স্ত্রী-শ্যালিকাকে ভারতে বিক্রি

ইউসুফের বিয়ের উদ্দেশ্যই ছিল পাচার করা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১০ আগস্ট ২০২২, ১৮:৪৫

গাজীপুরে একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন ময়মনসিংহের গফরগাঁও গাইকপাড়ার ইউসুফ। সে সময় জরিনা (ছদ্দনাম) একই পোশাক কারখানায় কাজ করতেন। সেখান থেকে পরিচয়ের পরে বিয়ে করেন তারা। ইউসুফ বিয়ের আগেই পাচারের পরিকল্পনা করে রাখেন। বিয়ের কিছু দিন পরেই উন্নত জীবন গড়ার প্রলোভন দেখিয়ে ভারতে পাচার করেন নিজের স্ত্রী ও শ্যালিকা শিউলিকে।

বুধবার দুপুরে রাজধানীর মালিবাগে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সিআইডির অর্গানাইজ ক্রাইম ইউনিটের বিশেষ পুলিশ সুপার মো. নজরুল ইসলাম এ তথ্য জানান।

মেয়েদের পাচারের বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে ভুক্তভোগীর বাবা গাজীপুর শ্রীপুর থানায় একটি অপহরণ মামলা করেন। এতে স্বামী ইউসুফকে গ্রেপ্তার করে শ্রীপুর থানা পুলিশ। বর্তমানে ইউসুফ জেলে আছেন। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে তিনি (ইউসুফ) ছয়জনের জড়িত থাকার তথ্য দেন। তার দেয়া তথ্যে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তারা বাকি দুজনের নাম বলেন।

মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ভারতে নারী পাচারকারী চক্রের মূল হোতা রানা ও তার সহযোগী সুজন মিয়াকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি। তাদের তথ্যের ভিত্তিতে ঝিনাইদহ ও চুয়াডাঙ্গায় সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে সাহাবুদ্দীন ও নাইমুর রহমান ওরফে সাগরকে গ্রেপ্তার করা হয়।

বিশেষ পুলিশ সুপার নজরুল ইসলাম বলেন, গত বছরের ৪ মে ঝিনাইদহের মহেশপুরের বাঘাডাঙ্গা সীমান্ত দিয়ে ইউসুফ তার স্ত্রী জরিনা ও শ্যালিকা শিউলিকে ভারতে পাচার করেন। সেখানে ইউসুফের সহযোগীরা তাদের যৌনপল্লিতে বিক্রি করে দেন। যৌন নির্যাতনের শিকার হন ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ের ওই দুই বোন। পরে তারা কৌশলে যৌনপল্লি থেকে পালিয়ে ভারতীয় পুলিশের সহায়তায় চলতি বছরের ২২ মার্চ দেশে ফিরে আসেন।

জবানবন্দিতে ওই দুই নারী জানান, বছর দুই আগে তারা গাজীপুরের শ্রীপুরের একটি কারখানায় কাজ নেন। সেখানে থাকার সময় বড় বোনের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন ইউসুফ, পরে বিয়েও করেন। গত বছর বেশি বেতনে চাকরির কথা বলে ইউসুফ তার স্ত্রী ও শ্যালিকাকে ভারতের নারী পাচারকারীদের কাছে বিক্রি করে দেন।

তারা বলেন, ইউসুফ যে নারী পাচারে জড়িত, নিজেরা বিপদে পড়ার আগে সেটা তারা বুঝতে পারেন নি।

এই কর্মকর্তা বলেন, এই মানব পাচার চক্রটি কয়েক বছর ধরে এলাকায় সক্রিয় ছিলেন। তারা এ পর্যন্ত ২০ জন নারীকে এভাবে পাচার করেছে বলে প্রাথমিকভাবে শিকার করেন। তারা প্রথমে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে নারীদের সংগ্রহ করে সীমান্তবর্তী এলাকায় নিয়ে রাখতেন। পরে সীমান্তবর্তী এলাকার আরেকটি চক্র সুযোগ বুঝে ওপারের (ভারত) দালালদের কাছে পৌঁছায় দিতেন।

বিশেষ পুলিশ সুপার নজরুল ইসলাম বলেন, সংসার করা উদ্দেশ্য ছিল না ইউসুফের। ভারতে পাচার করার জন্যই তিনি বিয়ে করে। গ্রেপ্তার চারজনের নামে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা তদন্তাধীন। এই চক্রের দেশি-বিদেশি সদস্যদের তথ্য সংগ্রহের চলছে। এর সঙ্গে আর কারা কারা জড়িত, তাদের খোঁজা হচ্ছে।

ঢাকাটাইমস/১০আগস্ট/এএইচ/ইএস

সংবাদটি শেয়ার করুন

অপরাধ ও দুর্নীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

অপরাধ ও দুর্নীতি এর সর্বশেষ

আন্তঃজেলা ইজিবাইক চোর চক্রের মূলহোতাসহ গ্রেপ্তার ৩

এসবির অফিসার পরিচয় দিয়ে প্রতারণা, গ্রেপ্তার ৯

বেকারত্ব ঘুচাতে শিখেন অটোরিকশা ছিনতাই, গড়ে তোলেন চক্র

রিমান্ডে লোমহর্ষক তথ্য: মানুষের হাত-পা কেটে পৈশাচিক আনন্দ পেতেন মিল্টন

মিল্টন সমাদ্দারের কর্মকাণ্ডের দায় তার স্ত্রী এড়াতে পারেন না: ডিবিপ্রধান

‘আইন যেটা চাইবে সেটাই হবে’, জিজ্ঞাসাবাদ শেষে মিল্টন সমাদ্দারের স্ত্রী

জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মিল্টন সমাদ্দারের স্ত্রীকে ডিবিতে ডাকা হয়েছে

ফ্ল্যাটের ভুয়া দলিল মর্টগেজ দিয়ে ৫০ কোটি টাকা ব্যাংক লোন নেয় চক্রটি

কষ্টিপাথরের ব্যবসাকে কেন্দ্র করে অপহরণ, গ্রেপ্তার ৭

কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে যা বললেন মিল্টন সমাদ্দার

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :