু তাহেরের আদালত এই রায় ঘোষণা করেন।
শুনানির শুরুতে আসামি পক্ষের আইনজীবী সাখাওয়াত উল্লাহ ভুঁইয়া বলেন, আমি ওয়েস্টিন হোটেলে ৪০ লাখ টাকার কেনাকাটা করেছি এর কোন রিসিট কিংবা কোন সিসি ফুটেজ দেখাতে পারেননি। আমি প্রতিমাসে ৫০ হাজার টাকায় বাসা ভাড়া নিয়েছি তার কোন চুক্তি অথবা ভাড়ার রশিদ দেখাতে পারেনি। আমার বিরুদ্ধে এক কোটি টাকার ব্যবসায় বিনিয়োগের অভিযোগ আনা হয়েছে তার কোন প্রমাণ দেখাতে পারেনি। ২২ লাখ টাকা দামের একটি গাড়ি জব্দ করা হয়েছে তার মালিক আমি না। এর দায়ও আমার না। পরে আদালতের বিচারক আসামি পক্ষের আইনজীবীকে তদন্তকারী কর্মকর্তার জবানবন্দি আদালতে পড়তে বলেন।
২০২১ সালের ৩০ নভেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। ২০২০ সালের ৪ আগস্ট দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১-এর উপ-পরিচালক শাহীন আরা মমতাজ বাদী হয়ে তাদের দুজনের নামে মামলাটি করেন। ‘দুদক আইন, ২০০৪’-এর ২৭(১) ধারায় মামলাটি করা হয়।
তদন্ত শেষে দুদক প্রধান কার্যালয়ের উপ-পরিচালক শাহীন আরা মমতাজ প্রতিবেদন জমা দেন। এরপর গত ১১ ফেব্রুয়ারি পাপিয়া দম্পতির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র অনুমোদন করেন দুদক।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা গেছে, ২০১৯ সালের ১২ অক্টোবর থেকে ২০২০ সালের ২২ ফ্রেব্রুয়ারি পর্যন্ত ওয়েস্টিন হোটেলের ২৫টি রুমে অবস্থান করে রুম-নাইট, রেস্তোরাঁর খাবার, মদ, স্পা, লন্ড্রি, মিনি বার ফুড, মিনি বার বাবদ মোট তিন কোটি ২৩ লাখ ২৪ হাজার ৭৬১ টাকার বিল ক্যাশে পরিশোধ করেন পাপিয়া। ওয়েস্টিন হোটেলে থাকা অবস্থায় প্রায় ৪০ লাখ টাকার শপিং করেন। যার কোনো বৈধ উৎস দেখাতে পারেননি। দুদকের অনুসন্ধানে সর্বমোট ছয় কোটি ২৪ লাখ ১৮ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদে তথ্যের কথা উল্লেখ করা হয়।
এছাড়া ২০১৫ সালের এপ্রিল থেকে ২০২০ সালের এপ্রিল পর্যন্ত পাঁচ বছরে বাসাভাড়া বাবদ ৩০ লাখ টাকা, গাড়ির ব্যবসায় বিনিয়োগকৃত এক কোটি টাকা এবং নরসিংদীতে কেএমসি কার ওয়াশ সলিউশনে বিনিয়োগকৃত ২০ লাখ টাকা, বিভিন্ন ব্যাংকে তার এবং তার স্বামীর নামে জমাকৃত ৩০ লাখ ৫২ হাজার ৯৫৮ টাকারও কোনো বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি অনুসন্ধানে।
অন্যদিকে র্যাবের অভিযানে তার বাসা থেকে ৫৮ লাখ ৪১ হাজার টাকা এবং সুমনের নামে হোন্ডা সিভিএ ২০১২ মডেলের ২২ লাখ টাকার গাড়ি উদ্ধার করা হয়। এরও কোনো বৈধ উৎস মেলেনি দুদকের অনুসন্ধানে।
(ঢাকাটাইমস/১৪আগস্ট/এলকে)

মন্তব্য করুন