বিএনপি বৈধ পথে রেমিটেন্স পাঠাতে নিরুৎসাহিত করে অর্থনৈতিক সমস্যা সৃষ্টি করতে চায়: ওবায়দুল কাদের

দেশের রেমিটেন্স আয় বৃদ্ধি পাওয়ায় বিএনপির গাত্রদাহ হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘বিএনপি প্রবাসীদের বৈধ পথে রেমিটেন্স পাঠাতে নিরুৎসাহিত করে দেশে অর্থনৈতিক সমস্যা সৃষ্টি করতে চায়।’
মঙ্গলবার বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের দেওয়া বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবার জানিয়ে বিবৃতিতে এসব কথা বলেন তিনি।
বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বাংলাদেশের যেকোনো অগ্রগতি ও সফলতায় বিএনপির গাত্রদাহ মির্জা ফখরুলদের নেতিবাচক বক্তব্যের মধ্য দিয়ে বারবার উন্মোচিত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র থেকে রেমিটেন্স প্রবাহ বৃদ্ধি পাওয়া সম্পর্কে মির্জা ফখরুলের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বক্তব্যে তারই পুনরাবৃত্তি ঘটেছে।’
আরও পড়ুন>> চুরি হওয়া টাকা ফেরত আনায় রেমিট্যান্স বাড়ছে: মির্জা ফখরুল
তিনি বলেন, ‘যারা কেবল দেশ ও জনগণের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার আর্জি নিয়ে চাতক পাখির মতো বিদেশি প্রভুদের দিকে চেয়ে থাকে, তারা রেমিটেন্স বৃদ্ধির সুখবর কোনোভাবেই মেনে নিতে পারবে না, সেটাই স্বাভাবিক।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘রেমিটেন্সের ওপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ২.৫ শতাংশ প্রণোদনা প্রদানের সময়োপযোগী সিন্ধান্তের কারণেই রেমিটেন্স প্রবাহ বৃদ্ধি পেয়েছে। সেইসঙ্গে কন্যার সফল নেতৃত্বের কল্যাণে বাংলাদেশের শক্তিশালী অর্থনৈতিক কাঠামো প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় এবং বাংলাদেশ বিনিয়োগের নিরাপদ স্থান হিসেবে স্বীকৃতি অর্জন করায় বিদেশি বিনিয়োগকারীদের মতোই প্রবাসী বাংলাদেশিরাও দেশে বিনিয়োগে উৎসাহিত হচ্ছে।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিএনপি সেই রাজনৈতিক দল যারা বাংলাদেশে শ্রীলঙ্কার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চায়, যারা সরকারের বিরোধিতা করতে যেয়ে প্রবাসীদের বৈধ পথে রেমিটেন্স পাঠাতে নিরুৎসাহিত করে দেশে অর্থনৈতিক সমস্যা সৃষ্টি করতে চায়। কাজেই রেমিটেন্স বৃদ্ধির সুখবরে বিএনপি নেতারা খুশি নয়।’
বর্তমান সরকার অর্থপাচার রোধে কার্যকর আইন প্রণয়ন এবং অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শান্তির নজির স্থাপন করেছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত অশুভ জোটের শাসনামলে দুর্নীতি ও অর্থপাচারকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া হয়েছিল। হাওয়া ভবনে দুর্নীতি, লুটপাট ও অর্থপাচারের স্বর্ণরাজা গড়ে তুলেছিল। তাদের দুর্নীতি ও অর্থপাচার সম্পর্কে বিশ্বখ্যাত মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই সাক্ষ্য দিয়েছে। সিঙ্গাপুর থেকে খালেদা জিয়ার পুত্রদের পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনা হয়েছে।’
বিবৃতিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতি নিয়ে আওয়ামী লীগের দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই বলে দাবি করেন ওবায়দৃল কাদের। ‘বরং বিএনপিই আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে বলে মন্তব্য তার। তিনি বলেন, ‘আগুন দিয়ে শত শত নিরীহ, নিরপরাধ মানুষকে পুড়িয়ে এবং উগ্র সাম্প্রদায়িক জঙ্গিবাদী অপশক্তিকে পৃষ্ঠপোষকতা ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য বিএনপিই আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এমনকি কানাডার উচ্চ আদালত বিএনপিকে একটি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। কিন্তু তারা তাদের অতীত অপকর্ম নিয়ে অনুতপ্ত না হয়ে উল্টো নানা মিথ্যাচার করছে।’
বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই বাংলাদেশে গণতন্ত্র এবং ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচন কমিশন গঠনের সুনির্দিষ্ট আইন প্রণিত হয়েছে এবং অবকাঠামো উন্নয়ন ও কারিগরি সুযোগ- সুবিধা সম্প্রসারণসহ নির্বাচনি ব্যবস্থার সার্বিক সক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে।’
গাজীপুর সিটি করপোরেশনে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনও অবাধ, নিরপেক্ষ শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হবে। এটাই শেখ হাসিনার সরকারের সংকল্প।’
‘জনবিচ্ছিন্ন’ বিএনপি নিশ্চিত পরাজয় জেনে নির্বাচনে অংশগ্রহণে ভয় পায় মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘এতিমের অর্থ আত্মসাতের কারণে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া দণ্ডিত হওয়ায় এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলার মাস্টার মাইন্ড আসামি তারেক রহমান বিদেশে পালিয়ে থাকায় নির্বাচনি মাঠে নেতৃত্ব নেওয়ার মতো কোনো নেতা তাদের নেই। সে কারণে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সৎসাহস রাখে না বিএনপি।
(ঢাকাটাইমস/৩০মে/জেএ/এফএ)

মন্তব্য করুন