৩১ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলার তদন্ত পিবিআইকে দিলেন আদালত

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ১৩ আগস্ট ২০২৫, ১৮:৩০
অ- অ+

জুলাই গণঅভ্যুত্থান দমনের অপচেষ্টায় শেখ হাসিনাকে সহযোগিতার অভিযোগে আওয়ামীপন্থি ৩১ জন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে আদালতে করা একটি মামলার তদন্তের দায়িত্ব পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) দিয়েছেন আদালত। জুলাই আন্দোলনে যাত্রাবাড়ী এলাকায় পুলিশের গুলিতে শহিদ আদিলের বাবা ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে মোমলাটি করেন।

মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ১২০খ, ১৪৩, ২০৩, ৪৩১, ৪৪০, ৫০০, ৫০১, ৫০২, ৫০৪, ৫০৫, ৫০৫(ক) ও ৫০৬ ধারায় অভিযোগ আনা হয়।

শহীদ মোহাম্মদ আদিল দশম শ্রেণির ছাত্র ছিল। সে গত বছরের ১৯ জুলাই সাইনবোর্ড যাত্রাবাড়ী এলাকার দিকে পুলিশের গুলিতে শাহাদতবরণ করে।

মামলার আসামিদের মধ্যে রয়েছেন- শেখ হাসিনার সাবেক তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, জাতীয় প্রেসক্লাবের তৎকালীন সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন, বিএফইউজের সাবেক সভাপতি ওমর ফারুক, একুশে টেলিভিশনের সাবেক প্রধান নির্বাহী মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, জাতীয় প্রেসক্লাবের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, কালবেলার সাবেক সম্পাদক আবেদ খান, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রেস সচিব নাইমুল ইসলাম খান, এডিটরস গিল্ডের সাবেক সভাপতি ও একাত্তর টিভির সাবেক সিইও মোজাম্মল বাবু।

আরও আসামি হলেন যুগান্তরের সাবেক সম্পাদক সাইফুল আলম, গ্লোবাল টিভির নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ ইসতিয়াক রেজা, বাংলাদেশ প্রতিদিনের সাবেক সম্পাদক নঈম নিজাম, ডিবিসি নিউজের এডিটর ইন চিফ ও সিইও মঞ্জুরুল ইসলাম, ডিবিসি নিউজের সম্পাদক জায়েদুল আহসান পিন্টু, আমাদের সময়ের নির্বাহী সম্পাদক মাঈনুল আলম, বাংলাদেশ জার্নালের সম্পাদক শাহজাহান, ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভির হেড অব নিউজ আশিষ সৈকত, বাংলা ট্রিবিউনের সম্পাদক জুলফিকার রাসেল, একাত্তর টিভির হেড অব নিউজ শাকিল আহমেদ, কিংস নিউজের হেড অব নিউজ নাজমুল হক সৈকত, আর টিভির হেড অব নিউজ মামুনুর রহমান খান।

এ ছাড়া বিএফইউজের সাবেক মহাসচিব (আওয়ামীপন্থি) আব্দুল জলিল ভূঁইয়া, সাংবাদিক নেতা আজিজুল ইসলাম ভূঁইয়া, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের একাংশের তৎকালীন (ডিইউজে) সভাপতি সোহেল হায়দার চৌধুরী, সম্পাদক ফোরামের তৎকালীন আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম রতন, ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটির তৎকালীন সভাপতি সৈয়দ শুকুর আলী শুভ, ডিইউজের (আওয়ামীপন্থি) তৎকালীন সিনিয়র সহ-সভাপতি নজরুল ইসলাম মিঠু, বঙ্গবন্ধু সাংবাদিক পরিষদের তৎকালীন সদস্যসচিব মোহাম্মদ আবু সাঈদ, ডিইউজের (আওয়ামীপন্থি) তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসেন, বিএফইউজের তৎকালীন মহাসচিব ও নাগরিক টিভির হেড অব নিউজ দীপ আজাদ এই আমলার আসামি ।

মামলায় উল্লেখ করা হয়, গত ২০০৯ সাল থেকে ভুয়া/প্রহসনমূলক ও পূর্বনির্ধারিত ফলাফলের নির্বাচনের মাধ্যমে অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার অনুগত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ গত প্রায় ১৬ বছর অগণতান্ত্রিক ও অবৈধ শাসনের মাধ্যমে দেশকে একটি স্বৈরাচারের লীলাভূমিতে পরিণত করেন। এই স্বৈরাচারী ও ফ্যাসিস্ট শাসনের বিরুদ্ধে জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিবাদ বিক্ষোভকে বারবার নিষ্ঠুর ও পৈশাচিক কায়দায় দমন করেন।

তার এই স্বৈরাচারী ব্যবস্থার চালিয়ে যাওয়ার অন্যতম কারিগর ও চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করে কিছু মিডিয়া মোঘল ও ধনিক এলিট শ্রেণি। যারা তাদের বক্তব্য বিবৃতি, সংবাদ ও অর্থের মাধ্যমে এই অপশাসনকে চালিয়ে নেয় ও দীর্ঘায়িত করে এবং সরকারকে জনগণের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে প্ররোচনা দেয়।

আসামিরা তাদের অবৈধ পন্থায় অর্থ উপার্জন ও পুকুর চুরির মাধ্যমে অর্জিত বিত্তবৈভব টিকিয়ে রাখার জন্য অবৈধ সরকারকে অন্যায় পথে ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করার প্ররোচনা দেয়। সরকারের অবৈধ ক্ষমতাকে ব্যবহার করে তারাও বিভিন্ন স্বার্থ হাসিল করে জনগণের অর্থ লুটপাটে নিয়োজিত। তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি সংক্রান্ত বিভিন্ন অভিযোগের অনুসন্ধান চলছে।

মামলার বিবরণীতে আরও বলা হয়, আসামিরা গত বছরের ২৪ জুলাই পালিয়ে যাওয়া অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে এডিটরস গিল্ডের নামে গণভবনে একটি বৈঠকের আয়োজন করে। সেখানে তারা দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আরও গণহত্যা চালাতে সর্বাত্মক সমর্থন প্রদান করে এবং তারা শেখ হাসিনার সঙ্গে আছেন ও প্রয়োজনে যেকোনো কিছু করতে প্রস্তুত বলে জানান।

তাছাড়া আসামিরা গত বছরের ২৭ জুলাই দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে একটি সমাবেশের আয়োজন করে যেখানে ছাত্র-জনতার ফ্যাসিস্টবিরোধী ন্যায়সঙ্গত আন্দোলন ও মহান আত্মত্যাগকে জঙ্গি, সন্ত্রাসী, নাশকতা আখ্যা দিয়ে সরকারি পেটোয়া বাহিনী কর্তৃক সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের দায় জামায়াত-শিবিরের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার অপপ্রয়াস চালানো হয়।

২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি একতরফা ও সম্পূর্ণ ভুয়া নির্বাচনের মাধ্যমে আবার ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়েছিলেন শেখ হাসিনা। জুলাই মাসে শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলনে সরকারের বলপ্রয়োগ ও মারণাস্ত্র ব্যবহারের ঘটনায় সেটি তার পদত্যাগের আন্দোলনে রূপািন্তরিত হয়।

সরকারের হত্যা, গুম, খুন, দুর্নীতি, বৈষম্য ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে সব শ্রেণি-পেশার ছাত্র-জনতা ঐক্যবদ্ধভাবে জীবন বাজি রেখে পুলিশ ও আইন প্রয়োগকারী সংস্কার গুলির মুখে রাস্তায় নেমে আসে। ৫ আগস্ট সফল গণঅভ্যুত্থানের মুখে দেশ ছেড়ে পালান শেখ হাসিনা।

(ঢাকাটাইমস/১৩আগস্ট/মোআ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
নাঙ্গলকোটে ১৫ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হলো ইউনিয়ন বিএনপির সম্মেলনে!
এবি ব্যাংক পিএলসি. এবং ফিল্পস লিমিটেড-এর মধ্যে স্ট্র্যাটেজিক পার্টনারশিপ চুক্তি স্বাক্ষর
মন্ত্রী-এমপি-বিচারপতি ও পেশাজীবীদের ফ্ল্যাট-প্লটের কোটা বাতিল
শেখ হাসিনাকে আশ্রয়: ফেরত চেয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদিকে নিন্দাপত্র জাগপার
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা