পুলিশ ও উপদেষ্টার ভাইয়ের মামলায় জামিনে মুক্ত মুরাদনগর বিএনপির ১৩ নেতাকর্মী

অন্তর্বর্তী সরকারের স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজিব ভুঁইয়ার চাচাতো ভাই ওবায়দুল্লাহ এবং মুরাদনগর থানা পুলিশের ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় আটক মুরাদনগর উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের ১৩ নেতাকর্মী জামিনে মুক্তি পেয়েছেন।
আজ বুধবার (১৩ আগস্ট) সকাল ১১টায় কুমিল্লা জেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এক আদেশে
এই নেতাকর্মীদের জামিন মঞ্জুর করেন।
জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর সন্ধ্যা ৬টায় কুমিল্লা জেলা পরিষদের সামনে থেকে বিএনপির নেতাকর্মীরা এক আনন্দ মিছিল বের করেন। মিছিলটিতে প্রায় পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মী অংশ নেন। উপস্থিত জনতা উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের বিরুদ্ধে নানা স্লোগান দেন।
বিগত ১৭ বছরে আওয়ামী ফ্যাসিবাদী আমলে যেসব নেতাকর্মী জেল খেটেছেন, মামলা-হামলার শিকার হয়েছেন, তাদেরই আবার মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে মুরাদনগর উপজেলা বিএনপিকে দমিয়ে রাখার চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ বিএনপির নেতাদের।
বিএনপির নেতারা জানান, ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকায় ছিলেন এসব নেতাকর্মী। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনেও প্রকাশ্যে ছাত্রদের সাথে যোগ দিয়ে আন্দোলনকে বেগবান করা, আহতদের সেবা ও তাদের পরিবারের প্রতি খোঁজ-খবর রাখার দায়িত্ব পালন করেন তারা।
সদ্য কারামুক্ত বিএনপি নেতাকর্মীরা অভিযোগ করেন, মুরাদনগরের পাঁচবারের এমপি ও সাবেক মন্ত্রী কায়কোবাদের জনপ্রিয়তায় ক্ষিপ্ত হয়ে তার বিশ্বস্ত নেতাকর্মী বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ও স্থানীয় আওয়ামী সন্ত্রাসীরা। উপদেষ্টার ছায়াতলে থেকে মুরাদনগরে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করার চেষ্টা চলছে।
রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন নেতাকর্মীদের স্বজনেরা। তারা বলেন, ‘আমাদের নেতারা আওয়ামি লীগ আমলে যেমন জেল খেটেছে, মামলা-হামলার শিকার হয়েছে, এখনো আমাদের পরিবারের ওপর অত্যাচার চলেছ। দীর্ঘদিন অন্যায়ভাবে জেল খেটে আজ তারা মুক্তি পেয়েছে।’
সদ্য কারামুক্ত উপজেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক মাসুদ রানা বলেন, ‘যে মুরাদনগর থানাকে আমাদের নেতা কায়কোবাদ দাদার নির্দেশে পাহারা দিলাম, পুলিশ সদস্যদের খাবারের ব্যবস্থা করলাম, সেই পুলিশ আমাদের মিথ্যা মামলা দিয়ে জেল খাটায় আর আওয়ামী লীগের নেতা আশরাফ মেম্বার, আক্তার মেম্বার, বাদশাহ মেম্বারদের সাথে থানায় বসে আড্ডা দেয়। তাদের সাথে মিশে চাঁদাবাজি করে। উপদেষ্টা আসিফ আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন করে আমাদের বিএনপির বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেন।’
উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক ফারুক আহমেদ বাদশাহ বলেন, ‘আমরা ভাগ্যবান তারেক রহমানের মতো কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদকে নেতা হিসেবে পেয়েছি। আমাদের খোঁজ নিতে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান কেন্দ্রীয় ছাত্রদল সেক্রেটারীকে পাঠিয়েছেন। আমাদের জন্য কারাগারে খাবার পাঠিয়েছেন। আমাদের সার্বক্ষণিক খোঁজ রেখেছেন মুরাদনগরের মাটি ও মানুষের নেতা সাবেক মন্ত্রী কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ।’
উপদেষ্টা আসিফকে উদ্দেশ করে সদ্য কারামুক্ত বাদশাহ বলেন, ‘আপনার এমপি হওয়ার খায়েস থাকলে সাহস করে জনতার কাতারে আসুন। জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে।’
গত ২৫ মার্চ মুরাদনগর থানায় হামলার অভিযোগে এবং উপদেষ্টার চাচাতো ভাই স্থানীয় সমন্বয়ক ওবায়দুল্লার ওপর হামলার ঘটনা দেখিয়ে বিএনপির উপজেলা আহ্বায়কসহ ৩২ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে ওই দুটি মামলা হয়। এর একটি করে পুলিশ, অন্যটি দায়ের করেন আসিফ মাহমুদের চাচাতো ভাই।
(ঢাকাটাইমস/১৩আগস্ট/মোআ)

মন্তব্য করুন