যৌবন ধরে রাখতে দুধ-রসুনের ম্যাজিক
সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য চাই সুষম পুষ্টি। আর সুষম পুষ্টি পাওয়ার প্রধান মাধ্যম দুধ। পুষ্টিবিদদের মতে শরীরকে সুস্থ ও কর্মক্ষম রাখতে দুধ ও দুগ্ধজাত খাবারের ভূমিকা অপরিহার্য। যেকোনো বয়সীদের জন্যই দুধ একটি পুষ্টিকর উপকারী পানীয়। ছোট-বড় সকলেরই দুধ খাওয়া উচিত। দুধ শরীরে শক্তি যোগায়। তাই দুধকে আদর্শ খাবার বলা হয়।
দুধের অপরিহার্য উপাদান ল্যাকটোজ, যা দৈহিক গঠন ও মেধাবিকাশে সাহায্য করে। এটি মানুষের স্বাস্থ্য রক্ষার মূল উপাদান। এছাড়াও দুধে আছে অ্যামিনো অ্যাসিড, বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন, খনিজ পদার্থ যেমন ক্রোমিয়াম, আয়রন, কোবাল্ট, ম্যাঙ্গানিজ, কপার, জিংক ও আয়োডিন। গরুর দুধে পানি ৮৬ দশমিক ৫ শতাংশ, ল্যাকটোজ ৪ দশমিক ৮ শতাংশ, চর্বি ৪ দশমিক ৫ শতাংশ, প্রোটিন ৩ দশমিক ৫ শতাংশ এবং ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ।
আর রসুনে রয়েছে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান। রসুনে রয়েছে ভিটামিন সি, ভিটামিন বি১ এবং ভিটামিন বি৬। রসুনে রয়েছে বেশ কয়েকটি মিনারেল। যেমন: ম্যাঙ্গানিজ, সেলেনিয়াম, ক্যালসিয়াম, কপার, পটাশিয়াম, ফসফরাস এবং আয়রন। কাঁচা রসুন উচ্চ রক্তচাপ কমাতে দারুণভাবে সাহায্য করে। তবে, দুধের সঙ্গে রসুন মিশিয়ে খেলে অনেক উপকার পাওয়া যায়।
দুধ ও রসুন দুটিই খুব উপকারী দুটি খাবার। এদের রয়েছে স্বাস্থ্যগত গুণ। জানেন কি দুধের মধ্যে রসুন মিশিয়ে খেলে অনেক উপকার পাওয়া যায়। দুধের সঙ্গে ও রসুন মিশিয়ে খেলে শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ দূর করে। এছাড়া শ্বাসতন্ত্রকে ভালো রাখে। রাতে ঘুমানোর আগে দুধের মধ্যে রসুন দিয়ে খেলে স্বাস্থ্যের পক্ষে ভালো। যেকোনো ব্যথা উপশমে যদি দুধ আর রসুন একসঙ্গে খাওয়া যায় তাহলে খুব ভালো ফল পাওয়া যায়। এছাড়াও ক্যান্সার থেকে দূরে রাখে এই খাবার। সবচেয়ে বেশি উপকারী হলো যৌবন ধরে রাখতে। এটি বয়সের ছাপ কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও রসুন-দুধ থেকে বেশ কয়েকটি উপকার পাওয়া যায়। সেগুলো হলো-
কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখে
কোলেস্টেরল হাই থাকলে হার্টের সমস্যা দেখা দেয়। রসুন দেওয়া দুধ খেলে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে থাকবে এবং হার্টের মধ্যে রক্তচলাচল ভালো হবে।
মাইগ্রেনের থেকে রক্ষা
প্রচণ্ড কষ্টদায়ক এক সমস্যা হলো মাইগ্রেন। যার হয় সেই মূলত বুঝতে পারে এর যন্ত্রণা। যাদের এই সমস্যা রয়েছে তারা প্রতিদিন রসুন দুধ খাওয়া অভ্যাস করতে পারলে মাইগ্রেনের ব্যথা অনেক কমে যাবে। এছাড়াও এর মধ্যে অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটারি উপাদান থাকায় ব্যাথা থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে।
গেঁটে বাত থেকে মুক্তি
গাঁটে গাঁটে ব্যথা অনেক কমিয়ে দেয় এই রসুন দুধ। এমনিতেই গরম দুধ ব্যথা কমায়, সেই সঙ্গে রসুন প্রদাহ থেকে রক্ষা করে।
কোষ্ঠকাঠিন্য কমায়
যাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা আছে তারা অনেকেই হয়তো নিয়মিত গরম দুধ খান। এবার তাতে কয়েক কোয়া রসুন বেটে দিন। পরেরদিন সকালে পেট একদম পরিষ্কার হয়ে যাবে। গ্যাস, অম্বলের সমস্যাও কমবে।
ব্রণ সারায়
মুখের যাবতীয় কালো দাগ ছোপ ব্রণ দূর করতে নিয়মিত খেতে পারেন রসুন-দুধ। এটি অন্যসব সাধারণ খাবার ও কেমিক্যালযুক্ত প্রসাধনী থেকে অনেক গুণ বেশি কাজ করে।
হারানো যৌবন ফিরিয়ে দেয়
দুধ-রসুন হারানো যৌবন ফিরে পেতে কার্যকরী। প্রজনন ক্ষমতা বাড়তে উপকারী। রসুনে পলিসালফাইড ও অ্যালিসিন যৌগ রয়েছে, যার ফলে রক্তনালীগুলি শিথিল হয় এবং রক্তচাপ কমায়, যা হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতি করে। গবেষণায় পরামর্শ দেওয়া হয়েছে যে রসুনের রক্তনালীগুলো শিথিল করার ক্ষমতা রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে থাকে, যা পরোক্ষভাবে পুরুষত্বহীনতা নিয়ন্ত্রণ করে।
যেভাবে তৈরি করবেন রসুন-দুধ
রসুনের কোয়া ভালো করে ছাড়িয়ে ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে পেস্ট তৈরি করুন। এছাড়া পরিস্কার পাটায় বেটে বা রসুনের কোয়া ছেচে নিন। এবার পরিমাণমতো রসুনের পেস্ট দিয়ে সঙ্গে একগ্লাস গরম দুধ মেশান। ঘুমোতে যাওয়ার আগে খান। এছাড়াও রসুনের কোয়া ভালো করে চিবিয়ে নিয়ে একগ্লাস হালকা গরম দুধ খেতে পারেন।