করোনাকালে কম খরচে পুষ্টির চাহিদা মেটাবেন যেভাবে

ফিচার ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১২:৩৩

করোনা সংকটে চারিদিকে অর্থনৈতিক সমস্যা চলছে। এ সময়ে আয় বুঝে ব্যয় করতে পারলে চলাফেরায় কিছুটা স্বস্তি হতে পারে। নিয়ম-শৃঙ্গলা মেনে চললে কিছুটা হলেও সাশ্রয় হওয়া সম্ভব। সেক্ষেত্রে দৈনন্দিন জীবনে নিজেকে সংযত করে চলাটাই মুখ্য। কিছু বিষয় খেয়াল রাখলেই মেনে চলতে পারবেন। বিশেষ করে খাওয়া-দাওয়ায় কম খরচে বেশি পুষ্টি মেলে এরকম খাবার খেলে অর্থনৈতিক দিক দিয়ে সাংসারিক জীবনে উন্নতি হতে পারে।

অধিকাংশ মানুষ করোনা সংক্রমণের ভয় চেপে বসেছে সঙ্গে রয়েছে আর্থিক সমস্যা। ফলে যে ধরনের খাবার খেয়ে এসেছেন সব সময়, এখন হয়তো তা হয়ে উঠছে না। সকালে ব্রাউন ব্রেড খেতেন পি-নাট বাটার দিয়ে বা অ্যামন্ড মিল্ক দিয়ে। খেতেন দামী খাবার নির্দিষ্ট এক ধরনের ওটস, এখন সবই সাধ্যের বাইরে।

আটার রুটি খেলে হয়, কিন্তু রোজ বানাতে ভাল লাগে না। সকালের দিকটা কেটে যায় ঘন ঘন চা ও বিস্কুটের উপর দিয়ে। কখনও মুড়ি, কখনও তা-ও নয়। ফলে দুপুরের চরম খিদের সঙ্গী হয় এক থালা ভাত। ঘরে উপকরণও সীমিত। ফলে কী যে বানাবেন আর কী খাবেন তাই এক বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভয়ও রয়েছে সঙ্গে। উলটা পালটা খেলে পুষ্টির যেমন ঘাটতি হতে পারে, বাড়তে পারে ওজনও। দুই’ই করোনার জন্য বিপজ্জনক।

পুষ্টিকর ও মুখরোচক খাবার বানানো যায় বাসাতেই।, তাও কম খাটনিতে। কয়েকটা উদাহরণ দেওয়া হল। এর মধ্যে থেকে পছন্দসই কিছু বেছে নিন।

সকালে রোজ রোজ রুটি-সবজি-ডিম বানানোর ইচ্ছে না হলে, একটু চালে-ডালে বসিয়ে দিন। ঘরে যা সবজি আছে, সব দিন দু-এক টুকরো করে। বিনস, গাজর তো দেবেনই। আলু-পটলও দিতে পারেন। খোসা না ছাড়ালে খাটনি যেমন কমবে, ফাইবারের কারণে উপকারও বেশি পাবেন। ওজন বেশি হলে বা ডায়াবেটিস হলে বা কোষ্ঠকাঠিন্য থাকলে সুফল পাবেন হাতে হাতে। এবার এতে সামান্য ঘি বা মাখন মিশিয়ে নিলে পেয়ে যাবেন পরিপূর্ণ সুষম খাবার। স্বাদও মন্দ লাগবে না।

আরেকটু মুখরোচক কিছু চাইলে বিনস, গাজর, বাদাম দিয়ে চিড়ার পোলাও বানাতে পারেন। সঙ্গে একটা ডিম সেদ্ধ খেয়ে নিন।

সকালে আগে হয়তো কাজু-অ্যামন্ড-আখরোট মিলিয়ে-মিশিয়ে খেতেন বা মিক্সড সিড। এখন তার বদলে ফল খেতে পারেন বা ফ্রুট স্যালাড অথবা দই ও ফলের স্মুদিও বানাতে পারেন। চিনাবাদামও রাখা যেতে পারে।

দুপুরে মনমতো মাছ-মাংস জোগাড় না হলেও প্রোটিনে যেন ঘাটতি না হয়, সে দিকে খেয়াল রাখুন। কিডনি বা হার্টের রোগ, হাই প্রেশার-কোলেস্টেরল না থাকলে ও খুব বেশি বয়স না হলে রোজ বা মাঝে-মধ্যে দুটো ডিম খেতে পারেন। ডিমের সাদা অংশ গোটা তিনেক খেলে ক্ষতি নেই। পাশাপাশি নানা রকম ডাল একেক দিন খান। সঙ্গে নিরামিষ প্রোটিন হিসেবে বিনস, ছোলার তরকারি খেতে পারেন। এতে ফাইবারও বেশি পাবেন।

সবজি নানা রকম খেতে হবে। কেটে-বাছাই করে রান্না করতে অসুবিধা হলে বা পছন্দের সব্জি না পেলে সেদ্ধ খান। দু-ফোঁটা কাঁচা তেল, লবণ ও কাঁচামরিচ মেখে গরম ভাতে। ডালের মধ্যেও দিয়ে দিতে পারেন। বানাতে পারেন সব্জি দিয়ে মাছের ঝোলও।

আগে হয়তো বেশি দাম দিয়ে ব্রাউন রাইস খেতেন। এখন জোগাড় না হলে অল্প সাদা ভাতের সঙ্গে ডাল ও শাকসবজি বেশি খান। ব্রাউন রাইসে আয়রনও বেশি থাকে। তার জন্যও চিন্তা নেই। ভাতের পাতে এক টুকরো লেবু খেলেই খাবারে যতটুকু আয়রন আছে, সবটাই শরীরে শোষিত হবে।

বাড়িতে গোটা মুগ বা ছোলা থাকলে সারা রাত ভিজিয়ে কল বার করে পেঁয়াজ, টোমেটো, শসা, লেবুর রস, লবণ, কাঁচামরিচ, ধনেপাতা মিশিয়ে সালাদ বানিয়ে নিন। দু-চার টুকরো সিদ্ধ আলুও দিতে পারেন। বিকেলের টিফিন হিসেবে চমৎকার হবে। মুড়ি বা শুকনো খোলায় ভাজা চিড়েতে অল্প বাদাম বা ছোলা, একটু সেদ্ধ আলু, পেঁয়াজ, টোমেটো, শসা, লেবুর রস, লবণ, কাঁচামরিচ, ধনেপাতা মিশিয়েও খেতে পারেন।

কম খাটনিতে রাতের খাবারে বদল আনতে চাইলে ছোট ছোট করে পেঁয়াজ, বিনস ও গাজর কেটে অল্প অলিভ অয়েল বা সরিষার তেলে কম আঁচে রান্না করে নিন। অল্প টোমেটো দিন। ডিম ফেটিয়ে ঝুরো করে নিন। এবার তাতে মেশান দুপুরের থেকে যাওয়া ভাত। ভাল করে নেড়েচেড়ে স্বাদ মতো লবণ, কাঁচামরিচ, চিনি ও ধনেপাতা মেশান। ডিমের বদলে সিদ্ধ চিকেনও দিতে পারেন।

রাতে রুটি-তরকারি-ডাল-ভাত-সবজি-মাছ খেতে ইচ্ছে না হলে মাঝে-মধ্যে রুটির রোল বানাতে পারেন। পরোটার রোলের চেয়ে বেশি স্বাস্থ্যকর হবে। একটা বা দুটো ডিম, পেঁয়াজ ও টোমেটো দিয়ে। কম উপকরণে ও কম খাটনিতে, কম খরচে এমন খাবার বানাতে হবে যাতে স্বাদ ও স্বাস্থ্য দুই বজায় থাকে।

(ঢাকাটাইমস/২৩ সেপ্টেম্বর/আরজেড/এজেড)

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফিচার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :