সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বৈকালিক চেম্বারে রোগী উপস্থিতি কম

আহমাদ সোহান সিরাজী, সাভার (ঢাকা)
 | প্রকাশিত : ২৯ মে ২০২৩, ১১:৩৩

দেশের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে শুরু হয়েছে বৈকালিক স্বাস্থ্য সেবা। সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গত মাসের ৩০ তারিখ থেকে শুরু হয়েছে বৈকালিক স্বাস্থ্য সেবা কার্যক্রম। হাসপাতালে দায়িত্ব পালন শেষে বৈকালিক স্বাস্থ্য সেবায় চিকিৎসকরা সেবা দিচ্ছেন। তবে নানা কারণে কাঙ্ক্ষিতরোগী পাচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

গতকাল রবিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের ১০৭ নং কক্ষে (দন্তরোগ বিভাগ), ১০৩ নং কক্ষে (মেডিসিন বিভাগ) ও ১১৯ নং কক্ষে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে। দুপুর ৩টা থেকে চিকিৎসা সেবা শুরু হয়। ঘন্টাখানেক পেরিয়ে গেলেও দন্তরোগ বিভাগে কোনও রোগীর দেখা পাওয়া যায়নি। মেডিসিন বিভাগে ৫-৬ জনকে চিকিৎসা নিতে দেখা যায়। ১১৯ নং কক্ষে জুনিয়র কনসালটেন্টের কক্ষে ওই সময়ে কোনও রোগীর দেখা মেলেনি।

হাসপাতাল সূত্রে জানা, ৫০ শয্যা বিশিষ্ট এ হাসপাতালটিতে ২৮ চিকিৎসক, ৩১ নার্স ও ১৫ জন কর্মচারী রয়েছেন। দুজন কনসালটেন্ট উচ্চ শিক্ষার জন্য বিদেশে রয়েছেন। মেডিকেল অফিসারের ২টি পদ শূন্য রয়েছে। হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ১২শ রোগী চিকিৎসা সেবা নেন।

চেম্বার করার রোস্টার হিসেবে সপ্তাহে একজন চিকিৎসক ২ দিন করে দায়িত্ব পালন করেন। চিকিৎসকদের সহযোগীতা করেন নার্স, মেডিকেল এসিস্টেন্ট। টিকেট কেটে চিকিৎসাসেবা নিতে হয় রোগীদের। এক্ষেত্রে মেডিকেল অফিসারের ক্ষেত্র ফি ২০০ টাকা। এরমধ্যে মেডিকেল অফিসার পান ১০০ টাকা৷ ৫০ টাকা পান চিকিৎসকের সহযোগী। বাকি ৫০ টাকা সার্ভিস ফি।

এছাড়া কনসালটেন্টের ক্ষেত্রে ফি দিতে হয় ৩০০ টাকা। এরমধ্যে কনসালটেন্ট পান ২০০ টাকা, সহযোগী ৫০ ও বাকি ৫০ টাকা হাসপাতালের সার্ভিস চার্জ। চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুসারে অধিকাংশ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয় সরকারি হাসপাতালেই। বর্তমানে প্রতিদিন গড়ে ১০-১৫ জন রোগী চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন। চিকিৎসা সেবা নিতে আসা অধিকাংশ রোগীই এ উদ্যোগকে ইতিবাচক বলে মনে করছেন।

আশুলিয়ার চারাবাগ থেকে সেবা নিতে আসা মো. শাহিন নামে এক গার্মেন্টস কর্মকর্তা ঢাকা টাইমসকে বলেন, আমি আজকেই প্রথম এই সেবা নিলাম। আমার আসলে এই বৈকালিক স্বাস্থ্য সেবার বিষয়ে জানা ছিলো না তাই প্রথমে ফি নিয়ে কিছুটা বিভ্রান্তিতে পরতে হয়েছিল। পরে অবশ্য এই বিষয়ে জেনে ডাক্তার দেখিয়েছি। এটি সত্যিই একটি ভালো উদ্যোগ।

সাভারের ব্যাংক কলোনী থেকে মো. বায়েজিদ নামে এক যুবক তার মা শিউলী বেগমকে ডাক্তার দেখাতে এসেছেন। তিনি বলেন, এই সেবায় আমরা উপকৃত হবো। কারণ বাইরের কোনও প্রাইভেট চেম্বারে একজন ডাক্তার দেখাতে হলে ৭০০-৮০০ টাকা ভিজিট দেওয়া লাগে আর এখানে মাত্র ২০০ টাকার বিনিময়ে ডাক্তারের কাছ থেকে সেবা নিতে পারছি।

সেবা দানকারী মেডিকেল অফিসার ডা. আবিদা আক্তার ঢাকা টাইমসকে বলেন, রোস্টারের নিয়ম মেনে আমরা আমাদের ডিউটি টাইমের পর বিকাল ৩টা থেকে ৬টা পর্যন্ত রোগী দেখে থাকি। এতে করে স্থানীয় জনগণের চিকিৎসাসেবা পাওয়ার সুযোগ হয়েছে। কিন্তু এ বিষয়টি সম্পর্কে এখনো অধিকাংশ মানুষ অবগত না হওয়ায় রোগী অনেক কম।

সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সায়েমুল হুদা ঢাকা টাইমসকে বলেন, সরকার নির্ধারিত ফি অনুসারে বিভিন্ন ধরণের পরীক্ষা নিরীক্ষার সুযোগ হাসপাতালেই রয়েছে। এতে কম খরচে সেবা পাওয়ায় সুযোগ তৈরি হয়েছে। এছাড়া বাইরে চেম্বারে চিকিৎসকদের দেখাতে গেলে ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত ফি দিতে হতো। সেখানে ২০০ থেকে ৩০০ টাকার মধ্যে একই সেবা পাওয়া যাচ্ছে। এ উদ্যোগকে সফল করতে হলে এ বিষয়গুলো বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমে তুলে ধরতে হবে।

সাভার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মঞ্জুরুল আলম রাজীব বলেন, সাভার একটি শ্রমিক অধ্যুষিত উপজেলা। এই উপজেলার অনেক মানুষ স্বল্প আয়ের। আগে তারা চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে বেশি ভিজিট দিয়ে ডাক্তার দেখাতে যেতেন। এতে তাদের চিকিৎসায় ব্যয় বাড়ত। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বৈকালিক চেম্বার ভিজিট কার্যক্রম সেবা চালুর ফলে এখন থেকে তাদের আর বেসরকারি হাসপাতাল গুলোতে ‍গিয়ে বেশি ভিজিট দিয়ে চিকিৎসাসেবা নিতে হবে না।

আরও পড়ুন: সিলেটের লালাদিঘিতে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু

এখানেই তারা কম ভিজিটে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দেখাতে পারবেন। তবে এই বিষয়টি আরো ব্যাপকভাবে প্রচার পেলে মানুষ এটি সম্পর্কে অবগত হবেন।

(ঢাকাটাইমস/২৮ মে/এসএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :