চীনকে মোকাবিলায় রাশিয়ার এস-ফোর হান্ড্রেড কিনছে ভারত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকা টাইমস
| আপডেট : ২৮ জুন ২০২০, ১২:৪৯ | প্রকাশিত : ২৮ জুন ২০২০, ১২:৪৫

চীনের সঙ্গে সীমান্তে উত্তেজনার মধ্যে রাশিয়ার আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এস ফোর হান্ড্রেড কিনছে ভারত। চীনের সঙ্গে সীমান্ত সংঘাত বাড়ায় এই মিসাইল সিস্টেমের জন্যই রাশিয়া ছুটে গিয়েছিলেন ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। দীর্ঘ টানাপড়েনের পর এস-ফোর হান্ড্রেড মিসাইল সিস্টেম আগামী বছরের মধ্যেই ভারতের হাতে চলে আসবে বলে জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম।

চীনের সঙ্গে চরম উত্তেজনার আবহে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে আরও মজবুত করার লক্ষ্যে এগোতে চলেছে ভারত। দেশটির বিমানবাহিনীর শক্তি বাড়াতে রাশিয়ার থেকে ১২টি অত্যাধুনিক সুখোই ফাইটার জেট ও ২১টি নতুন ভার্সনের মিগ-২৯ কেনার পরিকল্পনা করেছে ভারত। যার জন্য বরাদ্দ হয়েছে পাঁচ হাজার কোটি টাকা।

এস ফোর হান্ড্রেডের আগের নাম ছিল এস-থি হান্ড্রেড পিএমইউ। এই অ্যান্টি-এয়ারক্রাফ্ট ওয়েপন সিস্টেম রাশিয়া তৈরি করেছিল ১৯৯০ সালে। এই সিস্টেমের ডিজাইন করেছিল আলমাজ সেন্ট্রাল ডিজাইন ব্যুরো। ২০০৭ সাল থেকে রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনীতে জায়গা করে নিয়েছে অ্যান্টি-এয়ারক্রাফ্ট ওয়েপন সিস্টেম এস-ফোর হান্ড্রেড ট্রায়াম্ফ।

২০১৫ সালে প্রথম ভূমি থেকে আকাশে উৎক্ষেপণের এস-ফোর হান্ড্রেড ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তি কেনায় আগ্রহ প্রকাশ করে ভারত। দুই দেশের মধ্যে ৫৪৩ কোটি মার্কিন ডলারের চুক্তিও স্বাক্ষরিত হয়। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বরাবরই রাশিয়ার থেকে এই ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধী এয়ার-ডিফেন্স সিস্টেম কেনার ব্যাপারে আপত্তি জানিয়ে এসেছে। তবে বর্তমান পরিস্থিতির বিচারে দেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে আঁটোসাঁটো করতে এই মিসাইল সিস্টেম খুব তাড়াতাড়ি ঘরে তুলতে চায় ভারত। কারণ, রাশিয়ার থেকে অনেক আগেই এই এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম কেনার ব্যাপারে চুক্তি করেছিল চীন। এস-ফোর হান্ড্রেড ট্রায়াম্ফ কেনার জন্য ২০১৪ সালেই মস্কো-বেজিং চুক্তি হয়। এখন এই এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম হাতে পেতে শুরু করেছে চিন।

প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা বলেন, বিশ্বের সবচেয়ে আধুনিক ও শক্তিশালী এয়ার ডিফেন্স মিসাইল সিস্টেম হল এস-ফোর হান্ড্রেড। এর এক একটি ইউনিটে থাকে ভূমি থেকে আকাশে অর্থাৎ সারফেস-টু-এয়ার মিসাইল, ব্যাটল ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম, দূর-পাল্লার সার্ভিল্যান্স রাডার, অ্যাকুইজিশন অ্যান্ড এনগেজমেন্ট রাডার, কম্যান্ড ভেহিকল এবং ট্রান্সপোর্টার-ইরেক্টর-লঞ্চার ভেহিকল বা টেল ভেহিকল। এই টেল ভেহিকল হল ট্রাকের মতো দেখতে গাড়ি যা ক্ষপণাস্ত্র বয়ে নিতে পারে।

এই মিসাইল সিস্টেমের রাডার ৬০০ কিলোমিটার পর্যন্ত টার্গেট দেখতে পায়। অন্য কোনো ক্ষেপণাস্ত্র এর প্রতিরোধে টার্গেট করা হয়েছে কিনা সেটা ধরা পড়ে এই রাডার সিস্টেমে।

এস-ফোর হান্ড্রেড মিসাইল সিস্টেমের সবচেয়ে শক্তিশালী ও বিধ্বংসী ভূমিকা হল এই ক্ষেপণাস্ত্রের প্রযুক্তি। চার ধরনের ক্ষেপণাস্ত্রে সজ্জিত থাকে এস-ফোর হান্ড্রেড। ৪০ এন৬ই মিসাইল যার পাল্লা ৪০০ কিলোমিটার, ৪,৮০০ মিটার প্রতি সেকেন্ড বেগে ছুটে গিয়ে টার্গেটে আঘাত করতে পারে। ৪৮এন৬ডিএম মিসাইল যার পাল্লা ২৫০ কিলোমিটার, গতিবেগ ২০০০মিটার/সেকেন্ড। ৯এম৯৬ই২ মিসাইল যার পাল্লা ১২০ কিলোমিটার এবং গতিবেগ ২০০০মিটার/সেকেন্ড।

৪০ কিলোমিটার পাল্লা ও ৯০০ মিটার/সেকেন্ড গতিবেগের ৯এম৯৬ই মিসাইল যুক্ত থাকে এই এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমে। ৭৭এন৬-এন এবং ৭৭এন৬-এন১ অ্যান্টি-ব্যালিস্টক মিসাইলও যোগ করা হয়েছে এই সিস্টেমে। ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র, মাঝারি পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র এবং আকাশপথে আসা নানা ধরনের আক্রমণকে রুখে দিতে সক্ষম এস-ফোর হান্ড্রেড।

ঢাকা টাইমস/২৮জুন/একে

সংবাদটি শেয়ার করুন

আন্তর্জাতিক বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

আন্তর্জাতিক এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :