ব্রিকস সম্মেলনে ফরাসি প্রেসিডেন্টের উপস্থিতি চায় না রাশিয়া

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২৩ জুন ২০২৩, ১৯:০১

ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিতব্য ব্রিকস সম্মেলনে যোগ দিবেন তা চায় না মস্কো। রাশিয়ার উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই রিয়াবকভ গত বৃহস্পতিবার এমনটাই জানিয়েছেন। কারণ প্যারিস এখনো মস্কোর বিরুদ্ধে বৈরী নীতি গ্রহণ করা অব্যাহত রেখেছে।

তিনি আরও বলেছেন, নিঃসন্দেহে এই বৈঠকে অংশ নেয়া অতিথিদের আমন্ত্রণ করা ব্রিকস বৈঠকের আয়োজকেরই দায়িত্ব। তবে এ বিষয়ে সংস্থার সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করে নেয়াটাই ভালো এবং মঙ্গলজনক।

সের্গেই রিয়াবকভ জোর এ বিষয়ে জোর দিয়ে বলেছেন, যেসব দেশ রাশিয়ার বিরুদ্ধে বৈরী ও অগ্রহণযোগ্য নীতি অবলম্বন করছে বা যারা আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে মস্কোকে বিচ্ছিন্ন করতে চায় এবং উত্তর আটলান্টিক চুক্তি সংস্থা বা ন্যাটোর সদস্য এবং তার চেয়েও খারাপ যে বিষয় যারা রাশিয়ার কৌশলগত পরাজয় চেয়েছে এবং যারা বৃহৎ শক্তির পরিমন্ডল থেকে রাশিয়াকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে তারা ব্রিকস বৈঠকে যোগ দেওয়ার যোগ্য নয়।

সম্প্রতি দক্ষিণ আফ্রিকার রাজধানী প্রিটোরিয়া সফরের সময় ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্যাথরিন কোলোনা ঘোষণা করেন, ম্যাক্রোঁ এই সপ্তাহে ব্রিকস বৈঠকে অতিথি হিসেবে কোনো পশ্চিমা দেশের প্রথম প্রধান হতে চান। এরপরই রাশিয়ার স্পষ্ট প্রতিক্রিয়া এলো।

দক্ষিণ আফ্রিকায় ব্রিকস সম্মেলনে ম্যাক্রোঁর উপস্থিতির জন্য ফ্রান্সের পক্ষ থেকে জোর দেয়ার বেশ কয়েকটি কারণ উল্লেখ করা যেতে পারে। প্রথমত, ফ্রান্সসহ পশ্চিমা দেশগুলি ব্রিকস, সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন বা ইউরেশীয় অর্থনৈতিক ইউনিয়নের মতো উদীয়মান প্রতিষ্ঠানগুলির উপস্থিতি উপেক্ষা বা বিবেচনা করা সত্ত্বেও বিশ্ব পরিমণ্ডলে তাদের গুরুত্ব ও মর্যাদা এবং ক্রমবর্ধমান ভূমিকা সম্পর্কে ভালভাবে সচেতন।

ব্রিকসে ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন এবং দক্ষিণ আফ্রিকার দেশ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে এবং এ পর্যন্ত বিভিন্ন দেশ থেকে এই সংস্থায় যোগদানের জন্য আবেদন জানানো হয়েছে। ডলারের আধিপত্যের অবসান এবং সদস্য দেশগুলোর মধ্যে একক মুদ্রা ব্যবহার করা এই গ্রুপের অন্যতম লক্ষ্য যা পশ্চিমা দেশগুলির মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে। অতএব ম্যাক্রোঁর মতো রাজনীতিবিদ অনেক ইউরোপীয় ও পশ্চিমা নেতাদের বিপরীতে যিনি সবসময়ই উদ্ভাবনী পদক্ষেপ নিয়েছেন ব্রিকসের মতো প্রতিষ্ঠানের সম্প্রসারণমূলক কর্মকাণ্ডের দিকে তাকানোর পরিবর্তে ব্রিকস বৈঠকে সক্রিয়ভাবে অংশ নেওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেছেন। এ ক্ষেত্রে রাশিয়ার বিরুদ্ধে পশ্চিমাদের নীতি এবং সিদ্ধান্তগুলোকে প্রভাবিত করার জন্য ম্যাক্রোঁর সেখানে সর্বাধিক প্রচেষ্টা চালাবেন বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।

ব্রিকস সম্মেলনে যোগদানের ম্যাক্রোঁর ইচ্ছার জন্য আরেকটি কারণ উদ্ধৃত করা যেতে পারে যে এই আন্তর্জাতিক গ্রুপের সদস্যরা বেশিরভাগই উদীয়মান অর্থনীতির দেশ যারা রাশিয়ার বিরুদ্ধে নীতি ও পদক্ষেপের সঙ্গে একমত নয়। এই বিষয়ে প্যারিসের লক্ষ্য হল ব্রিকস সদস্যদের মধ্যে বিভাজন এবং পার্থক্য তৈরি করা। রাশিয়ার বিরুদ্ধে তীব্র চাপ সৃষ্টির আলাদাভাবে এর সদস্য রাষ্ট্রের প্রধানদের সাথে পরামর্শ করা।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সম্প্রতি ঘোষণা করেছেন, ইউক্রেনের পশ্চিমা মিত্ররা রাশিয়ার বিরুদ্ধে শেষ ইউক্রেনীয় সৈন্যের সঙ্গে লড়াই করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং কিয়েভ সৈন্যদের হতাহতের বিষয়ে তারা মোটেও চিন্তিত নয়।

(ঢাকাটাইমস/২৩জুন/এসএটি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

আন্তর্জাতিক বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :