ডেঙ্গুর শক সিনড্রোম থেকে বাঁচার উপায়

ফিচার ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ০৪ জুলাই ২০২৩, ১২:৩২ | প্রকাশিত : ০৪ জুলাই ২০২৩, ০৯:৩৩

এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ প্রতিদিনই বাড়ছে। চরম আতঙ্ক নিয়ে জীবন যাপন করছেন দেশের সকল মানুষ। এবার ডেঙ্গুর ধরন ভয়ংকর। আক্রান্তদের বেশির ভাগই শক সিনড্রোমে (সিভিয়ার) চলে যাচ্ছে। ডেঙ্গু জ্বরে মৃত্যুও হচ্ছে অনেকের। বর্তমানে দেশের সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে হাজার হাজার ডেঙ্গু রোগী। ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের বেশির ভাগই ফুসফুস, মস্তিষ্ক, লিভার ও হার্টের জটিলতায় ভুগছেন। এর ফলে দেখা যায় আক্রান্তের পাঁচ দিন পর রোগী যখন মনে করে সে সুস্থ হয়ে যাচ্ছে তখনই তাদের অবস্থা আবার খারাপ হচ্ছে। জ্বর যখনই কমে আসছে, রোগীর রক্তচাপও কমে যাচ্ছে।

ডেঙ্গু শব্দের উৎপত্তি স্প্যানিশ ‘কা-ডিঙ্গা-পেপো’ শব্দ থেকে, যার ব্যুৎপত্তিগত অর্থ শূল বেদনাসহ খিঁচুনির উৎস হতে পারে। ওয়েস্ট ইন্ডিজে এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের হাঁটাচলার ভঙ্গি দেখতে অনেকটা ডান্ডি বা নৌকার মতো লাগত বলে সেখানে এর নাম ছিল ডান্ডি ফিভার।

ডেঙ্গু ভাইরাসের চারটি ধরন আছে। ডেনভি-১, ডেনভি-২, ডেনভি-৩ ও ডেনভি-৪। এবার ডেনভি-৩-এর প্রকোপ বেশি। এর উপসর্গ ও জটিলতা অনেক বেশি মারাত্মক। এ বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত যাদের মৃত্যু হয়েছে, তাদের বেশির ভাগই শক সিনড্রোমে মারা গেছেন।

জ্বর ১০২ ডিগ্রি ফারেনহাইটের নিচে থাকলে ৬ ঘণ্টা পরপর প্যারাসিটামল খান, ১০২–এর ওপরে গেলে প্যারাসিটামল সাপোজিটরি দেন। বেশি বেশি ডাবের পানি, খাওয়ার স্যালাইন ও ফলের জুস খান। খাওয়ার রুচি অনেক কমে যাবে, তবু জোর করে হলেও খেতে থাকেন। প্যারাসিটামল ছাড়া অন্য কোনো ব্যথার ওষুধ খাবেন না। কারণ, ব্যথানাশক খেলে রক্তক্ষরণ হতে পারে, এমনকি মৃত্যু হতে পারে। প্যারাসিটামল জ্বর এবং শরীর ব্যথায় কার্যকর ওষুধ।

সাধারণত এক থেকে দুই সপ্তাহের মধ্যে ডেঙ্গু সেরে যায়। তবে কিছু রোগীর ক্ষেত্রে পরিস্থিতি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়তে পারে। এসব ক্ষেত্রে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। এই জটিল পরিস্থিতিগুলো হলো ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভার ও ডেঙ্গু শক সিনড্রোম।

হেমোরেজিক ফিভারের মধ্যে একধরনের রোগী রক্তপাত নিয়ে আসতে পারে। আরেক ধরনের রোগী সরাসরি শকে চলে যেতে পারে। হেমোরেজিক ফিভারের মধ্যে যেগুলো শকে চলে যাচ্ছে পাশাপাশি এক্সটেনডেট ডেঙ্গু শক সিনড্রম, সেগুলো হলো অস্থিতিশীল বা ঝুঁকিপূর্ণ। তারা মারাও যেতে পারে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ডেঙ্গু শক সিনড্রোমের উপসর্গ হলো শ্বাস-প্রশ্বাসে অসুবিধা হওয়া কিংবা শ্বাস-প্রশ্বাসের গতি বেড়ে যাওয়া। ত্বক শীতল হয়ে যাওয়া। ত্বকের ভেতরের অংশে রক্তক্ষরণের কারণে ত্বকের ওপর লাল ছোপ সৃষ্টি হওয়া। বমি, মল কিংবা প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত যাওয়া, প্রচণ্ড পেটব্যথা ও অনবরত বমি হওয়া, নাক ও দাঁতের মাড়ি থেকে রক্তক্ষরণ ও অবসাদ। শিশু-বৃদ্ধদের মধ্যে যারা দ্বিতীয় বার আক্রান্ত হচ্ছেন কিংবা কিডনি রোগে আক্রান্ত, ডায়াবেটিস, হার্ট, লিভারসহ বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্ত তারা ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হলে মৃত্যুঝুঁকি বেশি। আরো বিপজ্জনক তথ্য হলো, এবার কোভিড ও ডেঙ্গুতে একসঙ্গে আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকে।

অনেক ডেঙ্গু রোগীরাই কখন ও কোন হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যাবেন তা নিয়ে চিন্তিত থাকেন। ফলে চিকিৎসা নিতে দেরি হয়ে যায় বেশিরভাগেরই। রোগীর অবস্থা আরও খারাপের দিকে চলে যায়। তাই ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হলে বা বিশেষ করে শিশুদের ডেঙ্গু জ্বর হলে কোন কোন লক্ষণ দেখলে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাবেন তা জানা জরুরি।

ডেঙ্গু জ্বর গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলে একটি সাধারণ ভাইরাল সংক্রমণ, যা মশার মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। শহরাঞ্চলে ডেঙ্গু জ্বর বেশি দেখা যায় তার কারণ হলো অনেক মানুষের আগমন, অপরিকল্পিত রাস্তাঘাট ও বাড়ি নির্মাণ।

বৃষ্টি হলে এডিস মশা ডিম পাড়ে। তাই বন্ধ স্কুল-কলেজ খোলার কমপক্ষে ৪৮ ঘণ্টা আগে বাথরুম ও ক্লাস রুমসহ পুরো শিক্ষাঙ্গন এলাকা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করতে হবে। মশার লার্ভা পরিষ্কার করতে হবে। মশা মারার ওষুধ দিয়ে মশা নিধন করতে হবে।

ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হলে একদিকে শরীর যেমন দুর্বল হয়ে পড়ে অন্যদিকে এর প্রভাব শরীরে থেকে যায় দীর্ঘদিন। তবে বিশ্রাম ও নিয়ম মেনে চললে এর থেকে পুরোপুরি মুক্তি পাওয়াও সম্ভব।

ডেঙ্গু জ্বরের উৎপত্তি ডেঙ্গু ভাইরাস দ্বারা এবং এই ভাইরাস বাহিত এডিস ইজিপ্টাই নামক মশার কামড়ে। স্বল্প ক্ষেত্রে অসুখটি প্রাণঘাতী ডেঙ্গু হেমোর‍্যাজিক ফিভারে পরিণত হয়। যার ফলে রক্তপাত, রক্ত অনুচক্রিকার কম মাত্রা এবং রক্ত প্লাজমার নিঃসরণ অথবা ডেঙ্গু শক সিন্ড্রোমে রূপ নেয়। যেখানে রক্তচাপ বিপজ্জনকভাবে কম থাকে।

সাধারণভাবে ডেঙ্গুর লক্ষণ হচ্ছে জ্বর। ১০১ ডিগ্রি থেকে ১০২ ডিগ্রি তাপমাত্রা থাকতে পারে। জ্বর একটানা থাকতে পারে, আবার ঘাম দিয়ে জ্বর ছেড়ে দেবার পর আবারো জ্বর আসতে পারে। এর সাথে শরীরে ব্যথা মাথাব্যথা, চেখের পেছনে ব্যথা এবং চামড়ায় লালচে দাগ (র‍্যাশ) হতে পারে। তবে এগুলো না থাকলেও ডেঙ্গু হতে পারে।

ডেঙ্গু জ্বরের জীবাণুবাহী মশা কোন ব্যক্তিকে কামড়ালে সেই ব্যক্তি ৪ থেকে ৬ দিনের মধ্যে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়। এবার এই আক্রান্ত ব্যক্তিকে কোনো জীবাণুবিহীন এডিস মশা কামড়ালে সেই মশা ডেঙ্গু জ্বরের জীবাণুবাহী মশায় পরিণত হয়। এভাবে একজন থেকে অন্যজনে মশার মাধ্যমে ডেঙ্গু ছড়িয়ে থাকে। অনেকেই প্রথম প্রথম সামান্য জ্বর বলে পাশ কাটিয়ে গেলেও, এর প্রভাবে দীর্ঘদিন ভোগেন। কমে যায় ইমিউনিটিও।

ডেঙ্গুর হবার পরে ডাক্তাররা ভীষণ সাবধানে থাকতে বলেন। এই অসুখে রোগী দুর্বল হয়ে পড়েন। ঠিক মতো খাওয়া দাওয়া না করলে শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে এনার্জি পান না। ফলে পুরোপুরি সেরে উঠতেও বেশ অনেকটা সময় লেগে যায়। ডেঙ্গু জ্বর নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করা উচিত নয়। একজন ব্যক্তি সাধারণত প্রতিদিন যেসব পরিশ্রমের কাজ করে, সেগুলো না করাই ভালো। পরিপূর্ণ বিশ্রাম প্রয়োজন।

ওষুধের পাশাপাশি খাওয়া দাওয়ার দিকেও তাই এসময় বিশেষ নজর দিতে বলেন ডাক্তারেরা। জ্বর সারার পরেও সুস্থ হতে দেরি হয়। সেটা ঠিক মতো খাওয়া দাওয়া না করার কারণেই। তাই সেদিকেও ডেঙ্গু আক্রান্ত মানুষের পরিবারের অন্যান্য লোকেদের খেয়াল রাখতে বলেন।

জানেন কি আপনার রান্নাঘরেই এমন অনেক কিছু আছে, যা নিয়মিত খেলে ডেঙ্গু থেকে সেরে উঠতে পারবেন! শাক সবজি, ফল এমনিতেই সবসময় খেতে বলেন ডাক্তারেরা। এই সময় বিশেষ কিছু ফলের রস খেলেও এনার্জি পাবেন।

শর্করা, প্রোটিন ও ভিটামিন সি সমৃদ্ধ সাধারণ খাবার বন্ধ করা যাবে না। স্বাস্থ্যসম্মতভাবে ঘরে বানানো খাবার খাওয়ার অভ্যাস করুন। প্রচুর পরিমাণে তরল জাতীয় খাবার গ্রহণ করতে হবে। যেমন - ডাবের পানি, লেবুর শরবত, ফলের জুস এবং খাবার স্যালাইন গ্রহণ করা যেতে পারে। জেনে নিন ডেঙ্গু জ্বর থেকে মুক্তি পেতে যেসব খাবার খাবার খাবেন-

ড্রাগন ফল

ডেঙ্গু মোকাবিলায় রক্তে প্লাটিলেট বাড়ায় ড্রাগন ফল চিকিৎসকদের মতে, ড্রাগন ফলে প্রচুর অ্যান্টি অক্সিডেন্ট আছে। যা রক্তে অণুচক্রিকা বা প্লাটিলেটের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। ফলে ডেঙ্গুর চিকিৎসায় এই ফল খুবই কার্যকর। আমাদের অনেক রোগী সুফল পেয়েছেন। এই ফলে থাকা আয়রন রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। লোহিত রক্তকণিকা উৎপাদনে সহায়তা করে।

সবজির রস

ডেঙ্গু জ্বরে জ্বরে সবজি প্রতিদিন খাওয়া উচিত। ডেঙ্গুর জ্বরে যদি আক্রান্ত হন, তাহলে নিজের পছন্দমতো সবজির রস করে এই সময় খেতে পারেন। স্বাদ বদলের জন্য অল্প লেবুর রসও দিতে পারেন। লেবুতে ভিটামিন সি থাকে। সেটা শরীরের ইমিউনিটি ব্যুস্ট করে।

পেঁপে পাতার রস

ডেঙ্গু জ্বরের ক্ষেত্রে পেঁপে পাতার রস কতটা উপকারী সেটা আবার অনেকেই জানেন না।‌ এই রস নিয়মিত খেলে জ্বর ধীরে ধীরে কমে যায়, শরীরে প্লেটলেট কাউন্ট বাড়ে, এমনকি ইমিউনিটি ব্যুস্ট ও হয়। বাড়ির আশেপাশে একটা দু’টো পেঁপে গাছ তো থাকেই। তারই পাতা কুচিকুচি করে কেটে ব্লেন্ডারে অল্প জল দিয়ে মিশিয়ে রস তৈরি করতে পারেন। দিনে অন্তত দুবার এটা খাবেন।

হলুদ

হলুদ শরীরে মেটাবলিজম ব্যুস্ট করে। ডাক্তাররা এর গুণাবলির জন্যই গোল্ডেন মিল্ক বা হলুদ মেশানো দুধ খেতে সাজেস্ট করেন। অনেকেই দুধ খেতে পছন্দ করেন না। পানিতে অল্প হলুদ মিশিয়ে খেতে পারেন। এতে দ্রুত সুস্থ হবেন।

আমলকির রস

আমলকি ভিটামিন এ ও সি তে ভরপুর। বাজারে সারাবছরই এখন আমলকি পাওয়া যায়। অনেক সময় ভিটামিন সি ট্যাবলেট পাওয়া যায় না বলে, তার বদলে দিনে একটা আমলকি খান। প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকায় শরীরের ট্রেস কমায়। ইমিউনিটি ব্যুস্ট করে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।

চিকেন স্যুপ

ফ্লু বা জ্বরের সময় ডাক্তাররা দিনে অন্তত একবার চিকেন স্যুপ খেতে সাজেস্ট করেন। এটা শরীর হাইড্রেটেড রাখে। আবার জ্বরের সময় অনেকেই মুখে খাবারের স্বাদ পান না ঠিকমতো। তাদের চিকেন স্যুপ খেতে বলেন।

নিম পাতার রস

নিমপাতার ঔষধি গুণ নিয়ে করোর মনে একটুও সংশয় নেই। জানেন কি, ডেঙ্গু জ্বরেও সমান উপকারী! এই রস শরীরে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়া রোধ করে। দিনের শুরুতেই ডাক্তাররা এটা খেতে বলেন।

হার্বাল টি

বাজারে এখন নানারকম ফ্লেভারের চা পাওয়া যায়। তুলসি, আদা, দারুচিনি, প্রভৃতি সমৃদ্ধ। এগুলো নিয়মিত খেলে উপকার পাওয়া যায়। সাধারণত ডেঙ্গু জ্বরের পরে অনেকেই খুব দুর্বল হয়ে পড়ে। সেই সময় এই ধরণের চা খেলে শরীর মন দুটোই চাঙ্গা থাকে।

ডাবের পানি

ডেঙ্গু জ্বরের পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া হিসাবে শরীরে পানির ঘাটতি হয়। তাই এই সময় ডাব ‌বা নারিকেলের পানি খেতে হবে। এতে দেহে পানির ঘাটতিও মেটাবে, আবার পুষ্টিগুণ ও বিভিন্ন ইলেক্ট্রোলাইটে সমৃদ্ধ এই নারিকেলের পানি দৈহিক শক্তিও বাড়াবে।

টক ফল

টকজাতীয় ফল ভিটামিন সি-তে ভরপুর। এই ভিটামিন শ্বেত রক্তকণিকা গঠণে সাহায্য করে। শরীরের রোগ প্রতিশোধ ক্ষমতা বাড়ায় এই কণিকা। তাই এই সময়ে খাদ্যতালিকায় কিউয়ি, আঙুর, কমলালেবু-সহ বিভিন্ন ধরনের লেবু রাখতেই হবে।

রসুন

রান্নার স্বাদ বাড়াতে হেঁশেলে রসুন রাখতেই হয়। তবে শরীরের রোগপ্রতিরোধ শক্তি বাড়াতেও এই উপাদান দারুণ উপকারী। সংক্রমণ থেকে দূরে থাকতে তাই এই সময়ে ডায়েটে বেশি করে রসুন রাখতে হবে।

বেদানা

প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকে বেদানায়। ফলে দেহের শক্তি বাড়ে, অণুচক্রিকার সংখ্যা বাড়াতেও সাহায্য করে এটি।

পানি

ডেঙ্গু হলে শরীরে অনেক ধরনের সমস্যা তৈরি হতে পারে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই শরীরে পানির ঘাটতি দেখা দেয়। যে কারণে এই জ্বরে আক্রান্ত হলে দিনে অন্তত তিন লিটার পানি পান করতে হবে। সেইসঙ্গে খেতে হবে তাজা ফলের রস, আখের রস ইত্যাদি। এতে দ্রুত সুস্থ হওয়া সহজ হবে।

ডেঙ্গু জ্বরে সতর্কতা

চিকিৎসকের মতে, ডেঙ্গু জ্বর হলে প্যারাসিটামলের সর্বোচ্চ ডোজ হচ্ছে প্রতিদিন চার গ্রাম। কিন্তু কোন ব্যক্তির যদি লিভার, হার্ট এবং কিডনি সংক্রান্ত জটিলতা থাকে, তাহলে প্যারাসিটামল সেবনের আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হলে গায়ে ব্যথার জন্য অ্যাসপিরিন জাতীয় ঔষধ খাওয়া যাবে না। ডেঙ্গুর সময় অ্যাসপিরিন জাতীয় ঔষধ গ্রহণ করলে রক্তক্ষরণ হতে পারে।

তেলেভাজা যেকোনও কিছু, কোল্ডড্রিংকস, ফাস্টফুড, কফি,ফ্যাটজাতীয় যেকোনও খাবার জ্বরের সময় খাবেন না।

ডেঙ্গু জ্বরের জন্য দায়ী এডিস মশা অন্ধকারে কামড়ায় না। সাধারণত সকালের দিকে এবং সন্ধ্যার কিছু আগে এডিস মশা তৎপর হয়ে উঠে। এডিস মশা কখনো অন্ধকারে কামড়ায় না।

চিকিৎসকের মতে, এডিস মশা 'ভদ্র মশা' হিসেবে পরিচিত। এসব মশা সুন্দর-সুন্দর ঘরবাড়িতে বাস করে। এডিস মশা সাধারণত ডিম পাড়ে স্বচ্ছ পানিতে। কোথাও যাতে পানি তিন থেকে পাঁচদিনের বেশি জমা না থাকে। এ পানি যে কোন জায়গায় জমতে পারে। বাড়ির ছাদে কিংবা বারান্দার ফুলের টবে, নির্মাণাধীন ভবনের বিভিন্ন পয়েন্টে, রাস্তার পাশে পড়ে থাকা টায়ার কিংবা অন্যান্য পাত্রে জমে থাকা পানিতে এডিস মশা বংশবিস্তার করে।

এডিস মশার সংক্রমণ প্রতিরোধে মশারি ব্যবহার করুন। ডেঙ্গু কোনো ছোঁয়াচে রোগ নয়। কেবল ভাইরাসবাহী এডিস মশার কামড়েই ডেঙ্গু হতে পারে। মশারির বাইরে বের হলে ফুল হাতা পোশাক পরতে হবে। সুরক্ষার জন্য মশা মারার স্প্রে বা জেল ব্যবহার করা যেতে পারে। ডেঙ্গু নির্মূল করতে হলে সবাইকে সচেতন হতে হবে।

ডেঙ্গুজ্বর প্রতিরোধের মন্ত্রই হল এডিস মশার বিস্তার রোধ এবং এই মশা যেন কামড়াতে না পারে, তার ব্যবস্থা করা।

মশক নিধনের জন্য স্প্রে, কয়েল, ম্যাট ব্যবহারের সঙ্গে সঙ্গে মশার কামড় থেকে বাঁচার জন্য দিনে ও রাতে মশারি ব্যবহার করতে হবে। ডেঙ্গু জ্বর হয়তো বা নির্মূল করা যাবে না। এর কোনো ভ্যাক্সিনও বের হয় নাই, কোনো কার্যকরী ওষুধও আবিস্কৃত হয় নাই। ডেঙ্গু জ্বরের মশাটি আমাদের দেশে আগেও ছিল, এখনও আছে, মশা প্রজননের এবং বংশবৃদ্ধির পরিবেশও আছে। তাই ডেঙ্গুজ্বর ভবিষ্যতেও থাকবে। একমাত্র সচেতনতা ও প্রতিরোধের মাধ্যমেই এর হাত থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব।

(ঢাকাটাইমস/০৪ জুলাই/আরজেড)

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফিচার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :